সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাংলাদেশের টালমাটাল পরিস্থিতির জেরে এ দেশের সীমান্তে বিরাট শরণার্থী চাপ আসতে পারে। আশু এই সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিতে পারছেন না কেউই। কিন্তু প্রশ্ন হল, তেমন হলে দিল্লি কী করবে? শোনা যাচ্ছে, কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকার এবার আর একাত্তরের পুনরাবৃত্তি চায় না। সীমান্তে শরণার্থীদের চাপ যতই আসুক, নিজেদের দরজা হাট করে খুলে দিতে নারাজ দিল্লি।
হাসিনা জমানার অবসানে নতুন অন্তর্বর্তী সরকার তৈরি হয়েছে বাংলাদেশে। সে দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, নোবেলজয়ী ডঃ মহম্মদ ইউনুস সেই সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে বৃহস্পতিবার শপথ নিয়েছেন। দিল্লি এখনই নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্কে কোনও টানাপোড়েন চাইছে না। বস্তুত সাউথ ব্লক এই মুহূর্তে এমন কোনও পদক্ষেপ করতে রাজি নয়, যাতে নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক গোড়াতেই তিক্ত হয়ে ওঠে।
[আরও পড়ুন: বামপন্থীরা অস্তিত্বের সংকটে ভুগবে, মোদি প্রধানমন্ত্রী হবেন, অনেক আগেই ভবিষ্যদ্বাণী করেন বুদ্ধ]
এ রাজ্যে হিন্দু ভোট মেরুকরণের উদ্দেশে বাংলাদেশে ডামাডোল তৈরি হতেই বিজেপি নেতারা আসরে নেমেছিলেন। শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষরা, ওপার বাংলার হিন্দুদের আশ্রয় দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা স্পষ্ট বলেছেন, "ওপার বাংলা থেকে প্রায় ১ কোটি শরণার্থী আসবেন, তাঁদের জন্য বাংলার সরকারের প্রস্তুত হওয়া উচিত। আমাদেরও প্রস্তুত হওয়া উচিত।" বস্তুত দিল্লি গিয়ে দলের নেতৃত্বের কাছেও হিন্দু শরণার্থীদের কথা ভাবার আর্জি জানিয়ে এসেছে বঙ্গ নেতৃত্ব। কিন্তু দিল্লি এখনই এ নিয়ে বড় কোনও পদক্ষেপে নারাজ।
[আরও পড়ুন: ‘গণআন্দোলন গড়ে তুলুন’, স্বাধীনতা দিবসের আগে ফের ‘হর ঘর তেরঙ্গা’ কর্মসূচি প্রধানমন্ত্রীর]
আসলে নয়াদিল্লি মনে করছে, বাংলাদেশের সীমান্ত অবাধ করে দিলে ভারতের সংহতি, জনবিন্যাসে বড়সড় প্রভাব পড়তে পারে। সীমান্ত খুলে দিলে হিন্দুদের পাশাপাশি রাজনৈতিক কারণে উৎপীড়নের শিকার হওয়া আওয়ামী লীগের মুসলিম নেতা-কর্মীদেরও ভারতে চলে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। সেটা হলে বদলে যাবে সীমান্ত এলাকার জনবিন্যাস। যা চায় না ভারত। আবার সীমান্ত শরণার্থীদের ভিড়ে ইসলামিক জঙ্গিদের অনুপ্রবেশও একটা বড় আশঙ্কা। সব মিলিয়ে নয়াদিল্লি আপাতত সতর্ক। সাউথ ব্লক চেষ্টা করছে যাতে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে সেদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা যায়।