সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একদিনের ক্রিকেটে ভারতের (India) সর্বাধিক রান ওয়েস্ট ইন্ডিজের (West Indies) বিরুদ্ধে। ২০১১ সালে এই ইন্দোরের (Indore) মাঠেই ৫ উইকেটে সর্বাধিক ৪১৮ রান করেছিল টিম ইন্ডিয়া (Team India)। এদিকে অস্ট্রেলিয়ার (Australia) বিরুদ্ধে এতকাল সর্বোচ্চ রান ছিল ৬ উইকেটে ৩৮৩। ২০১৩ সালে বেঙ্গালুরুতে (Bengaluru) সেই ঘটনা ঘটেছিল। আর এবার ১০ বছর পর অজিদের বিরুদ্ধে সেই রেকর্ড ভেঙে দিল ভারত। ব্যাটারদের আগ্রাসী মেজাজের দাপটে সেই ইন্দোরের হোলকার স্টেডিয়ামে (Holkar Stadium) পাঁচবারের বিশ্বজয়ী দলের বিরুদ্ধে ৫ উইকেটে সর্বাধিক ৩৯৯ রান তুলে দিল ‘মেন ইন ব্লু’ ব্রিগেড।
এদিকে বিশ্বকাপ (ICC ODI World Cup 2023) যত এগিয়ে আসছে তত চিন্তা বাড়ছে রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) ও রাহুল দ্রাবিড়ের (Rahul Dravid)। এটা অবশ্য ভালো চিন্তা। এবার ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্টের চিন্তা এবার বাড়িয়ে দিলেন শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer)। ২০২২ সালে ৯ মার্চ রাঁচির বাইশ গজে দক্ষিণ আফ্রিকার (South Africa) বিরুদ্ধে ১১১ বলে ১১৫ রানে অপরাজিত ছিলেন। আর এবার তিনি থামলেন ৯০ বলে ১০৫ রানে। মারকুটে ইনিংস ১১টি চার ও ৩টি ছক্কা দিয়ে সাজানো ছিল। এদিকে ফর্ম বজায় রেখে শুভমান গিলের (Suhbman Gill) ব্যাট থেকে এল ষষ্ঠ শতরান। পঞ্জাব তনয়ের ব্যাট থেকে এল ৯৭ বলে ১০৪ রান। মারলেন ৬টি চার ও ৪টি ছক্কা। শ্রেয়স ও শুভমান দ্বিতীয় উইকেটে ২০০ রান যোগ করেছিলেন। অবশ্য ‘স্টপগ্যাপ’ অধিনায়ক লোকেশ রাহুলও (KL Rahul) পিছিয়ে ছিলেন না। তিনি ৩৮ বলে ৫২ রান করেন। সূর্য কুমার যাদব (Suryakumar Yadav) গত ম্যাচের ফর্ম বজায় ৩৭ বলে ৭২ রানে অপরাজিত রইলেন। ফলে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৯৯ রান তুলে দিল টিম ইন্ডিয়া। অজিরা কি ৪০০ রান চেজ করে সমতা ফেরাতে পারবে? নাকি কাপ যুদ্ধের আগে সিরিজ জিতবে ভারত?
এদিন প্যাট কামিন্স বিশ্রাম নিয়েছিলেন। ফলে দ্বিতীয় ম্যাচে অধিনায়কত্ব করতে নেমেছিলেন স্টিভ স্মিথ। তিনি টসে জিতে ভারতকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিলেন। যদিও এদিন রুতুরাজ গায়কোয়াড় বড় রান পেলেন না। ৩.৪ ওভারের মাথায় জশ হ্যাজেলউডের বাইরে যাওয়া ডেলিভারিতে খোঁচা দেন রুতুরাজ। প্রথম স্লিপের দিকে উড়ে দুরন্ত ক্যাচ ধরেন অ্যালেক্স ক্যারি। ফলে ১৬ রানে ১ উইকেট হারায় ভারত।
তবে এরপর শুরু হল অজি বোলারদের সংহার করার পালা। গত ম্যাচে অর্ধ শতরান করা অনেকটা শান্ত ছিলেন। তবে ক্রিজে এসেই চালিয়ে ব্যাট করতে থাকেন শ্রেয়স। পিঠের চোটের জন্য অনেক মাস তাঁকে বাইরে থাকতে হয়েছিল। আর আগে কাঁধের চোট তাঁর কেরিয়ারের অনেক ক্ষতি করেছিল। সেই শ্রেয়স দীর্ঘ ১১ মাস পর একদিনের কেরিয়ারের তৃতীয় শতরান পেলেন। বিশ্বকাপের আগে এমন পারফরম্যান্স শ্রেয়সকে অবশ্যই আত্মবিশ্বাস যোগাবে।
[আরও পড়ুন: বিরাট-রোহিত নন, কাপ যুদ্ধে কার উপর বাজি ধরলেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট?]
ভারতের মিডল অর্ডারে কারা খেলবেন সেটা নিয়ে চলছে লড়াই। লোকেশ রাহুল রান পেয়েছেন। তাঁর খেলা নিশ্চিত। ঈশান কিষানও ফর্মে আছেন। গত ম্যাচে ৪৯ বলে ৫০ রান করে দলকে জিতিয়েছেন সূর্যকুমার যাদব। এবার শতরান করলেন শ্রেয়সও। এই চার জনের মধ্যে কোন দু’জনকে চার ও পাঁচ নম্বরে খেলানো হবে সেটা নিয়ে কিন্তু জোর আলোচনা হবেই।
অর্ধশতরান করার পরে রানের গতি আরও বাড়ে শ্রেয়সের। অজি পেসারদের গতি ব্যবহার করে উইকেটের সামনে তিনটি ছক্কা মারেন শ্রেয়স। তাঁকে সঙ্গ দিচ্ছিলেন শুভমান। দু’জনের মধ্যে প্রতিযোগিতা চলছিল।
এদিকে কাপ যুদ্ধে যত এগিয়ে আসছে ততই আরও আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করছেন শুভমান। প্রথম ম্যাচে শতরান ফিরে এলেও এবার তাঁর ব্যাট থেকে এল ফের শতরান। ফিরলেন ১০৪ রানে। ক্যামেরন গ্রিনের বলে তুলে মারতে গিয়েছিলেন তিনি। ব্যাটের কানায় লেগে বল আকাশে উঠে যায়। ক্যাচ ধরেন উইকেটকিপার অ্যালেক্স ক্যারে।
তবে তাই বলে রানের গতি থেমে থাকেনি। লোকেশ রাহুল, ঈশান ও শেষ দিকে সূর্যও মারমুখী মেজাজে ব্যাট করেন। ফলে অজিদের টার্গেট দাঁড়াল ৪০০। ভারত কি আদৌ বিপক্ষকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজ জিততে পারবে? নাকি স্টিভ স্মিথ-ডেভিড ওয়ার্নাররা সমতা ফেরাবে? সেটাই এখন দেখার।