সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতা, সল্টলেকের পড়ে ঝাড়গ্রাম। গণপিটুনিতে তিন-তিনটি তাজা প্রাণের মৃত্যু হয়েছে। হঠাৎ করেই রাজ্যজুড়ে হিংসা প্রবণতায় উদ্বিগ্ন পুলিশ প্রশাসন। অন্যদিকে গোটা দেশে সোমবার লাগু হয়েছে ন্যায় সংহিতা। চালু হয়েছে তিনটি নতুন ফৌজদারি আইন। ভারতীয় দণ্ডবিধিতে গণপ্রহার নিয়ে এত দিন আলাদা কোনও বিধান ছিল না। তবে নয়া ভারতীয় ন্যায় সংহিতাতে গণপ্রহারের ধারা যুক্ত করা হয়েছে। এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) জানান, এই প্রথম গণপ্রহার নিয়ে কড়া আইন এনেছে সরকার। কিন্তু কোন শাস্তি হবে অপরাধীর?
গণপ্রহার এক সামাজিক ব্যাধি। গোটা দেশেই গণপ্রহার বা পিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা সমানে আসে। সাম্প্রতিককালে বাংলায় একের পর এক গণপ্রহারের ঘটনা প্রকাশ্যে আসছে। কলকাতা, সল্টলেকের পড়ে ঝাড়গ্রামে গণপ্রহারে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যদিও ভিড়ের হিংসা অনেক ক্ষেত্রেই ছাড় পেয়ে যায়, সব সময় অপরাধীদের শাস্তি হয় না বলে অভিযোগ। তাছাড়া গণপ্রহারের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট আইনও ছিল না। এত দিন গণপ্রহারের জেরে মৃত্যু হলে খুন বা খুনের চেষ্টার ধারায় মামলা রুজু করত পুলিশ। তবে নতুন আইনে গণপ্রহারকে আলাদা ধারায় চিহ্নিত করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে দোষ প্রমাণিত হলে কী শাস্তি হবে?
[আরও পড়ুন: বুরারি কাণ্ডের ছায়া মধ্যপ্রদেশে, বাড়ি থেকে উদ্ধার তিন শিশু-সহ পরিবারের ৫ জনের দেহ]
গণপ্রহারের অপরাধে এবার মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে, সাংবাদিক সম্মেলনে জানান কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তিনি বলেন, আইনে গণপ্রহার নিয়ে কোনও বিধান ছিল না। তবে নতুন আইনে গণপ্রহারকে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, ‘‘নতুন আইনে সাজার থেকে সাধারণ মানুষ যাতে ন্যায় পান— সেটাই দেখা হয়েছে।’’
[আরও পড়ুন: ইজরায়েলের সেনাঘাঁটিতে ড্রোন হামলা হেজবোল্লার, আহত ১৮ জওয়ান]
প্রসঙ্গত, দেশে অপরাধ দমনে ঔপনিবেশিক আইন বদলে নতুন আইন কার্যকরের এই যাত্রা বহু আগেই শুরু করেছিল মোদি সরকার। গত বাদল অধিবেশনে ভারতীয় দণ্ডবিধির (IPC) বদলে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (Bharatiya Nyaya Sanhita), কোড অফ ক্রিমিনাল প্রসিডিওর (CrPC) আইনের পরিবর্তে ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (BNSS) এবং ভারতীয় সাক্ষ্য আইন বা IEC-এর জায়গায় ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম (BSA) – এই তিন বিকল্প আইনে প্রস্তাব পেশ হয় সংসদে। পরবর্তী শীতকালীন অধিবেশনে বিরোধীদের আপত্তি উড়িয়ে নয়া তিন আইন পাশ হয়ে যায়। অর্থাৎ চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনের আগেই স্পষ্ট হয়ে যায়, অপরাধ দমনে ব্রিটিশ আমলের আইনগুলির বিসর্জন ঘটতে চলেছে। ১ জুলাই থেকে নয়া নিয়ম কার্যকর হবে বলে ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার।