সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিন ও পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যা নিয়ে জেরবার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের শীর্ষ কর্তারা। একদিকে চিনা সেনা ভারতের পাঁচটি স্থানে একযোগে হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছে, অন্যদিকে মার্কিন অনুদান বন্ধ হওয়ার পর আরও ক্ষেপে উঠেছে পাক জঙ্গি সংগঠনগুলি। এই পরিস্থিতিতে রাজধানী দিল্লিতে বড়সড় জঙ্গি হামলার ছক উড়িয়ে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ও ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও নবনিযুক্ত রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের উপর হামলার আশঙ্কাই এখন সবচেয়ে বেশি। সবমিলিয়ে যা পরিস্থিতি, তা দেখে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তারা এখন দিল্লির রাইসিনা হিলস, রাষ্ট্রপতি ভবনকে নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলতে চান।
[লাল ফৌজের সঙ্গে লড়াই ভারতীয় সেনার, ভাইরাল ভিডিও]
তবে এই নিরাপত্তা বলয় শুধুমাত্র অতিরিক্ত পুলিশ ও সেনাকর্মীদের মোতায়েন করে নয়, একেবারে আধুনিক প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে গড়ে তুলতে চান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কর্তারা। তাই এবার আমেরিকার কাছ থেকে এক নয়া প্রযুক্তির ‘অ্যান্টি-মিসাইল’ ডিফেন্স সিস্টেম কিনতে আগ্রহ দেখিয়েছে সাউথ ব্লক। এই সিস্টেমের পোশাকি নাম ‘আমব্রেলা’। দিল্লি এয়ার ডিফেন্স প্রজেক্টের অধীনে বসানো হবে এই ‘দ্য ন্যাশনাল অ্যাডভান্সড সারফেস টু এয়ার সিস্টেম’ বা NASAMS। আকাশপথে যে কোনও হামলা রুখে দেবে এই নয়া প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। শত্রুপক্ষের মিসাইল, এয়ারক্রাফট বা মারণ ড্রোন হামলা রুখতেই এই নয়া মার্কিন মিসাইল ডিফেন্স সিস্টেম কেনার কথা ভাবছে নয়াদিল্লি। এরকম আধুনিক ডিফেন্স সিস্টেম এর আগে খোদ আমেরিকাতেই ওয়াশিংটনকে সুরক্ষিত রাখতে ব্যবহার করত। আর নয়াদিল্লিকে আধুনা লস্কর জঙ্গিদের হাত থেকে রক্ষা করতে এবার দ্রুতই সেখানেও বসানো হবে NASAMS।
এতদিন রাশিয়ার কাছ থেকে কেনা মিসাইল সিস্টেম ব্যবহার করে এসেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। তবে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের দাবি, তাঁদের তৈরি এই নয়া ডিফেন্স সিস্টেম একেবারে ‘স্টেট অফ দ্য আর্ট’ মানের। দিল্লির আশেপাশের বায়ুসীমায় শত্রুপক্ষের যে কোনও যুদ্ধবিমান অনুপ্রবেশ করলেই তাকে দ্রুত চিহ্নিত করে ফেলে পালটা হামলা চালাবে ‘আমব্রেলা’। রাজধানীর দিকে ধেয়ে আসা ক্রুজ মিসাইলকে ধ্বংস করে দেবে চোখের নিমেষে। আমেরিকা ছাড়াও নরওয়ে, ফিনল্যান্ড ও স্পেনেও ব্যবহৃত হয় ‘আমব্রেলা’, জানাচ্ছে নির্মাণকারী সংস্থা। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে খবর, সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে যে ‘ব্যালিস্টিক মিসাইল ডিফেন্স শিল্ড প্রজেক্ট’ চলছে, তার সমান্তরালে এই নয়া মার্কিন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মজুত রাখা হবে দিল্লি ও মুম্বইতে। ডিআরডিও-র ওই প্রকল্পে ভূমি থেকে ৩০-১২০ কিলোমিটার উচ্চতায় ও ২০০০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরের যে কোনও হামলাকারী মিসাইলকে ধ্বংস করে দেওয়া যায়।
[শূকরের রক্তে ভেজা গুলিতে জঙ্গি নিকেশের দাওয়াই ট্রাম্পের, শুরু বিতর্ক]
বায়ুপথে হামলা রুখতে এভাবে একের পর এক সরঞ্জাম ব্যবহার করে নয়াদিল্লি এখন প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করে তুলতে চায়। পাকিস্তানকে নজরে রেখে দেশের সীমান্ত অঞ্চলকে সুরক্ষিত রাখতে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে অত্যাধুনিক SPYDER মিসাইল সিস্টেম বসিয়েছে বায়ুসেনা। এর পাশাপাশি, ভূমি থেকে বায়ুতে ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত উচ্চতায় ড্রোন হামলা প্রতিহত করতে ইজরায়েলের কাছ থেকে ১৭ হাজার কোটি টাকা খরচ করে মিডিয়াম রেঞ্জ সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল বা MRSAM কেনার চূড়ান্ত চুক্তি হয়ে গিয়েছে। তবে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সরঞ্জাম কেনার জন্য নয়াদিল্লির সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে সবচেয়ে বড় চুক্তিটি হয়েছে পেন্টাগনের। ৭৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করে আগামী ১০ বছরে আমেরিকার কাছ থেকে প্রচুর অত্যাধুনিক মারণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করেছে ভারত।
The post মোদি, কোবিন্দের সুরক্ষায় দিল্লিতে বসছে মার্কিন ‘আমব্রেলা’ appeared first on Sangbad Pratidin.