সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তৃতীয় মোদি সরকারের প্রথম পুর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। যে বাজেটে বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলির জন্য কার্যত কল্পতরু হতে দেখা গিয়েছে মোদি সরকারকে। মোদি সরকারের এই বাজেটকে শরিক তোষণের বাজেট বলে তোপ দেগে বুধবার সংসদ অধিবেশনে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অলআউট আক্রমণে নামার সিদ্ধান্ত নিল বিরোধী ইন্ডিয়া জোট। বিরোধীদের অভিযোগ, এই বাজেট শুধুমাত্র বিজেপির শরিক ও পুঁজিপতিদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য করা হয়েছে।
এদিন নির্মলার পেশ করা বাজেটে সার্বিকভাবে বিরাট কোনও ঘোষণা না করলেও এনডিএর দুই প্রধান শরিকদল টিডিপি (TDP) এবং জেডিইউ (JDU) শাসিত দুই রাজ্যের ঝুলি ভরে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী। বিরাট বিরাট আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে দুই রাজ্যের জন্য। সেটাই মূল আপত্তির জায়গা বিরোধীদের। এই ইস্যুতেই আগামীকাল সংসদ অধিবেশনে বিরোধীদের ভূমিকা কী হবে তা ঠিক করতে মঙ্গলবার কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাসভবনে বৈঠকে বসেছিলেন ইন্ডিয়া জোটের নেতৃত্বরা। যেখানে উপস্থিত ছিলেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, রাহুল গান্ধী, আপ সাংসদ সঞ্জয় সিং, উদ্ধব গোষ্ঠীর রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় রাউত এবং অন্যান্য নেতারা। সেখানেই আলোচনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, শরিক তোষণের এই বাজেটের বিরোধীতায় সংসদে প্রবল বিক্ষোভ দেখাবে বিরোধী সাংসদরা।
[আরও পড়ুন: অন্ধ্রের জন্য বিশেষ প্যাকেজ, বিহারের জন্য কল্পতরু, শরিকদের ঝুলি ভরল নির্মলার বাজেটে]
কেন্দ্রীয় বাজেট ঘোষণার পর কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী বলেন, “এটা একটা কুরসি বাঁচাও বাজেট(Union Budget 2024)। শরিক দলগুলির দাবির কাছে মাথা নিচু করে অন্য রাজ্যগুলিকে বঞ্চিত করা হয়েছে। সাধারণ মানুষের সুরাহার কোনও দিশা নেই।” বিরোধী দলনেতার অভিযোগে, নির্মলার বাজেটে সাধারণ মানুষের জন্য স্বস্তির কোনও খবর নেই। উলটে, আম্বানি-আদানিদের উপকার হবে। কংগ্রেসের (Congress) ইস্তেহার এবং পূর্ববর্তী বাজেটের কপি-পেস্ট করেছেন অর্থমন্ত্রী সীতারমণ।” তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) অভিযোগ, “এরকম কখনও দেখিনি, একটা সরকার শেয়ারের টাকা দিয়ে, শেয়ার স্ক্যাম করে আর আর্থিক প্যাকেজে করে। কেবল অর্থ দিয়ে, মন্ত্রক না দিয়ে, স্পিকারপদ না দিয়ে, বৈষম্য তৈরি করছে। অন্ধ্র, বিহারকে টাকা দিয়েছে তাতে সমস্যা নেই। কিন্তু বৈষম্য তৈরি করা ঠিক নয়।
[আরও পড়ুন: একের পর এক দুর্ঘটনা, তবু বাজেটে অবহেলিত ‘রেল সুরক্ষা’! ‘কবচ’ অন্ধকারেই]
পাশাপাশি বাজেট প্রসঙ্গে সমাজবাদী পার্টির সুপ্রিমো অখিলেশ যাদবের অভিযোগ, শরিকদের খুশি করতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নকে উপেক্ষা করা হয়েছে। অখিলেশের দাবি, বাজেটে কর্মসংস্থান সমস্যারও স্থায়ী কোনও সমাধান করতে পারেননি নির্মলা। উদ্ধব ঠাকরের শিব সেনা আবার অখুশি মহারাষ্ট্রের জন্য আলাদা বরাদ্দ না থাকায়। আদিত্য ঠাকরের প্রশ্ন, “বুঝলাম সরকার বাঁচাতে অন্ধ্র এবং বিহারকে বাড়তি টাকা দেওয়া হল। কিন্তু বিজেপিকে তো একনাথ শিণ্ডেও সমর্থন করেন। মহারাষ্ট্র কী পেল? মহারাষ্ট্রের দোষটা কী?"