সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফের স্পষ্ট হল বিজেপির প্রতিশোধের রাজনীতি! গত সোমবার আরজেডি সুপ্রিমো লালুপ্রসাদ যাদবকে দশ ঘণ্টা ধরে জেরার পর মঙ্গলবারই ফের তাঁর পুত্র তেজস্বীকে (Tejashwi Yadav) জিজ্ঞাসাবাদ করল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। এদিন জমির বদলে চাকরি মামলার তদন্তের জেরায় পাটনায় ইডির দপ্তরে উপস্থিত হন বিহারের সদ্য প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী।
ইডির অভিযোগ, ২০০৪ থেকে ২০০৯ সালে ইউপিএ-১ সরকারের আমলে চাকরির বিনিময়ে বহু যুবকের থেকে জমি নেন লালু ও তঁার পরিবার। রেলের গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগ করা হয়েছিল তাদের। সেই সব জমি লালুর পরিবারের সদস্য এবং ‘একে ইনফোসিস্টেমস’ ও ‘এবি এক্সপোর্টস প্রাইভেট লিমিটেড’ সংস্থার নামে করে দেওয়া হয়। ইডি আধিকারিকদের দাবি, রেলে চাকরি পেতে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী রাবড়ি দেবী তথা লালুর স্ত্রীর গোয়ালের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা এক কর্মীকে প্রচুর জমি-সম্পত্তি দিয়েছিলেন এক তরুণ চাকরিপ্রার্থী। পরে ওই কর্মী সেই সব সম্পত্তি লালুর কন্যা হেমা যাদবের নামে করে দেন।
একে ইনফোসিস্টেমস ও এবি এক্সপোর্ট সংস্থার সঙ্গে লালুপত্নী রাবড়ি দেবী, দুই কন্যা মিশা এবং হেমা ও তেজস্বীদের সরাসরি যোগ রয়েছে বলে দাবি ইডির। অমিত কাটিয়াল নামে এক ব্যক্তিকে সামনে রেখে এই কোম্পানি দু’টির আড়ালেই সমস্ত বেআইনি লেনদেন করত লালু ও তাঁর পরিবার। গত বছর কাটিয়ালকে গ্রেপ্তার করে ইডি। বর্তমানে তিনি জেলবন্দি।
[আরও পড়ুন: বাজেট অধিবেশনেই CAA লাগুর পরিকল্পনা! কোন পথে হাঁটছে কেন্দ্র?]
এই মামলাতেই সোমবার ৭৫ বছরের আরজেডি সুপ্রিমো ও তাঁর বড় মেয়ে মিশা ভারতীকে জেরা করেন ইডি কর্তারা। জেরার ওই দীর্ঘ সময় ইডির দপ্তরের বাইরে জমায়েত করেছিল আরজেডির কর্মী-অনুগামীরা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের। লালুকে ইডির জেরার আগের দিনেই অর্থাৎ রবিবারই বিহারে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে তঁার দল আরজেডি।
মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার আরজেডি এবং কংগ্রেসের সঙ্গ ছেড়ে বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে নিয়েছেন। এর পরই ইডিকে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার লালু-তেজস্বীদের উপর চাপ বাড়াতে শুরু করেছে বলে দাবি বিরোধীদের। লোকসভা ভোটের আগে নরেন্দ্র মোদির সরকার ইডি-সহ কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে কাজে লাগাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের বাড়িতেও হানা দেয় ইডি। এর আগে চাকরির বদলে জমি মামলায় সিবিআই চার্জশিট দিয়েছিল লালু এবং তঁার পরিবারের কয়েক জনের নামে। সম্প্রতি চার্জশিট দিয়েছে ইডিও।