সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঠিক এই কাজটাই বছরের পর বছর ধরে করতেন মহেন্দ্র সিং ধোনি (Mahendra Singh Dhoni)। বিশ্বকাপ জয় থেকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতা। কিংবা কোনও আন্তর্জাতিক সিরিজ জেতা থেকে পাঁচবার আইপিএল জয়। ‘ক্যাপ্টেন কুল’ ট্রফি হাতে নিয়েই এগিয়ে যেতেন দলের জুনিয়রদের কাছে। সেই ট্রফি নবাগতদের হাতে তুলে দিয়ে, একেবারে এক কোণায় দাঁড়িয়ে থাকতেন হাসিমুখে। ঠিক সেই কাজটাই এবার করে দেখালেন সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav)। অস্ট্রেলিয়ার (Australia) বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জেতার পর সতীর্থদের হাতে ট্রফি তুলে দিয়ে তাঁদের মন জয় করলেন টিম ইন্ডিয়ার (Team India) অধিনায়ক।
সিরিজ চতুর্থ ম্যাচেই জেতা হয়ে গিয়েছিল। সেই মতো পঞ্চম ম্যাচ ছিল নিয়মরক্ষার। তবে বেঙ্গালুরুর ম্যাচটা ছিল নামেই নিয়মরক্ষার। কারণ শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচে টিকে ছিল অজিরা। যদিও শেষরক্ষা হয়নি। রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে অজিদের ছয় রানে দেওয়ার পর ট্রফি হাতে তোলেন ‘স্কাই’। এর পর সেই ট্রফি তুলে দেন রিঙ্কু সিং (Rinku Singh), জিতেশ শর্মার (Jitesh Sharma) মতো জুনিয়রদের হাতে। সোশাল মিডিয়ার যুগে সেই ভিডিও ভাইরাল হতে একেবারেই সময় লাগেনি।
[আরও পড়ুন: বোলারদের দাপটে কুপোকাত বিশ্বজয়ীরা, নিয়মরক্ষার ম্যাচ জিতে সিরিজ শেষ করল ভারত]
বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে খেলা মানেই হাইস্কোরিং ম্যাচের প্রত্যাশা। যদিও গ্যালারির প্রত্য়াশা সেই অর্থে পূরণ হয়নি। সূর্য, রিঙ্কুদের বিধ্বংসী ব্যাটিং দেখার জন্য মুখিয়ে ছিল সকলেই। তবে সেটা হয়নি। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে হয় ভারতকে। বড় শট খেলার চেষ্টায় দ্রুত তিন উইকেট হারায় ভারত। রিঙ্কু তাঁর ইনিংসকে বেশিক্ষণ এগিয়ে নিতে যেতে পারেননি। যদিও শ্রেয়স আইয়ারের (Shreyas Iyer) অর্ধ শতরান এবং অক্ষর প্যাটেলের (Axar Patel) দায়িত্বশীল ইনিংসের সৌজন্যে অজিদের ১৬১ রানের লক্ষ্য দেয় ভারত।
ম্যাচের প্রতি মুহূর্তেই রং বদলাতে থাকে। চূড়ান্ত নাটক শুরু হয় স্লগ ওভারে। ১৭তম ওভারে ৫ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন মুকেশ কুমার (Mukesh Kumar)। ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট হয়ে দাঁড়ায় মুকেশের সেই ওভার। কিন্তু পরের ওভারে রাশ আলগা হয়। লাইন লেন্থ ঠিক রাখতে পারেননি আবেশ খান। ১৯তম ওভারে ফের মুকেশ বোলিংয়ে আসেন। দু-ওভারে বাকি মাত্র ১৭ রান। প্রথম বলেই ক্যাচ উঠেছিল। মরিয়া চেষ্টা করলেও ক্যাচ নিতে পারেননি ঋতুরাজ। ক্রিজে ম্যাথু ওয়েড থাকায় ম্যাচ তখনও অস্ট্রেলিয়ার নিয়ন্ত্রণে। ওয়েড বাউন্ডারি মেরে বুঝিয়ে দেন, ব্যাকফুটে নেই তিনি। এই সিরিজে প্রথম চার ম্যাচে আউট করা যায়নি অজি অধিনায়ককে। অজি শিবিরের আশা ওয়েড, ভারতীয় শিবিরে ভরসা মুকেশ। ১৯তম ওভারে ৭ রান দেন মুকেশ।
শেষ ওভারে অজিদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১০ রান। প্রথম তিন ওভারে ৩৭ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছিলেন অর্শদীপ। ৯ রান ডিফেন্ড করতে হত তাঁকে। উল্টোদিকে ওয়েড। প্রথম ডেলিভারি শর্ট পিচ। ওয়াইড না দেওয়ায় আম্পায়ারিং ক্ষুব্ধ হন ওয়েড। পরের বলটি ডট। তৃতীয় বলেই ওয়েডের উইকেট। সিরিজে প্রথম বার আউট হন অজি অধিনায়ক। শেষ ওভারে তিন রান দিয়ে ১ উইকেট। মাত্র ৬ রানে জয়। বাঁধনহারা উচ্ছ্বাসে ভাসে গ্যালারি। আর সেই জয়ের পরেই ধোনির ঐতিহ্য বহন করে সূর্যকে দলের জুনিয়রদের হাতে ট্রফি তুলে দিতে দেখা যায়।