ভিভিএস লক্ষ্মণ: মঙ্গলবারের ম্যাচটা দেখে মনে হল, প্রথম টি—টোয়েন্টির অ্যাকশন রিপ্লে দেখছি যেন! সেই পাওয়ার প্লে—তে তিন উইকেট চলে যাওয়া, দিনের শেষে সেই পাওয়ার প্লে—তেই ম্যাচ হার! পরিসংখ্যান বলে, পাওয়ার প্লে—তে কোনও টিম যদি দু’উইকেটের বেশি হারায়, তা হলে চার বারে তিন বার সেই টিম হারে। বিরাট কোহলি (Virat Kohli) চেষ্টা করেছিল। কোহলি দুর্ধর্ষ একটা ইনিংস খেলে চেষ্টা করেছিল টিমকে ম্যাচে ফিরিয়ে আনতে। কিন্তু ও নিজের সেরাটা দিয়েও টিমের ড্যামেজ কন্ট্রোল আটকাতে পারেনি। শুরুতেই টিম ও রকম পরপর ধাক্কা খেলে কোহলি একা কী করবে?
দেখা যাচ্ছে, আহমেদাবাদের লাল মাটির পিচ ইংল্যান্ডের (England) ক্রমশই বন্ধু হয়ে উঠছে। তার উপর টস জিতল ইওন মর্গ্যান। যা কি না চলতি সিরিজে বড় ফ্যাক্টর হয়ে যাচ্ছে। প্রথমে ব্যাট করা একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে জোফ্রা আর্চার আর মার্ক উডকে সামলানো তো আরও কঠিন। ওরা শুধু প্রচণ্ড গতিতে বল করে না, একই সঙ্গে এমন সব লেংথে বল করে, যা সামলানো ব্যাটসম্যানের পক্ষে কঠিন হয়ে যায়। প্লাস, পিচ থেকে বাড়তি বাউন্স আদায় করে নিতে পারে ওরা। আমার মতে, এবার প্রথমে ব্যাট করতে হলে আরও সতর্ক হওয়া উচিত ভারতের। কিন্তু সেটা না করে ভারতীয় টপ অর্ডার উডদের উপর বারবার চড়াও হতে যাচ্ছে আর শেষে উডকেই জিতিয়ে দিচ্ছে।
রোহিত শর্মাকে পর্যন্ত দেখে মনে হল নিজের ছন্দে নেই। দু’টো ম্যাচ মাঝে খেলেনি রোহিত। তাতে দেখেই মনে হল, একটু যেন ছন্দের অভাবে ভুগছে। কেএল রাহুলের অবস্থা কেন এমন, এরপর আন্দাজ করতে পারছি। গত নভেম্বরের পর থেকে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেট খেলেনি রাহুল। একই সঙ্গে মনে হয়, রাহুলকে টেকনিকে বদল আনতে হবে। উন্নতি করতে হবে ফুটওয়ার্কে। শুধু হাত বাড়িয়ে খেলতে গিয়ে ও বলের পাশে চলে যাচ্ছে, পিছনে নয়। তা ছাড়া ভারতের কয়েকটা সিদ্ধান্তও আমার ভাল লাগেনি।
[আরও পড়ুন: চেনা ছন্দে শচীন-যুবরাজ, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে লেজেন্ডদের টুর্নামেন্টের ফাইনালে ভারত]
আমি জানি, টিম ম্যানেজমেন্ট নিজস্ব যুক্তি দেবে। কিন্তু ঈশান কিষাণ অভিষেকে হাফসেঞ্চুরি করার পর কেন ওকে ওপেনিং থেকে তিন নম্বরে নামিয়ে দেওয়া হল? কেন টিমের বাইরে রাখা হল সূর্যকুমার যাদবকে? যে কি না দ্বিতীয় টি—টোয়েন্টিতে একটা বলও খেলার সুযোগ পায়নি? বোলিংয়েও সে রকম কোনও আগুন চোখে পড়ল না আমার। ভারতের শুরুতে আরও উইকেট প্রয়োজন। বোধহয় সেই কারণেই যুজবেন্দ্র চাহালকে পাওয়ার প্লে-তে নিয়ে আসা হল। কিন্তু দেখা গেল, জস বাটলারের কাছে সব কিছুরই উত্তর রয়েছে। যে ভাবে চাহালকে ও ধ্বংস করল, দেখার মতো। ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে ফেলে দিচ্ছিল চাহালকে। মাঝে চাহাল লেগস্টাম্প লাইনে বল করতে গেল। বাটলার ওকে সুইচ হিট মেরে ফেলে দিল। আর তাই, আজ সিরিজ নির্ধারক টি—টোয়েন্টিতে ভারতকে নিজেদের কম্বিনেশন নিয়ে ভাবতে হবে। প্রয়োজনে বোলিং বিকল্প বাড়াতে হবে। ব্যাটসম্যান বাড়িয়ে খেললে লাভ যে হয় না, তা নয়। গত তিনটে ম্যাচের দু’টোতেই সেটা আমরা দেখেছি। কিন্তু ভারতের আরও আগ্রাসী হওয়া দরকার। মনে রাখতে হবে, ভারতের কোথায় সমস্যা হচ্ছে, সেটা কিন্তু বাদবাকি টিমগুলোও দেখছে। অনবরত নোট নিচ্ছে।
তবে ক্রীড়াবিশেষজ্ঞদের মতে, এই ম্যাচে ভারতীয় দলে অন্তত তিনটি পরিবর্তন দেখা যেতে পারে। বাদ পড়তে পারেন শার্দূল ঠাকুর, কেএল রাহুল এবং শ্রেয়স আয়ার। দলে আসতে পারেন নভদীপ সাইনি, শিখর ধাওয়ান এবং সূর্যকুমার যাদব।