সুকুমার সরকার, ঢাকা: দিল্লিতে মোদি-হাসিনা বৈঠক ঘিরে প্রতিরক্ষামহলে জল্পনা ছিলই। কাশ্মীর নিয়ে টানাপোড়েন ও ডোকলামে ‘ড্রাগনের’ আগ্রাসী মনোভাবে ভারতের কাছে বাংলাদেশের কৌশলগত গুরুত্ব যে অনেকটাই তা বলাই বাহুল্য। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও তা বলা যায়। ফলে দু’দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা যে বাড়বে তা জানাই ছিল। তবে এবার আর রাখঢাক না করে বাংলাদেশ উপকূলে বিশেষ রাডার বসাচ্ছে ভারতীয় নৌবাহিনী। এর জন্য দু’দেশের মধ্যে একটি মউ স্বাক্ষর হয়েছে।
[আরও পড়ুন: ত্রিপুরাকে ফেনী নদীর জল দেবে বাংলাদেশ, ঘোষণা হাসিনার]
গত শনিবার নয়াদিল্লিতে মোদি ও হাসিনার মধ্যে রাডার বসানো নিয়ে মউ স্বাক্ষরিত হয়। ফলে চিনের যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিনের উপর নজরদারি চালাতে বাংলাদেশ উপকূলে ২০টি উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন বিশেষ রাডার বসাচ্ছে ভারতীয় নৌসেনা। পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন উপকুলেও এই রাডার বসানো হবে। এই ভারতীয় নেটওয়ার্কের নাম দেওয়া হয়েছে, ‘কোস্টাল সার্ভেইল্যান্স রাডার সিস্টেম ইন বাংলাদেশ’। এই রাডারগুলি শুধুমাত্র জলের উপর নয়, গভীর সমুদ্রের অতলেও নজরদারি চালাতে সক্ষম। নেটওয়ার্ক চালুর পরে ২০টি রাডারে যে ছবি ধরা পড়বে তা সরাসরি নৌবাহিনীর সদর দপ্তরে চিনা ডেস্কে সমর-বিশেষজ্ঞদের কাছে চলে আসবে। বাংলাদেশ উপকূল থেকে সেনার সংগৃহীত ফুটেজ ও বার্তার গুরুত্ব বুঝেই প্রয়োজনে দিল্লির সাউথ ব্লকেও জানিয়ে দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগে মরিশাস, শ্রীলঙ্কা, সিসিলি এবং মালদ্বীপেও একই ধরনের রাডার বসিয়ে নিজের প্রতিরক্ষাকে শুধু মজবুত নয়, পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে ভারত সরকার। বস্তুত ২০১৫ সালেই প্রথম ভারতের
তরফে চট্টগ্রাম, মংলা বন্দর-সহ বাংলাদেশ উপকূলে এই রাডার বসানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেশে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার আশঙ্কায় সেই সময় শেখ হাসিনা বিষয়টি বিবেচনা করে দেখার আশ্বাস দেন। এছাড়াও চিনা লগ্নির আশায় বেজিংকে চটাতে চায়নি ঢাকা। তবে বিগত কয়েক বছরে ওনেকটাই পালটেছে পরিস্থিতি। বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দেশ হিসেবে উঠে এসেছে ভারত। পর্যায়ক্রমে ঢাকার সঙ্গে নয়াদিল্লির বাণিজ্যিক, কূটনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে। জার ফলে এবার আর দোনামোনা না করে ভারতকে রাডার বসানোর অনুমতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা।
[আরও পড়ুন: ঢাকায় বানচাল বড়সড় নাশকতার ছক, গ্রেপ্তার লাদেন ঘনিষ্ঠ জঙ্গিনেতা]
The post নজরে ‘ড্রাগন’, বাংলাদেশ উপকূলে অত্যাধুনিক রাডার বসাচ্ছে ভারত appeared first on Sangbad Pratidin.