সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মোদি গ্যারান্টি নাকি দিদি গ্যারান্টি, লোকসভা নির্বাচনী বাংলায় বারবার তৃণমূল নেতৃত্বের মুখে এই প্রশ্ন শোনা গিয়েছে। তবে শুধুই নির্বাচনী জনসভায় নয়, তৃণমূলের ইস্তাহারের ছত্রে ছত্রেও তার প্রতিফলন ঘটবে। কীভাবে মোদি সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ, তা লোকসভা ভোটের ইস্তাহারে উল্লেখ করা হবে। আর বাংলার মুখ্যমন্ত্রী ঠিক কীভাবে গত ১২ বছর ধরে রাজ্যবাসীর জন্য নানা জনকল্যাণমূলক প্রকল্প চালু করেছেন, তারও উল্লেখ থাকবে ইস্তাহারে।
‘মা-মাটি-মানুষে’র সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে নারী ক্ষমতায়নে নানা পদক্ষেপ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘কন্যাশ্রী’, ‘রূপশ্রী’, ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে’র মতো প্রকল্প রয়েছে বাংলায়। ২০২১ সালে নির্বাচনের আগে ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প চালুর প্রতিশ্রুতি দেন মমতা। প্রতিশ্রুতি বাস্তব রূপ পায় সে বছরই নভেম্বরে। এই প্রকল্পে তফসিলি জাতি-উপজাতির উপভোক্তারা এতদিন মাসিক ১০০০ টাকা ও অন্যান্যদের ৫০০ টাকা করে দেওয়া হত। তবে এপ্রিল থেকে সেই ভাতা বেড়ে গিয়েছে। বর্তমানে জেনারেল বা সাধারণ শ্রেণিভুক্ত মহিলারা ১ হাজার টাকা এবং তফসিলি জাতি, উপজাতির উপভোক্তারা ১২০০ টাকা করে পাচ্ছেন। প্রতি মাসে সরাসরি অ্যাকাউন্টে জমা পড়ে প্রকল্পের টাকা। তাতে উপকৃত কোটি কোটি মহিলা। তাই 'লক্ষীর ভাণ্ডার'-এর মতো প্রকল্পের কথা যে ইস্তাহারে উল্লেখিত বিষয়গুলোর মধ্যে একেবারে প্রথম সারিতে থাকবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
[আরও পড়ুন: রেশন দুর্নীতি মামলা: জ্যোতিপ্রিয়-সহ ৩ জনের বিপুল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত ইডির]
এছাড়া ১০০ দিনের কাজ এবং কেন্দ্রীয় আবাস যোজনায় কেন্দ্রীয় 'বঞ্চনা'র কথাও উল্লেখ করা হবে ইস্তাহারে। সঙ্গে অবশ্যই থাকবে মমতার 'বিকল্প দিশা'। এছাড়া ২০১৯ সালে চালু হওয়া কৃষকবন্ধু প্রকল্পের কথাও উল্লেখ থাকার কথা। কারণ, কৃষকদের জন্য মোদি যে আদতে কিছুই করেননি, তা নাকি তথ্য উল্লেখ করে ইস্তাহারে লেখা থাকবে বলেই সূত্রের খবর। ইস্তাহারে অবশ্যই থাকবে সবুজসাথী, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মতো প্রকল্পের কথাও।
ইস্তাহারে কৃষিক্ষেত্র, অর্থনীতি, জাতীয় নীতি, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, সার্বভৌমত্ব, সমবন্টন, সমাজের সব শ্রেণির মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলার মতো বিষয়গুলো নিয়ে পৃথক অনুচ্ছেদ থাকতে পারে। বলে রাখা ভালো, রাজ্যের আর্থিক উপদেষ্টা অমিত মিত্রের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে রয়েছেন ডেরেক ও'ব্রায়েন, সুখেন্দুশেখর রায়, শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। ইস্তাহার নিয়ে দলীয় নেতৃত্ব মোট চারটি বৈঠক করেছে। যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রাই। সুতরাং বলা যেতেই পারে, মোদির তুলনায় 'দিদি'র গ্যারান্টি যে অনেক বেশি টেকসই, তারই প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠবে লোকসভা ভোটমুখী ইস্তাহারে।