সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হেজবোল্লাকে নির্মূল করতে 'মাস্টারপ্ল্যান' ছকেছে ইজরায়েল। একটি সম্মেলনে এসে এই কথাই বললেন ভারতের সেনাপ্রধান উপেন্দ্র দ্বিবেদী। লেবাননে পেজার বিস্ফোরণের পরে শোনা গিয়েছিল, বিশেষ শেল কোম্পানি তৈরি করে হেজবোল্লার ব্যবহৃত ওয়াকিটকিতে বিস্ফোরক ভরেছিল ইজরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ। দীর্ঘদিনব্যাপী এই পরিকল্পনালকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ভারতের সেনাপ্রধান।
দিনকয়েক আগে লেবাননজুড়ে হইচই ফেলে দিয়েছিল পেজার বিস্ফোরণ। সেদেশে ৪০ জনের মৃত্যু হয় এই বিস্ফোরণের জেরে। তার পরেই কার্যত ভেঙে পড়ে লেবাননের জঙ্গি গোষ্ঠী হেজবোল্লার সামগ্রিক যোগাযোগ ব্যবস্থা। ইজরায়েলি হানায় নিকেশ হয় হেজবোল্লা প্রধান হাসান নাসরাল্লা। তার পরে লেবাননে ঢুকে অভিযান শুরু করে ইজরায়েলি ফৌজ। উল্লেখ্য, রেডিয়ো ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে মেসেজ পাঠানোর ছোট্ট যন্ত্র পেজার। মূলত ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের হাত থেকে বাঁচতে হেজবোল্লা নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নির্দেশ দিয়েছিল, মোবাইল ব্যবহারের ফলে দলের গতিবিধি ট্র্যাক করতে পারে মোসাদ। তাই পেজার ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হয়।
হেজবোল্লার এই পদক্ষেপের পর থেকেই পালটা নতুন পরিকল্পনার ছক করে ফেলে মোসাদ। মার্কিন সংবাদপত্র নিউ ইয়র্ক টাইমসের মতে, পেজারকে টার্গেট করতে নাসরুল্লার নির্দেশের আগেই শেল কোম্পানি তৈরি করে ইজরায়েল। হাঙ্গেরি-ভিত্তিক BAC কনসাল্টিং পেজার নির্মাতা হিসেবে আন্তর্জাতিক বাজারে নামে। যার পিছনে ছিল মোসাদ। একই রকম আরও দুটি শেল কোম্পানি তৈরি করা হয়। হেজবোল্লার তরফে অর্ডার আসতেই তাদের জন্য তৈরি করা হয় বিশেষ পেজার। যার ব্যাটারিতে ঢোকানো ছিল মাত্র ৩ গ্রাম বিস্ফোরক। বিপুল সংখ্যক পেজার রপ্তানি করা হয় লেবাননে।
গোটা পরিকল্পনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন সেনাপ্রধান। তাঁর কথায়, "ইজরায়েল একেবারে অন্যভাবে কাজ করেছে। প্রথমে ওরা ভেবেছিল যে হামাসই সবচেয়ে বড় সমস্যা। তাই হামাসকে আগে নিকেশ করে তার পর হেজবোল্লা দমনে এগিয়েছে তেল আভিভ। যেভাবে পেজারের জন্য শেল কোম্পানি তৈরি করেছে, সেটাকে মাস্টারস্ট্রোক বলাই যায়।" দ্বিবেদীর মতে, হামলা শুরুর দিনে মোটেই যুদ্ধ শুরু হয় না। বরং যেদিন থেকে হামলার পরিকল্পনা হয়, সেটাই যুদ্ধ শুরুর প্রথম দিন। একই সঙ্গে সেনাপ্রধানের হুঁশিয়ারি, ইজরায়েলের এই পদক্ষেপ দেখে ভারতেরও সতর্ক থাকা উচিত, বিশেষত প্রযুক্তি আমদানির ক্ষেত্রে। হেজবোল্লার মতো দশা যেন ভারতে না হয়, তার জন্য় চোখ কান খোলা রাখতে বলেছেন সেনাপ্রধান।