সুকুমার সরকার, ঢাকা: মোদি বিরোধী আন্দোলনে হেফাজতে ইসলামের ডাকা হরতালের জেরে বাংলাদেশের (Bangladesh) ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আটকে পড়া ট্রেন প্রায় ১১ ঘণ্টা পর চালু হল। ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-নোয়াখালি, ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে বলে খবর। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্টেশন মাস্টার শোয়েব আহমেদ জানিয়েছেন, রবিবার রাত প্রায় ১০ নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। অন্যান্য স্টেশনেও আটকে থাকা ট্রেনগুলি ধীরে ধীরে ছাড়ে। আর সোমবার থেকে সবই স্বাভাবিক বলে দাবি বাংলাদেশের রেলকর্তাদের।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী দু’দিনের ঢাকা (Dhaka) সফর উপলক্ষে হেফাজতে ইসলামির আন্দোলনে গত সপ্তাহান্তে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বাংলাদেশ। মোদি ফিরে আসার পর রবিবার দেশজুড়ে বন্ধের ডাক দেয় হেফাজতে। তার মাঝেই জনজীবন স্তব্ধ করে দিতে তাদের তাণ্ডব চলে। হরতালের জেরে বিশৃঙ্খলা তৈরির অভিযোগে পুলিশের সঙ্গে হেফাজতের সংঘর্ষে মোট ১০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
[আরও পড়ুন: মোদির সফর শেষ হলেও থামছে না হিংসা, অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশে নিহত ১০ হেফাজত সদস্য]
রেলের কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রামমুখী মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেনটি আটকে ছিল নরসিংদীর আমিরগঞ্জে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পথে তিতাস কমিউটার ট্রেন দাঁড় করানো হয় নরসিংদীর ঝিনারদিতে। নোয়াখালি থেকে ঢাকার পথে আসা উপকূল এক্সপ্রেস আখাউড়ায়, সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে এসে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় আটকে থাকে। সিলেট থেকে ঢাকামুখী কালনী এক্সপ্রেস থমকে হবিগঞ্জের আজমপুরে। চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ যাতায়াতকারী বিজয় এক্সপ্রেস কুমিল্লায় দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে। ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া মেল ট্রেন কর্ণফুলি এক্সপ্রেস আটকে ছিল নরসিংদী স্টেশনে। এর আগে শনিবার সন্ধেবেলা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষের পর নিরাপত্তা ঝুঁকিতে প্রায় তিন ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।
[আরও পড়ুন: মোদি-হাসিনা বৈঠকে সমঝোতা স্মারকে সই, মিতালি এক্সপ্রেস-সহ নানা প্রকল্পের উদ্বোধন]
এর আগে রবিবার সকাল ন’টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চট্টগ্রামগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে হেফাজতের সদস্যদের বিরুদ্ধে। খুলে ফেলা হয় রেললাইনের নাট, বল্টু। লাইনের ওপর কংক্রিটের স্ল্যাবও ফেলে রাখা হয়। আশুগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মাঝখানে ১৮ নম্বর রেল সেতুতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এর জেরে রবিবার সকাল ন’টা নাগাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কয়েকটি ট্রেন আটকে পড়ার পর বিপদের আশঙ্কায় রেল চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর রাত প্রায় দশটা নাগাদ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ট্রেনগুলি ছাড়া হয়।