রাজর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়: শনিবার ইংল্যান্ড (IND vs ENG) সিরিজের শেষ তিন টেস্টের দল নির্বাচন হয় যখন, তিনি রনজি ট্রফির (Ranji Trophy 2023-24) ম্যাচ খেলছিলেন। জানতেনও না, টেস্ট স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছেন। এবং দিনের খেলা শেষে বাংলা পেসার আকাশ দীপ (Akash Deep) টেস্ট টিমে ডাক পাওয়ার অভিজ্ঞতা, পরবর্তী স্বপ্ন, সব কিছু নিয়ে কথা বললেন ‘সংবাদ প্রতিদিন.ইন-এর সঙ্গে। সন্ধের দিকে হোয়াটসঅ্যাপ কলে।
‘…ভারতীয় টেস্ট টিমে সুযোগ পাওয়ার সময় আমি রনজি ট্রফি খেলছিলাম। আমাদের বাংলা বনাম কেরালা ম্যাচ চলছে। দল নির্বাচন নিয়ে বিন্দুবিসর্গও জানতাম না। হঠাৎ দেখলাম, আমার আশেপাশে সবাই হাততালি দিতে শুরু করেছে! আমি বুঝতেই পারছিলাম না যে, হঠাৎ হল কী? সতীর্থদের বলছিলাম, “আরে আমাকে তো বল কী হল? শেষে লক্ষ্মী স্যর (লক্ষ্মীরতন শুক্লা) আর প্যাটসি স্যর (সৌরাশিস লাহিড়ী) আমায় বললেন যে, ভারতীয় টেস্ট স্কোয়াডে ডাক পেয়েছি আমি!”
[আরও পড়ুন: ঘরের মাঠে অনিরুদ্ধ-জেসন কামিন্সের গোলে হায়দরাবাদকে হেলায় হারাল মোহনবাগান]
“গত দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে আমি ওয়ান ডে সিরিজের স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছিলাম। এবার ডাক পেলাম টেস্ট স্কোয়াডে। তবু বলব না, আমার সোনার সময় চলছে। কিংবা আমার লক্ষ্যপূরণ হয়ে গিয়েছে। আমার লক্ষ্যপূরণ সে দিন হবে, যে দিন ভারতের জার্সিতে মাঠে নামতে পারব। দেশকে জেতাতে পারব। আপাতত এটুকু বলব যে, আমি উন্নতি করছি। এত দিন ধরে যে খাটাখাটনি করেছি, সেই পরিশ্রমের দাম পাচ্ছি। দেখুন, মানুষের জীবনে পরিশ্রমই নিরানব্বই শতাংশ হয়। বাকিটা ভাগ্য। তাই এত দিন যা করে এসেছি আমি, সেটাই করে যেতে চাই। পদ্ধতিতে বিশ্বাস রাখতে চাই। রেজাল্ট পেতে হয়তো দেরি হতে পারে। কিন্তু পদ্ধতি থেকে সরে গেলে চলে না। আর একমাত্র ক্রিকেটারের জীবনে নয়। দৈনন্দিন জীবনেও পদ্ধতি নামক শব্দটাই সব। যা আপনাকে একটু একটু করে লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
“এখানে বলতে চাই যে, আমি একা এতটা পথ আসতে পারতাম না। আমার এই সফরে লালজি (অরুণ লাল), রণ স্যর (রণদেব বসু), সৌরাশিস স্যর (সৌরাশিস লাহিড়ী), জয়দীপ স্যর (জয়দীপ মুখোপাধ্যায়) সবার প্রচুর অবদান রয়েছে। প্রত্যেকে আমাকে সাহায্য করেছেন। বাংলার কাছে আমি চির কৃতজ্ঞ থাকব। আমি যখন কিছু ছিলাম না, তখন বাংলা আমার পাশে ছিল। এবার আমার দায়িত্ব বাংলাকে ফিরিয়ে দেওয়ার। যাঁরা আমার উপর আস্থা রেখেছেন, ভালবেসেছেন, তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়ার। তবে একটা কথা মনে হয়। আমি হয়তো ভাল কিছু করেছি বলেই এত আমাকে ভালবাসেন ওঁরা। আরও একটা ব্যাপার। মুকেশ ভাইয়ের সঙ্গে আমিও এবার টেস্ট স্কোয়াডে। মুকেশ ভাইয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন বাংলার হয়ে খেলেছি। দেশের হয়ে দু’জন খেললে, কী করব না করব, তা নিয়েও কথা হয়েছে আমাদের। কে জানত, তা এ ভাবে সত্যি হয়ে যাবে?”
“টেস্ট খেলতে নামলে কী করব? এখনও ভাবিনি। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ঘুরে এসেছি আমি। তবে সেখানকার পিচ, পরিবেশ, বল সব আলাদা। ভারতের সঙ্গে সেটা মিলবে না। দেখুন, অভিজ্ঞতা তো আইপিএলেরও আছে। আরসিবিতে খেলি আমি। যে টিমে বিরাট কোহলি খেলে। কিন্তু সেটা আলাদা ফরম্যাট। বড়জোর বিরাটের মানসিকতা আমি ধার নিতে পারি, মাঠে নামার সময়। কিন্তু আমার মতে, টেস্ট খেলতে নামলে সবচেয়ে বেশি কাজে দেবে আমার রনজি খেলার অভিজ্ঞতা। বাংলার হয়ে দু’টো রনজি ট্রফি ফাইনাল খেলেছি। দেশের সর্বত্র খেলা হয়ে গিয়েছে। ভারতের পিচ কোথায় কেমন, আমি জানি…।”