বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: আশঙ্কা সত্যি হল। প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখে অবশেষে বন্ধ ঘুরপথে যাতায়াতের রাস্তা। পরিণতিতে সড়কপথে দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সিকিম। শিলিগুড়ি-সিকিম যোগাযোগের 'লাইফ লাইন' ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ভূমিধসে অবরুদ্ধ গত ১২ দিন ধরে। এতদিন আলগাড়া-লাভা হয়ে ঘুরপথে সিকিমে যাতায়াত চলছিল। সেটাও বৃহস্পতিবার বন্ধ করে দেওয়া হল প্রশাসনের তরফে। ফলে সিকিম কার্যত সড়কপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
ভূমিধসে বিধ্বস্ত ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক (NH 10) কবে খুলবে কেউ জানে না। চলতি বছরের ২৩ মার্চ থেকে ১১ বার অবরুদ্ধ হয়েছে ওই জাতীয় সড়ক। শেষবার বারো দিন ধরে তা বন্ধ। ভূমিধস (Landslide) কি কোনও এক জায়গায়? সম্প্রতি কালিম্পংয়ের বিরিকডারা ও সেলফিডারার মধ্যে ভয়ংকর ধস নামে। রাস্তার একাংশ তিস্তার (Teesta)জলে ভেসে গিয়েছে। সেবক থেকে তিস্তাবাজার যাতায়াতের পথে বেশ কিছু এলাকায় জাতীয় সড়ক তিস্তার জলে তলিয়েছে। কালিম্পং জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মেল্লি বাজার, রবিঝোরা, লিকুভির, ২৭ মাইল, সেলফিডারা-সহ ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
[আরও পড়ুন: মাওবাদী নেতা অর্ণবের পিএইচডি ভর্তিতে জটিলতা! পাশে দাঁড়িয়ে উপাচার্যকে তোপ কুণালের]
তবে ভয়াবহ পরিস্থিতি কালীঝোরা থেকে মেল্লি পর্যন্ত ২৬ কিলোমিটার রাস্তার। এখানে রবিঝোরা, লিকুভির, ২৯ মাইল, গেইলখোলায় অবিরাম ধস নেমে চলেছে। ওই পরিস্থিতিতে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক কবে স্বাভাবিক হবে, বলতে পারছেন না কালিম্পং জেলা প্রশাসনের কর্তারা। তারা সেভক-লাভা-আলগাড়া হয়ে গ্যাংটক (Gangtok) যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। প্রায় ৭২ কিলোমিটার বেশি রাস্তা। ওই পথে গ্যাংটকে পৌঁছতে সময় লাগছিল কম করে দশ ঘণ্টা। অনেকে ১২ ঘণ্টাতেও পৌঁছেছেন। সেটাও সাময়িক ঝক্কি বলে মেনে নিয়েছিলেন অনেকে।
[আরও পড়ুন: লিগ ডার্বির শততম বর্ষে বিশেষ শ্রদ্ধা, প্রথম বড় ম্যাচের গোলদাতার পরিবারকে আমন্ত্রণ আইএফএ-র]
কিন্তু সম্প্রতি প্রবল বর্ষণে রাস্তা যেভাবে ভেঙে চুরমার হয়েছে, তাতে শঙ্কা ছিলই যে কোনও মূহুর্তে বিকল্প রুটও (Alternate Route) বন্ধ হতে পারে। বিশেষত মংপং, গরুবাথান, আলগাড়া এলাকার পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে উঠেছিল। অবশেষে বৃহস্পতিবার কালিম্পং জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সিকিম এবং কালিম্পং থেকে লাভা হয়ে শিলিগুড়ি (Siliguri) যাতায়াতের বিকল্প রাস্তাটি ভয়ংকরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় মেরামতের কাজের জন্য ১৪ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এই সময় ওই রুটে যানবাহন চলাচল করতে দেওয়া হবে না