অর্ণব আইচ: প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আত্মনির্ভর হওয়ার পথে বড় পদক্ষেপ ভারতের। এবার অত্যাধুনিক ‘আকাশ প্রাইম’ মিসাইলের সফল পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করল প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO)।
[আরও পড়ুন: ‘চ্যান্সেলর যেই হোন, ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকবে’, বার্তা জার্মান রাষ্ট্রদূতের]
সোমবার ওড়িশার চাঁদিপুরে ইন্টিগ্রেটেড মিসাইল টেস্ট রেঞ্জ থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করা হয়। আকাশ মিসাইলের (Akash Missile) নতুন সংস্করণ আকাশ প্রাইম মিসাইলটি সেই পরীক্ষাতেও সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছে, যা প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থাকে আরও একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সাফল্যের সঙ্গে উৎক্ষেপণ সম্পন্ন হওয়ায় ডিআরডিও, ভারতীয় সেনা ও বিমানবাহিনীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। জানা গিয়েছে, অকাশ প্রাইম মিসাইলটিতে রয়েছে অত্যাধুনিক ‘রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি সিকার’। এই যন্ত্রের মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তুকে সহজেই খুঁজে বের করতে সক্ষম হয় ক্ষেপণাস্ত্রটি। এটি অতিউচ্চতায় কম তামপাত্রায় কাজ করতে সক্ষম। পরীক্ষার সময় রাডার, ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল টার্গেটিং সিস্টেম ও টেলিমেট্রি স্টেশন-সহ পরীক্ষার জায়গায় রেঞ্জ স্টেশগুলি ক্ষেপণাস্ত্রের গতিপথ ও ফ্লাইটের ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।
২০১৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থলসেনা ও বায়ুসেনায় অন্তর্ভুক্ত হয় আকাশ মিসাইল সিস্টেম। এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্রহ্মস-এর মতোই সুপারসনিক। এর সর্বাধিক গতি হল ২.৫ ম্যাক (৩০৮৭ কিমি প্রতি ঘণ্টা)। এটি মধ্যম পাল্লার মিসাইল, যেটা ২৫ কিমি পর্যন্ত দূরে থাকা লক্ষ্যকে সহজেই ধ্বংস করতে পারবে। ৬০ কিলোগ্রাম পর্যন্ত বিস্ফোরক বহন করতে সক্ষম আকাশ মিসাইল। এই অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি যুদ্ধবিমান, ড্রোন, ক্রুজ মিসাইল নিমেষে ধ্বংস করতে সক্ষম। অকাশ প্রাইম সেই সংস্করণের আরও আধুনিক রূপ।
প্রসঙ্গত, গত বছর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতেই ক্যাবিনেটের বৈঠকে ‘আকাশ’ ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি রপ্তানিতে সম্মতি দেওয়া হয়। অস্ত্র রপ্তানির মাধ্যমে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৩৬ হাজার কোটি) আয়ের লক্ষমাত্রা রয়েছে সরকারের। এখনও পর্যন্ত প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে শুধুমাত্র যন্ত্রাংশ রপ্তানি করত ভারত। কিন্তু এবার আকাশ মিসাইল রপ্তানিতে সবুজ সংকেত দিয়েছে কেন্দ্র। চিনকে নজরে রেখে ভিয়েতনাম ও ইন্দোনেশিয়াকে আকাশ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ভারতের।এর ফলে আন্তর্জাতিক স্তরে অস্ত্রের বাজারে নিজের উপস্থিতি জানান দেবে ভারত বলেই মত বিশ্লেষকদের।