সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত ১৫ আগস্ট বিলকিস বানো (Bilkis Bano) গণধর্ষণের দোষীদের মুক্তি দিয়েছে গুজরাট (Gujarat) সরকার। এরপর থেকেই দোষীদের মুক্তি দেওয়া নিয়ে সরব হয়েছে দেশের নানা অংশের মানুষ। নানা ক্ষেত্রের আধিকারিকরা শীর্ষ আদালতে চিঠি লিখে দোষীদের মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছেন। এবার সামনে এল নতুন তথ্য। জানা গেল, ১১ জন দোষীর মধ্যে অন্তত ১০ জন ১ হাজার দিনেরও বেশি সময় প্যারোলে মুক্ত ছিলেন! শুধু তাই নয়, ধর্ষকদের একজন মিতেশ চিমনলাল ভট প্যারোলে মুক্ত থাকার সময় তার বিরুদ্ধে আরেকটি শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল। আদালতের এক নথি থেকে এমনটাই জানা গিয়েছে।
বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়ার রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা করা হয়েছিল শীর্ষ আদালতে। আর তারপরই গুজরাট সরকার এক হলফনামা পেশ করেছে সোমবার। সেই হলফনামায় জানানো হয়েছে, ‘ভাল আচরণে’র জন্যই ওই ১১ অপরাধীকে ছাড়ার আরজি জানিয়েছিল তারা। সিবিআই ও বিশেষ আদালতের আপত্তি সত্বেও মাত্র দু’সপ্তাহের মধ্যে সেই আরজি মঞ্জুর করে দেয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
[আরও পড়ুন: ‘আমাদের কোনও ক্ষমতাই নেই’, ভারতে এসে আক্ষেপ রাষ্ট্রসংঘ প্রধানের]
জেলের নথি থেকে জানা গিয়েছে, যে ধর্ষকের বিরুদ্ধে প্যারোলে মুক্ত হয়ে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল, সেই ধর্ষককে এরপরও ২৮১ দিন জেলের বাইরে খোলা আকাশের নিচে থাকার অনুমতি দিয়েছিল আদালত। শুধু তাই নয়, জেলের উপদেষ্টা কমিটি তাদের রিপোর্টে ওই অপরাধীর আচরণ ‘ভাল’ বলে মন্তব্য করেছিল।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালে সাবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই ব্যাপক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয় গোটা গুজরাট জুড়ে। সেই সময়েই ২১ বছর বয়সি তরুণী বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ (Gangrape) করা হয়। ঘটনার সময়ে গর্ভবতী ছিলেন বিলকিস। দাঙ্গার ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময়েই তাঁকে গণধর্ষণ করা হয়। শুধু তাই নয়, তাঁর তিন সন্তানকেও খুন করা হয়। ২০০৮ সালে এগারোজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয় মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত। তাদের মধ্যে ছিলেন দু’জন চিকিৎসক, যারা প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করেছিল। একই অপরাধে কয়েকজন পুলিশকর্মীকেও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু মেয়াদ ফুরনোর আগেই তাদের মুক্তি দেওয়ার পরে বিতর্ক তুঙ্গে।