shono
Advertisement
North Dinajpur

মুখ ফিরিয়েছে ৫০ হাজার পড়ুয়া! তিনবছরের উত্তর দিনাজপুরে বন্ধ ২০ স্কুল

পড়ুয়া হ্রাসের কথা মেনে নিয়েছেন জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক। তবে কারণ জানা যায়নি বলে দায় সেরেছেন তিনি।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 06:35 PM Dec 21, 2024Updated: 06:35 PM Dec 21, 2024

শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: পর্যাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা সত্ত্বেও মাত্র তিন বছরে অন্তত ৫০ হাজারের বেশি খুদে পড়ুয়া স্কুল দরজা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে উত্তর দিনাজপুরে। ফলে জেলার শিক্ষার মানচিত্র থেকে একধাক্কায় কুড়িটি সরকারি সহায়তাপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুল কার্যত উঠে গিয়েছে। এখনও যেসব স্কুল টিকে আছে, তার মধ্যে অনেক স্কুলের একাধিক শ্রেণিকক্ষ শিক্ষার্থী সংকটে দৃশ্যত গুদামঘরের চেহারা নিয়েছে! ইতিমধ্যে আরও ২২টি স্কুলে ৩০ জনের কম পড়য়া থাকায় উঠে যাওয়ার প্রস্তুতি প্রক্রিয়া চলছে। এই আবহে চাকরি বাঁচাতে একাংশ শিক্ষক নিজেদের স্কুলে ছেলেমেয়েদের ভর্তি করাতে সরাসরি অভিভাবকদের বাড়িতে দিন কয়েক ধরে সকাল-বিকাল হন্যে হয়ে ছুটছেন।

Advertisement

অথচ বিস্ময়করভাবে কালিয়াগঞ্জ-রায়গঞ্জ থেকে ইসলামপুর-চোপড়া জুড়ে বেসরকারি বাংলা মাধ্যমের স্কুলের সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে। কিন্তু সরকারি স্কুলে পড়ুয়া কমলেও কর্ণজোড়ায় চারতলা শিক্ষা ভবন নতুন বছরে চালু হতে চলেছে। জেলা শিক্ষা দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ২০২১-এর শিক্ষাবর্ষে জেলার ৯টি ব্লকে ১৭টি সার্কেলে মোট প্রাথমিক স্কুলে সংখ্যা দাঁড়ায় ১৫৮৬টি থেকে কমে ১৪৮১টি। আর তিন বছরের মাথায় স্কুলের সংখ্যা হয় ১৪৬৬টি। মাঝে একলাফে কুড়িটি স্কুল ভবন আনুষ্ঠানিকভাবে নেই হয়ে যায়। যদিও ওইসব বন্ধ স্কুল ক্যাম্পাসের চিহ্নগুলি এখনও পুরোপুরি ফিকে হয়ে যায়নি।

তবে স্কুলের মাঠে এখনও কচিকাঁচাদের আসা যাওয়ার ভিড় রয়েছে, কিন্তু পড়াশোনার শ্রেণিকক্ষ আর নেই। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলায় চলতি শিক্ষাবর্ষের নভেম্বর মাস পর্যন্ত ৭ হাজার ১৬৫ জন প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাকে বেতন দেওয়া হয়েছে।অথচ অদ্ভুত কাণ্ড হল, বাংলা শিক্ষা পোর্টালে জেলার নথিভুক্ত পড়ুয়ার সংখ্যা ১ লক্ষ ৪৯ হাজারের কাছাকাছি। কিন্তু প্রকৃত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা নিশ্চিতভাবে আরও কম। আর নিয়মিত স্কুলের শ্রেণিকক্ষে পৌঁছনো পড়ুয়ার সংখ্যা নথিভুক্তের চেয়ে অর্ধেক সংখ্যক বলে শিক্ষা দপ্তর সূত্রের দাবি।

অথচ কোভিডের আগে নথিভুক্ত ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ছিল ২ লক্ষ ২ হাজার। ২০১৮ সালে জেলার সরকারি প্রাথমিক স্কুলের মোট নথিভুক্ত পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ১ লক্ষ ৮৬ হাজার ৭৮৬ জন। কিন্তু কয়েক বছরের ব্যবধানে সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুলে পড়ুয়া হ্রাস পাওয়ার মূল কারণ কোভিডকাল নয় বলে জেলার বর্ষীয়ান শিক্ষকদের দাবি। বরং প্রাক্তন শিক্ষক থেকে প্রবীণ অভিভাবকদের বক্তব্য, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের গাফিলতিতে ছাত্রছাত্রী কমছে।

তার মধ্যে স্কুলছুটের অন্যতম কারণ আর্থিক সংকট। আর এসব স্কুলের পঠনপাঠনে শিক্ষকদের উদাসীনতার কারণে অনেক পরিবারের ছেলেমেয়েদের বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করাতে বাধ্য হচ্ছেন। আবার অনেকে সন্তানের নাম সরকারি স্কুলে নথিভুক্ত করে বেসরকারি স্কুলে ক্লাস করাচ্ছেন। যেমন রায়গঞ্জ করোনেশন প্রাথমিক স্কুল কিংবা রায়গঞ্জ গালর্স স্কুল ক্যাম্পাসে অবৈতনিক প্রাথমিক বিদ্যালয়। ইসলামপুর হাই স্কুল ক্যাম্পাসের প্রাথমিক স্কুল। তবে জেলা প্রাথমিক স্কুল পরিদর্শক দুলাল সরকার বলেন, "পড়ুয়া কমছে ঠিকই। কিন্তু কারণ বিশ্লেষণ করা হয়নি।"

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
Advertisement