সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিধানসভায় পাশ হয়ে যাওয়া ১০টি বিল রাজভবনে আটকে রাখায় এবার সুপ্রিম কোর্টের তোপের মুখে তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আর এন রবি। রাজ্যপালের এহেন কর্মকান্ডকে 'অবৈধ' ও 'স্বেচ্ছাচারী' পদক্ষেপ বলে তোপ দাগল দেশের শীর্ষ আদালত। শুধু তাই নয়, কড়া সুরে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, রাজভবনে এভাবে বিল আটকে রাখতে পারবেন না রাজ্যপাল। সব মিলিয়ে তামিলনাড়ুতে চলতে থাকা রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাতে শীর্ষ আদালতে মুখ পুড়ল রবির।

অবিজেপি রাজ্যগুলিতে রাজ্যপাল ও সরকারের সংঘাত নতুন কিছু নয়। এর আগে জগদীপ ধনকড় বাংলার রাজ্যপাল থাকাকালীন একের পর এক বিল আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছিল রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। তামিলনাড়ুতে ঠিক একই নীতি নেন রাজ্যপাল আর এন রবি। অভিযোগ, বিধানসভায় পাশ হওয়ার পর ১০টি বিল সাক্ষর না করে আটকে রাখেন রাজ্যপাল। এই তালিকায় ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত বিলও। রাজ্যপালের এই অসহযোগীতার বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয় তামিলনাড়ু সরকার। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানিতে বিচারপতি জেবি পাদ্রিওয়াল ও বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, পাশ হয়ে যাওয়া বিল এভাবে ফেলে রাখতে পারেন না রাজ্যপাল।
এই মামলার শুনানিতে সংবিধানের ২০০ অনুচ্ছেদের কথা স্মরণ করিয়ে শীর্ষ আদালত জানায়, 'রাজ্যপাল মন্ত্রিসভার সহায়তা ও পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে বাধ্য।' আদালত আরও বলে, 'রাজ্যপালকে রাজ্যসরকারের সঙ্গে বন্ধুর মতো সহযোগিতা ও পথ প্রদর্শক হতে হবে। রাজনৈতিক মতাদর্শ সরিয়ে রেখে সাংবিধানিক শপথ দ্বারা পরিচালিত হতে হবে। বাধা দেওয়া নয়, রাজ্যপাল হবেন রাজ্যসরকারের অনুঘটক।' আদালতের মতে, বিধানসভায় পাশ ও পুনর্বিবেচনার পর বিলগুলি যখন রাজ্যপালের কাছে আসে সেখানে সাক্ষর না করে ১০টি বিল রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের জন্য আটকে রাখা শুধু অবৈধ নয়, স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপ।
আদালত জানিয়েছে, ওই ১০টি বিল পুনর্বিবেচনার পর রাজ্যপালের কাছে পাঠানোর তারিখ থেকে চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে। বিল সাক্ষরের জন্য যেহেতু নির্দিষ্ট সময়সীমা নেই সেহেতু যুক্তিসঙ্গত সময়সীমার মধ্যে তা সাক্ষর করা উচিত। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়ার পূর্ণ ক্ষমতা আদালতের রয়েছে। আদালত জানিয়েছে, বিল আসার পর রাজ্যপালদের যদি মনে হয় সেটি রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠানোর প্রয়োজন, সেক্ষেত্রে একমাসের মধ্যে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত। যদি বিলে সম্মতি না দেওয়ার হয়, সেক্ষেত্রে তিন মাসের মধ্যে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজ্যপালকে। এভাবে অনন্ত কালের জন্য কোনও বিল ফেলে রাখা যায় না বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।