সংবাদ প্রতিদিন ডিডিটাল ডেস্ক: পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি ঘাঁটিগুলোতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারত। ২০১৬ সালে উরি হামলার পর ভারতীয় সেনার পালটা মার আজও ভুলতে পারেনি পাকিস্তান। সেই ঘটনার কথা ফের মনে করিয়ে দিন দুয়েক আগে পাকিস্তানের জেহাদি ডেরায় মিসাইল ও ড্রোন হামলা চালায় ইরান। এহেন ডামাডোলে বন্ধু তেহরানের পাশে দাঁড়িয়েছে নয়াদিল্লি। বিদেশমন্ত্রকের কথায়, ‘অনেক সময় আত্মরক্ষায় এহেন পদক্ষেপ করে রাষ্ট্রগুলো। এটা আমরা বুঝি।’
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের পাশে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পাকিস্তানকে একহাত নিয়েছে ভারত। ইসলামাবাদ যে সন্ত্রাসের মদতদাতা সেই কথা ইঙ্গিতে আবারও স্পষ্ট করে দিয়ছে বিদেশমন্ত্রক। বুধবার ইরানের ড্রোন হামলা প্রসঙ্গে মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “এটা পাকিস্তান ও ইরানের বিষয়। তবে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে জিরো টলারেন্স নীতি মেনে চলে ভারত। অনেক সময় আত্মরক্ষায় এহেন পদক্ষেপ করে রাষ্ট্রগুলো। এটা আমরা বুঝি।” তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, ভারত ও ইরানের সম্পর্ক সময় পরীক্ষিত। কাশ্মীর ইস্যুতে একাধিকবার দিল্লির পাশে দাঁড়িয়েছে তেহরান। মস্কো-দিল্লি-তেহরান সখ্য সাউথব্লকের নীতিনির্মাতাদের কাছে বড় কৌশলগত হাতিয়ার।
[আরও পড়ুন: পাকিস্তানে মিসাইল-ড্রোন হামলা ইরানের, পালটা মারের হুঁশিয়ারি ইসলামাবাদের]
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার পাকিস্তানের সবথেকে বড় প্রদেশ বালোচিস্তানে জেহাদি সংগঠন জইশ আল আদলের ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ইরানের এলিট রেভোলিউশনারি গার্ড। তেহরানের সরকার নিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ জানিয়ছিল হামলায় ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ব্যবহার করা হয়। তার আগে সোমবার ইরাক এবং সিরিয়ায় কুর্দ বিদ্রোহী তথা ইজরায়েলের গুপ্তচর সংস্থা মোসাদের দপ্তরে হামলা চালায় ইরানের সেনা। এদিকে, এহেন হামলার ভয়াবহ ফল হতে পারে বলে পালটা হুমকি দিয়েছে ইসলামাবাদ। তাদের দাবি ইরানের মিসাইল হানায় দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ইরানের বিদেশমন্ত্রী আমির আবদুল্লাহিয়ান বলেন, “পাকিস্তানের জমিতে শুধুমাত্র জঙ্গিঘাঁটিগুলোতে হামলা চালিয়েছি আমরা। সব দেশের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করে ইরান। তবে জাতীয় নিরাপত্তায় সঙ্গে কখনওই আপোস আমরা করব না।”
প্রসঙ্গত, অতীতে বহুবার ইরানের বাহিনীর উপর হামলা চালিয়েছে সুন্নি জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ আল আদলের। ইরান সীমান্তে একাধিক বোমা বিস্ফোরণ এবং পুলিশের একাধিক অফিসারকে অপহরণের দায় স্বীকার করেছে তারা। এই গোষ্ঠীর জন্ম হয়েছে ২০১২ সালে। মূলত পাকিস্তানের সীমান্ত এলাকায় সেই জঙ্গিগোষ্ঠী সন্ত্রাসমূলক কাজকর্ম করে থাকে। এই বিষয়ে বারবার ইসলামাবাদকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি বলে দাবি করেছে তেহরান। তাই সন্ত্রাস দমনে এহেন হামলা বলে রাইসি প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন।