গৌতম ব্রহ্ম, গোয়া: এই বাংলাই দেশ তথা বিশ্বকে আয়ুর্বেদের (Ayurveda) আলো দেখিয়েছে। কখনও নতুন ঘরানা তৈরি করে, কখনও আবার আয়ুর্বেদের মেডিক্যাল কলেজ (Ayurveda Medical Collage) গড়ে। যামিনিভুষণ রায়, শাম্যাদাস বাচস্পতি, মাধব কর, চক্রপানি দত্ত, গঙ্গাধর রায়ের মতো বৈদ্য একটা সময় হয়ে উঠেছেন বৈদিক চিকিৎসার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) সেই ঘরানার আলোতেই বিজ্ঞানের পথ ধরে বাংলায় আয়ুর্বেদের হৃত গৌরব ফেরানোর চেষ্টা শুরু করেছেন।
একদিকে পুরনো কলেজ গুলোর মানোন্নয়ন করে নতুন আয়ুর্বেদ মেডিক্যাল কলেজ তৈরির চেষ্টা, অন্যদিকে বেলুরে গড়েছেন পূর্ব ভারতের প্রথম যোগ -নেচারোপ্যাথি কলেজ (Naturopathy College) । গোয়ায় (Goa) আয়োজিত নবম ওয়ার্ল্ড আয়ুর্বেদ কংগ্রেস (9th World Ayurveda Congress) বঙ্গ আয়ুর্বেদের এই জয়যাত্রার গল্প শুনবে। কখনও সেই গল্প বলবেন বাংলা থেকে আসা প্রতিনিধিদল। কখনও ভিনরাজ্যের চিকিৎসকদল। শুনবে গোটা বিশ্ব। কারণ এই আয়ুর্বেদের এই মহাকুম্ভে যোগ দিচ্ছেন বিশ্বের ৫৩ টি দেশের ৪০০ প্রতিনিধি, দেশের ৫০০০ প্রতিনিধি।
[আরও পড়ুন: তাড়াহুড়ো করে ট্রেন থেকে নামতে গিয়ে বিপত্তি, রেললাইনে আটকে গেলেন তরুণী, তারপর…]
বৃহস্পতিবার গোয়ার পানাজিতে শুরু হল এই মহা সম্মেলন। আয়ুর্বেদের মহাযজ্ঞের উদ্বোধন করলেন গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত। যোগ দিচ্ছে বাংলাও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বাংলার একটি প্রতিনিধি দল গোয়ায় আন্তর্জাতিক আয়ুর্বেদের উৎসবে যোগ দিচ্ছেন। ইতিমধ্যে রাজ্যের প্রতিনিধি হিসাবে সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ডাঃ তুষার মন্ডল, ডাঃ সুমিত সুর। নবান্ন সূত্রে খবর ছিল, রাজ্যের আয়ুর্বেদ অধিকর্তা ডা. দেবাশীষ ঘোষ, স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় আয়ুর্বেদ বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক প্রদ্যোৎবিকাশ কর মহাপাত্র এবং রাজ্য যোগ ও নেচারোপ্যথি কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডা তুষার শীল গোয়ায় থাকবেন।
[আরও পড়ুন: স্থিতাবস্থায় বদল বরদাস্ত করা হবে না, চিনকে কড়া বার্তা জয়শংকরের]
দেবাশীষ বাবু জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যে একাধিক আয়ুষ প্রকল্প চলছে। ৫৪০ টি আয়ুস সুস্বাস্থ্য কেন্দ্র তৈরীর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যার মধ্যে ২৭০ টি ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছে । প্রায় একডজন আয়ুশ গ্রাম চালু হয়েছে। যেখানে যোগ আয়ুর্বেদ এবং প্রাকৃতিক চিকিৎসাকে কাজে লাগিয়ে ভালো থাকার পদ্ধতি শেখানো হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে আশা কর্মীদেরও । তারাও বাড়ি বাড়ি ঘুরে আয়ুশ গাইডলাইন মেনে ভাল থাকার পরামর্শ দিচ্ছন।
সব থেকে বড় কথা, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই এই রাজ্যে প্রথম দেশের মধ্যে যোগ ও নেচারপ্যথি কাউন্সিল তৈরি করা হয়। বেলুড়ে সেই কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে পূর্ব ভারতের প্রথম যোগ ন্যাচারোপ্যথি মেডিকেল কলেজ তৈরি হয়েছে। রাজ্য সরকারের এই সাফল্যের কথাই বলবেন বাংলার প্রতিনিধিরা। তুষারবাবু জানালেন যোগ, প্রাকৃতিক চিকিৎসা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর অনেক স্বপ্ন রয়েছে । যার অনেকটাই পূরণ হয়েছে চলতি শিক্ষা বর্ষ থেকেই বেলুড়ের যোগ মেডিকেল কলেজে ছাত্র ভর্তি শুরু হবে । আমরা মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগের কথাই বলার চেষ্টা করব সম্মেলনে।