shono
Advertisement
TMC over brawl

কল্যাণ-মহুয়া-কীর্তির বাদানুবাদ! চ্যাটের স্ক্রিনশট ভাইরাল করে খোঁচা বিজেপির

তৃণমূল সাংসদদের এই বাদানুবাদকে প্রকাশ্যে এনে বাংলার রাজনীতির ময়দানে বিজেপি কতটা ফায়দা তুলতে পারবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
Published By: Paramita PaulPosted: 03:23 PM Apr 08, 2025Updated: 04:52 PM Apr 08, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তৃণমূলের সাংসদদের বাকবিতণ্ডা এবার প্রকাশ্যে। কথা কাটাকাটিতে জড়িয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্র, কীর্তি আজাদ এবং সৌগত রায়রা। আর এই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নামল বিজেপি। হোয়াটসঅ্যাপে তৃণমূল সাংসদদের বাকযুদ্ধের স্ক্রিনশট ভাইরাল করে খোঁচা দিয়েছেন গেরুয়া শিবিরের আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। যদিও তৃণমূল সাংসদদের এই বাদানুবাদকে প্রকাশ্যে এনে বাংলার রাজনীতির ময়দানে বিজেপি কতটা ফায়দা তুলতে পারবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Advertisement

গত শুক্রবার ‘ভূতুড়ে’ ভোটার ইস্যুতে নির্বাচন কমিশনে যাওয়া নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। সূত্রের খবর, ওইদিন কমিশনে যে স্মারকলিপি জমা করা হয়েছিল প্রথমে সেখানে মহুয়ার নাম ছিল না। অথচ কমিশনে যাওয়া প্রতিনিধি দলে তাঁকে থাকতে বলা হয়। বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। সেই সময় পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য স্মারকলিপিতে মহুয়ার নাম হাতে লিখে দেওয়া হয়। যখন এই প্রক্রিয়া চলছে ঠিক তখনই প্রবীণ সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর মহিলা সতীর্থ মহুয়াকে কটাক্ষ করতে শুরু করেন বলে অভিযোগ। লাগাতার কটাক্ষ-কটূক্তি চলতে থাকায় কমিশনের সামনে ফুটপাথে পাহারায় থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের কল্যাণকে গ্রেপ্তার করতে বলেন। মহুয়ার এমন আচরণে খানিকটা হতবাক হয়ে যায় উপস্থিত বাকিরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে তাঁরা ওই প্রবীণ সাংসদকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে কমিশনের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সেখানে গিয়েও থামেননি। বরং ক্রমাগত বলতে থাকেন, তিনি কোটায় সাংসদ হননি। অন্য দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেননি। এমন পরিস্থিতিতে মহিলার সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলে কল্যাণের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লির পার্লামেন্ট স্ট্রিট থানায় এফআইআর করতেও উদ্যত হয়েছিলেন মহুয়া। কোনওমতে বুঝিয়ে সুঝিয়ে তাঁকে শান্ত করেন বাকিরা।

 

এরপরই বিষয়টি নিয়ে দলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বাকযুদ্ধ শুরু হয়। অভিযোগ, বিভিন্নভাবে মহুয়াকে আক্রমণ করতে শুরু করেন কল্যাণ। কখনও বলেন, অপ্রয়োজনীয় নাটক করছেন, কখনও আবার মহুয়াকে ‘ভার্সেটাইল ইন্টারন্যাশনাল লেডি’, ‘ ইন্টারন্যাশনাল ব্রেভ লেডি’ বলে কটাক্ষ করতে থাকেন। এমন অবস্থায় কৃষ্ণনগরের সাংসদের পাশে দাঁড়ান আরেক নতুন সাংসদ কীর্তি আজাদ। হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বাদানুবাদ চলাকালীন কল্যাণকে তাঁর দায়িত্ব মনে করিয়ে দেন দুর্গাপুরের সাংসদ। কারণ, শ্রীরামপুরের সাংসদকে সবাইকে নিয়ে চলার পরামর্শ দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই দায়িত্ব পালনে নজর দেওয়ারও পরামর্শ দেন কীর্তি। এতেই আরও তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন প্রবীণ নেতা। বলেন, দলবাজি করার অভিযোগেই পুরনো দল বিজেপি থেকে কীর্তিকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। দিল্লির ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের ভোটে তাঁর হার নিয়েও খোঁচা দেন কল্যাণ। দুর্গাপুরে গিয়ে কীর্তির মুখোশ খুলে দেওয়ার হুমকি দেন। এদিকে, মহিলা সাংসদ কেন পুলিশ ডেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করাতে পারলেন না, তা নিয়েও খোঁচা দিতে থাকেন কল্যাণ। এমন অবস্থায় গ্রুপ ছেড়ে বেরিয়ে যান মহুয়া। এরপরই বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জানিয়ে দলীয় নেত্রীকে চিঠি দেন।

 

তৃণমূলের অন্দরের এই লড়াই নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বিজেপির অমিত মালব্য। এক্স হ্যান্ডেলে দিল্লির রাস্তার তৃণমূল সাংসদদের বাদানুবাদের ভিডিও পোস্ট করেছেন তিনি। পুরো ঘটনার বর্ণনা দেওয়ার পাশাপাশি হোয়াটসঅ্যাপে বাদানুবাদের স্ক্রিনশটও পোস্ট করেছেন। সঙ্গে লিখেছেন, এই ‘ভার্সেটাইল ইন্টারন্যাশনাল লেডি’ কে, তা ঠিক স্পষ্ট হল না। পাশাপাশি তৃণমূলের সংসদীয় দলের চ্যাটের স্ক্রিনশট কে প্রকাশ্যে আনল তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। সবমিলিয়ে তৃণমূলের অন্দরের কোন্দলের মাঝে ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে বিজেপি।

 

রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, বঙ্গ বিজেপির অন্দরেও হাজারো শিবির। দলাদলি। কখনও সুকান্ত মজুমদার বনাম দিলীপ ঘোষ, কখনও আবার দিলীপ ঘোষ বনাম শুভেন্দু অধিকারী তো কখনও আবার সুকান্ত বনাম শুভেন্দু। বারবার এই কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে। বারবার তাঁদের দিল্লিতে তলব করেও কোনও লাভ হয়নি। যার প্রভাব পড়ছে ভোটবাক্সেও। এমন অবস্থায় তৃণমূলের সাংসদদের কোন্দল প্রকাশ্যে এনে বিজেপি কী লাভ পাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • তৃণমূলের সাংসদদের বাকবিতণ্ডা এবার প্রকাশ্যে।
  • কথা কাটাকাটিতে জড়িয়েছেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্র, কীর্তি আজাদ এবং সৌগত রায়রা।
  • আর এই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নামল বিজেপি।
Advertisement