স্টাফ রিপোর্টার: টগবগ করে ফুটছে রক্ত। চোখের জলে এখনও ভেজা দেশের মাটি। কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার পর তামাম ভারতবাসীর একটাই দাবি – এবার হোক প্রতিশোধ। এমনই তপ্ত পরিস্থিতিতে আগামী সোমবার আন্তর্জাতিক আদালতে পাকিস্তানের মুখোমুখি হচ্ছে ভারত। ভারতীয় নৌ সেনা কমান্ডার কুলভূষণ যাদব মামলায় আন্তর্জাতিক আদালতে ভারতের তরফে সওয়াল করা হবে। পুলওয়ামায় সন্ত্রাসীদের কাপুরুষোচিত হামলায় যে পাকিস্তানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদত রয়েছে, তার প্রমাণ ইতিমধ্যেই ভারতের হাতে আসতে শুরু করেছে। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক আদালতে পাকিস্তানকে আইনিভাবে পর্যুদস্ত করাই এখন ভারতের একমাত্র লক্ষ্য।
পুলওয়ামা হামলা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো খবরের ছড়াছড়ি! সতর্ক থাকুন
ইতিমধ্যেই কুলভূষণ মামলায় আদালতে এক দফা জয় পেয়েছে ভারত। গুপ্তচর বৃত্তির অভিযোগে ২০১৭-র এপ্রিলে ভারতীয় নেভি কমান্ডার কুলভূষণকে ফাঁসির সাজা শোনায় পাকিস্তানের সেনা আদালত। সেনা আদালতের সেই নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হয় ভারত। ওই বছর মে মাসে কুলভূষণের ফাঁসি সংক্রান্ত পাকিস্তানি আদালতের রায়ে স্থগিতাদেশ জারি করে দেয় আন্তর্জাতিক আদালত।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আন্তর্জাতিক বা বিভিন্ন দেশের বিবাদ মেটাতে তৈরি হয়েছিল আন্তর্জাতিক আদালত। এবার এই আন্তর্জাতিক আদালতেই চূড়ান্ত আইনি যুদ্ধ ভারত-পাকিস্তানের। সোমবার ভারত নিজের যুক্তি আদালতকে জানানোর পরের দিন মঙ্গলবার পাকিস্তান নিজের বক্তব্য রাখবে। দু’পক্ষের যুক্তির পালা শেষ হওয়ার পর রায় জানাতে মাসখানেক সময় লাগবে বলে জানা যাচ্ছে। পাকিস্তানের দাবি, কুলভূষণ যাদবকে তারা গুপ্তচর বৃত্তির অভিযোগে ২০১৬ সালে বালুচিস্তান থেকে গ্রেফতার করে। কুলভূষণ ইরান হয়ে বেআইনিভাবে পাকিস্তানে প্রবেশ করেছিল। তার উদ্দেশ্য ছিল, পাকিস্তানের উপর গুপ্তচরবৃত্তি করা। কিন্তু আন্তর্জাতিক আদালতের দশ বিচারপতির বেঞ্চের সামনে প্রকৃত সত্য তুলে ধরে ভারত। এদেশের আইনজীবীরা পাকিস্তানের এই বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করে যথাযথ যুক্তি পেশ করে। পালটা অভিযোগ তোলা হয়, কুলভূষণ যাদবকে ইরান থেকে অপহরণ করা হয়। তিনি একজন অবসরপ্রাপ্ত নৌসেনা অফিসার। ব্যবসার কাজে তিনি ইরান গিয়েছিলেন, তার যথেষ্ট প্রমাণ ভারতের হাতে রয়েছে। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে আন্তর্জাতিক আদালতে ভারত দাবি করেছে, কোনও প্রমাণ ছাড়াই কুলভূষণ যাদবকে রীতিমতো ক্যাঙারু কোর্ট বসিয়ে ফাঁসির সাজা শোনানো হয়েছে। যা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
জঙ্গিহানার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ফের বিস্ফোরণ রাজৌরিতে, শহিদ সেনা আধিকারিক
ভারত আরও জানায়, পাকিস্তান কীভাবে ভিয়েনা চুক্তি লঙ্ঘন করে বারবার কুলভূষণকে ভারতীয় কনস্যুলেটের সঙ্গে কোনওরকম যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়নি। এছাড়াও কুলভূষণের মা ও স্ত্রী কুলভূষণের সঙ্গে পাকিস্তানে দেখা করতে গেলে তাঁদের বল প্রয়োগ করে রীতিমতো প্রত্যাখ্যান করা হয়। সহানুভূতির খাতিরেও তাদের একবারের জন্য দেখা করতে দেওয়া হয়নি। আন্তর্জাতিক আদালত কুলভূষণের ফাঁসির সাজায় স্থগিতাদেশ জারির পর পাকিস্তান আদালতও তাদের নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করে। কিন্তু পাকিস্তানের তরফে হুমকি দিয়ে রাখা হয়েছে, এতে কিছু বদলাবে না। কুলভূষণের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। তবে সোমবারের শুনানির
আগে এখনই মুখ খুলতে চাইছে না ভারত। ভারতীয় বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রবিশ কুমার বলেন, “বিষয়টি বিচারাধীন। যা জবাব দেওয়ার তা আদালতেই দেব।”
The post কুলভূষণ মামলায় ১৮ তারিখ আন্তর্জাতিক আদালতে মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান appeared first on Sangbad Pratidin.