সৌরাশিস লাহিড়ী: অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে টি-২০ সিরিজ ১-১ হলেও, এটা ২-১ হতে পারত। অস্ট্রেলিয়া এখানে বরুণ দেবতার দাক্ষিণ্য পেয়েছে। মেলবোর্নে বৃষ্টিতে ম্যাচ ধুয়ে না গেলে ভারত কিন্তু জেতার মতো জায়গায় ছিল। ম্যাচের পর বিরাট কোহলি বলেছেন, এই রেজাল্ট একেবারে ফেয়ার রিফ্লেকশন। অর্থাৎ সিরিজের যথাযথ প্রতিফলন। এটা বিরাটের বিনয় বলে মনে হচ্ছে । তা না হলে তিন ম্যাচের এই সিরিজে ভারতকেই এগিয়ে থাকতে দেখেছি। সিরিজের উপর বিরাটদের দখল ছিল আগাগোড়া।
[টি-টোয়েন্টি দল থেকে মিতালির বাদ পড়া নিয়ে মুখ খুললেন সৌরভ]
ভারত অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়ার আগে আমি লিখেছিলাম, অজিদের সিরিজ জেতার একমাত্র সুযোগ টি-২০-তে। এই ফরম্যাটে ওদের টিম বেশ ভাল। কিন্তু সিরিজে অত ভাল খেলতে দেখিনি অ্যারন ফিঞ্চের দলকে। মেলবোর্নে বৃষ্টি বাধা না দিলে বিরাটরা অস্ট্রেলিয়ার ওই কটা রান হেসেখেলে তুলে দিত। এবার সবার নজর টেস্ট সিরিজের দিকে। ব্রিসবেনে প্রথম টেস্ট শুরু হবে ৬ ডিসেম্বর। আমার মনে হচ্ছে, দু’টো দলের মধ্যে বেশি ভাল প্রস্তুতি হল ভারতেরই। অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট খেলতে নামার আগে তিনটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারার সুযোগ সব সময় পাওয়া যায় না। এতে তিনটি ভেনু উইকেট ও পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারল ভারতীয় ক্রিকেটাররা।
যে কথাটা বলছিলাম, টেস্টে ভারতকেই এগিয়ে রাখতে হবে। দলগত শক্তির বিচারে বিরাট কোহলিরা বেশ কিছুটা এগিয়ে। অনেকে এটা পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ড সিরিজের কথা তুলে আনবেন। ভারত দু’ই জায়গাতেই হেরেছে। কিন্তু সিরিজের ফল আসল ছবিটা তুলে ধরেনি। ভারত দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডে সিরিজ জিততে পারত। পারেনি দরকারের সময় মুঠো আলগা করে ফেলায়। অস্ট্রেলিয়ার এই সিরিজে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সেটা মনে রাখতে হবে।
[ভরসা সেই বিরাট, সিডনিতে ম্যাচ জিতে মান বাঁচাল ভারত]
ভারতকে এগিয়ে রাখলেও একটা জিনিস খেয়াল রাখতে হবে। অস্ট্রেলিয়া স্মিথ, ওয়ার্নার ও ব্যানক্রফটকে হারিয়ে ব্যাটিংয়ে একটু কমজোরি হয়ে পড়েছে। কিন্তু ওদের বোলিং সেই একই আছে। হ্যাজেলউড, কামিন্স আর স্টার্ক নিজেদের উইকেটে ভারতকে চেপে ধরার চেষ্টা করবে। আর এটা ওরা বরাবরই করে এসেছে। অস্ট্রেলিয়ার উইকেটে এই ফাস্ট বোলিংয়ের মোকাবিলা করাটা কিন্তু ভারতীয় দলের কাছে চ্যালেঞ্জ। আর একটা জিনিসও বলার আছে। অস্ট্রেলিয়া ঘরের মাঠে খেলবে। ফলে তাদের জন্য হোম অ্যাডভান্টেজ থাকছে। টেস্ট ক্রিকেট বলুন বা অন্য কোনও ফরম্যাট – এই হোম অ্যাডভান্টেজ একটা দলের কাছে বিশাল ব্যাপার। আর ওরা নিজেদের চেনা মাঠ ও চেনা পরিবেশে খেলবে। তবে ভারতের জন্য একটা বড় ব্যাপার এই যে বিরাটের দলের সিংহভাগ ক্রিকেটারই আগে অস্ট্রেলিয়ায় খেলেছে। তাদের জন্য এই সফর তাই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।
আর একটা জিনিসও এখানে খুব বলতে ইচ্ছে করছে আমার। ক্রিকেট মাঠে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার লড়াই ইদানীং খুব উপভোগ্য হচ্ছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে বলে মনে হয় না। লড়াইটা দাঁড়াতে পারে বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ব্যাটিং বনাম অস্ট্রেলিয়ার ফাস্ট বলের আক্রমণ। তবে ভারতীয় সিম অ্যাটাকও এবার যথেষ্ট শক্তিশালী।