সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এগজিট পোল থেকেই ইঙ্গিত মিলেছিল। সেই সম্ভাবনাই কাঁটায় কাঁটায় মিলে গেল বৃহস্পতিবার। পাঞ্জাবে (Punjab election 2022) কার্যত নিশ্চিহ্ন হয়ে গেল কংগ্রেস (Congress)। দিল্লির পর প্রতিবেশী রাজ্যেও ক্ষমতায় আম আদমি পার্টি তথা আপ। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি দীর্ঘদিন ধরেই দিল্লির বাইরে নিজের জন্য জমি তৈরির চেষ্টা করছিল। অবশেষে দলের সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়ালের (Arvind Kejriwal) সেই স্বপ্ন সত্যি হল। কিন্তু কীভাবে এল এই সাফল্য? কোন অঙ্কে কংগ্রেসকে নাস্তানাবুদ করে পাঞ্জাব জয় আপের (AAP)? রইল পাঁচটি কারণ।
১) দিল্লির ‘কেজরিওয়াল মডেল’-এর সাফল্য একটা বড় ফ্য়াক্টর হয়ে দাঁড়িয়েছিল এবারের পাঞ্জাব বিধানসভা নির্বাচনে। সেই যে প্রবাদ ‘ওপারেতে সর্বসুখ’, সেই মানসিকতাই যেন কাজ করেছে ভোটারদের মধ্যে। পাশের রাজ্যে আপের পরপর দু’বার ক্ষমতায় থাকা, কেজরিওয়ালের ক্যারিশমা- এই সব কারণে এবারের নির্বাচনে আপকেই বেছে নিতে চেয়েছেন পাঞ্জাবের ভোটাররা।
[আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদলালে টাকা বন্ধের হুমকি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর, পালটা দিল তৃণমূল]
২) কংগ্রেস, বিজেপি, অকালি দলের মতো ‘ট্র্যাডিশনাল দল’ নয়, বরং তথাকথিত একেবারেই নতুন দল আপকেই বেছে নিতে চেয়েছেন রাজ্যের ভোটাররা। এই মনোভাবের ফলেই অ্যাডভান্টেজ পেয়েছে আপ।
৩) নির্বাচনের ঠিক আগেই যেভাবে প্রকাশ্যে এসেছে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, তা থেকেই যেন পরিষ্কার হয়ে গিয়েছিল দলের পরিস্থিতি। সেসব দেখেশুনেই যেন জনতা আর ভরসা রাখতে পারল না হাতের উপরে। প্রথমে ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং, পরে চরণজিৎ সিং চান্নি- এঁদের সঙ্গে নভজ্যোৎ সিং সিধুর দ্বন্দ্ব চরমে উঠতে দেখা গিয়েছিল। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা ছিল, এর বিরাট প্রভাব পড়তে চলেছে ভোটে। শেষ পর্যন্ত তাই হল। অথচ ভোটের কয়েক মাস আগেও মনে হচ্ছিল, পাঞ্জাবে কিছুতেই হারবে না কংগ্রেস। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে এই দলীয় কোন্দল কার্যতই ‘আত্মহত্যা’।
[আরও পড়ুন: উঠে গেল মেডিক্যালের সর্বভারতীয় প্রবেশিকার বয়সের ঊর্ধ্বসীমা, জানাল মেডিক্যাল কমিশন]
৪) কেন্দ্রের বিতর্কিত তিন কৃষি আইনের বিরুদ্ধে শুরু হওয়া কৃষক আন্দোলনে সেভাবে আন্দোলনকারীদের পাশে থাকতে পারেনি কংগ্রেস। বরং দিল্লি সীমান্তে বিক্ষোভরত কৃষকদের পাশে ছিলেন আপ কর্মী-সমর্থকরা। এর ফলে ক্রমশই জনতার বিশ্বাসভাজন হয়ে উঠেছে আম আদমি পার্টি। আর একই ভাবে জনপ্রিয়তা হারিয়েছে কংগ্রেস।
৫) পাঞ্জাবের রাজনীতিতে জাতপাতের রাজনীতির কার্ড খেলে যে লাভ হবে না, সেটা বুঝে উঠতে পারেনি কংগ্রেস। ফলে তারা নানা ভাবে ভোটপ্রচারে এই সংক্রান্ত রাজনীতিরই প্রচার হয়েছে। এটাই ব্যুমেরাং হয়ে ফিরে এসেছে ভোটের ফলাফলে। এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ, খোদ চান্নি দু’টি কেন্দ্রে দাঁড়িয়েও হেরে গিয়েছেন। কাজে আসেনি দলিত কার্ড খেলা।