সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত দেড় বছর ধরে হিংসার আগুনে ধিকি ধিকি জ্বলছে উত্তর-পূর্ব। এরই মাঝে মিলল বড় নাশকতার ইঙ্গিত! অসম রাইফেলস ও মিজোরাম পুলিশের যৌথ অভিযানে ভারত-মায়ানমার সীমান্ত থেকে উদ্ধার হল ৩৯,৯০০ ডিটোনেটর। যুদ্ধ চালানোর মতো এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার হওয়ার পর সতর্ক হয়ে উঠেছে প্রশাসন।
পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, গোপন খবরের ভিত্তিতে মায়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকায় অভিযানে নামে যৌথবাহিনী। সেই সময় নির্দিষ্ট একটি মোটর বাইকে করে এই বিপুল পাচারের উদ্দেশে নিয়ে যাচ্ছিল দুষ্কৃতীরা। নিরাপত্তাবাহিনী সেই বাইক থামানোর চেষ্টা করলে চালক বাইক ছেড়ে নদী পার হয়ে পালিয়ে যায়। অভিযুক্তকে ধরার চেষ্টা হলেও তার নাগাল পাওয়া যায়নি। গাড়িতে তল্লাশি চালিয়েই উদ্ধার হয় ৩৯,৯০০ ডিটোনেটর। উদ্ধার হওয়া ওই ডিটোনেটর মিজোরাম পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। বিপুল পরিমাণ এই বিস্ফোরক উদ্ধারের পর প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীদের ধারণা, মণিপুরকে আরও অশান্ত করতে এই বিস্ফোরক পাচার করা হয়ে থাকতে পারে।
গত দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে উত্তপ্ত উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুর। সেনা নামিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়া গেলেও, সেখানকার বহু জায়গায় দফায় দফায় উঠে এসেছে হিংসার ছবি। সম্প্রতি মণিপুরের চুড়াচাঁদপুর, থৌবাল এবং কাকচিং জেলায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র উদ্ধার করে সেনাবাহিনী, অসম রাইফেলস ও পুলিশের যৌথবাহিনী। উদ্ধার হওয়া অস্ত্রের তালিকায় ছিল মর্টার, অত্যাধুনিক রাইফেল, গ্রেনেডের মতো আরও নানান অস্ত্র। মিজোরামে উদ্ধার হওয়া এই বিস্ফোরকও মণিপুরের উদ্দেশে আনা হচ্ছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের মে মাসে মেইতেই ও কুকি জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে উত্তাল হয়েছিল মণিপুর। ঘটনার জেরে মৃত্যু হয় ২০০’র বেশি মানুষের। পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনা নামানোর পাশাপাশি গোটা রাজ্যে লাগু করা হয়েছিল আফস্পা। তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর চলতি অক্টোবর মাসে পুনরায় সেই মেয়াদ বাড়ানো হয়। এদিকে গত কয়েক মাসে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়েছে মণিপুরের একাধিক এলাকা। গত ৬ সেপ্টেম্বর বিষ্ণুপুর জেলায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেরেম্বাম কোইরেংয়ের বাড়িতে রকেট হামলা চালানো হয়।