shono
Advertisement

আয়করের নজরে এবার মাছ ব্যবসায়ীরা, হাওড়ার আবাসনে ম্যারাথন তল্লাশি

চিংড়ি ব্য়বসায়ীর বিরুদ্ধে আয় বহির্ভূত সম্পত্তির অভিযোগ।
Posted: 09:05 AM Feb 16, 2023Updated: 09:05 AM Feb 16, 2023

অরিজিৎ গুপ্ত, হাওড়া: হাওড়ায় মাছ ব্যবসায়ী তাজ মহম্মদের বাড়িতে হানা দিলেন আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা। আয় বহির্ভূত সম্পত্তির পরিমাণ খতিয়ে দেখতেই বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে প্রায় ১০ ঘণ্টা অর্থাৎ সন্ধে পর্যন্ত ওই ব্যবসায়ীর বাড়িতে তল্লাশি চালান আধিকারিকরা। পাশাপাশি ওই ব্যবসায়ী ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ চালান তাঁরা। এদিন বি গার্ডেন থানা এলাকার ক্যারি রোডের কাছে দ্বারিকা আবাসনে মাছ ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাটে টাকা গোনার মেশিন ও বড় স্যুটকেস নিয়েও ঢোকেন তাঁরা। তদন্ত শেষে সিজার লিস্টে সই করিয়ে বেশ কিছু নথি-সহ দুটি ব্যাগ ও একটি প্রিন্টার নিয়ে বেরিয়ে যান আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা।

Advertisement

তদন্তকারীরা বেরিয়ে যাওয়ার পর এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীর পরিবারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে পরিবারের এক মহিলা সদস্য সাংবাদিকদের জানান, ‘‘আপনাদের যা জানার আছে তা আপনারা আয়কর আধিকারিকদের কাছ থেকে গিয়ে জানুন। ওঁদের সঙ্গে কথা বলুন। হতে পারে ওঁদের কিছু সমস্যা ছিল। আমরা পুরোপুরি ক্লিয়ার। কিছু ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, বাকি আমরা এর বেশি কিছু বলতে পারব না।” এদিন আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা যখন তাজ মহম্মদের বাড়িতে হানা দেন, তখন সেখানে বি গার্ডেন থানার পুলিশ আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন।

[আরও পড়ুন: কলকাতার ৩৮৪ ফ্ল্যাটের বাসিন্দাদেরও নিঃশর্ত দলিল দেবে রাজ্য, সিদ্ধান্ত মন্ত্রিসভায়]

এদিকে স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাজ মহম্মদ চিংড়ি মাছের ব্যবসায়ী। তিনি বিদেশে মাছ রপ্তানি করেন। এলাকায় প্রভাবশালী ও ধনী লোক বলেই পরিচিত তিনি। যে আবাসনে উনি থাকেন, বর্তমানে সেই আবাসনের সভাপতি তিনি। আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দীর্ঘ ৬ বছর ধরে ওই আবাসনের সভাপতি তাজ মহম্মদ। ২০০০ সালে ওই আবাসনটি তৈরি হওয়ার পর ২০০২ সালেই ওই আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে সপরিবার এসে থাকতে শুরু করেন। রাজ্যের মৎস্য ব্যবসায়ীদের সংগঠনের সঙ্গেও যুক্ত। ফলে সমাজের বিভিন্ন অংশে তাঁর প্রভাব যথেষ্টই রয়েছে বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের। কিন্তু তাঁর বাড়িতে এভাবে আয়কর দপ্তরের হানা হবে তা ভাবতে পারেননি অনেক আবাসিকই।

বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার সময় যখন আয়কর দপ্তরের আধিকারিকরা তাজ মহম্মদের বাড়িতে হানা দেন তখন বাড়িতে ছিলেন না ব্যবসায়ী ও তাঁর স্ত্রী। ব্যবসায়ীর দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়া ছোট মেয়েও স্কুলে চলে গিয়েছিলেন। ব্যবসায়ী ও তাঁর স্ত্রী পারিবারিক একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বাইরে গিয়েছিলেন। আয়কর আধিকারিকরা হানা দিয়েছে শুনে তাঁরা ছুটে আসেন। তার পর থেকেই ফ্ল্যাটের ভিতরে দরজা বন্ধ করে ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন আধিকারিকরা।

[আরও পড়ুন: বুদ্ধবাবুর আশ্বাসের পর ১১ বছর পার, চাকরি না মেলায় নবান্নের সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা যুবকের]

ওই আবাসনের বাসিন্দা পেশায় আইনজীবী এক মহিলা আবাসিক জানালেন, প্রচুর অর্থের মালিক ওই ব্যবসায়ীর অনেক রাজনৈতিক নেতার সঙ্গেও ওঠাবসা রয়েছে। তবে আবাসিকদের সঙ্গে খুব একটা ভাল ব্যবহার করেন না তিনি। এমনকী কারও সঙ্গে খুব একটা মেলামেশাও করেন না বলে দাবি ওই মহিলা আবাসিকের। আবাসনের নিজের ফ্ল্যাটে একটি বেআইনি নির্মাণ করছেন বলেও আবাসিকদের একাংশ এদিন অভিযোগ তোলেন। প্রসঙ্গত, ১৫ বিঘা জমির উপর তৈরি ওই আবাসনে বসবাসকারী ৪০টি পরিবারের মধ্যে সবচেয়ে ধনী ব্যবসায়ী তাজ মহম্মদ। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ কত এদিন তা দেখতেই ব্যবসায়ীর বাড়িতে হানা দেন আধিকারিকরা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement