সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোমবার লোকসভায় পাশ হয়ে গেল অপরাধী শনাক্তকরণ বিল (২০২২)। যদিও বিলটি নিয়ে আপত্তি ছিল একাধিক রাজনৈতিক দলের। এদিন লোকসভায় ওই বিল পাশের আগে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) আশ্বাস দেন, বিরোধীদের আপত্তির বিষয়গুলি সংশোধন করা হবে। এইসঙ্গে মন্তব্য করেন, “পুরনো কৌশলে পরবর্তী প্রজন্মের অপরাধ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। আমাদের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে পরবর্তী যুগে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে হবে।”
গত ২৮ মার্চ লোকসভায় বর্তমান বিলটি (Criminal Procedure Identification Bill) পেশ করে কেন্দ্র। নয়া বিলে বলা হয়েছে, এবার থেকে অভিযুক্তের হাত ও পায়ের ছাপের সঙ্গেই ওই ব্যক্তির চোখের মণি, রেটিনার স্ক্যান এবং ডিএনএ -র (DNA) নমুনাও সংগ্রহ করতে পারবে পুলিশ। এমনকী প্রয়োজনে ধৃত ব্যক্তির নার্কো পরীক্ষা ও ব্রেন ম্যাপিং-ও করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে পুলিশকে। ওই দিনেই বিলটি নিয়ে আপত্তি তুলে একযোগে সরব হয় বিরোধীরা। তাঁদের বক্তব্য, এই বিল ব্যক্তি স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবে।
[আরও পড়ুন: কয়লা পাচার কাণ্ডে ইডি তলব নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা অভিষেক-রুজিরার, আগামী সপ্তাহে শুনানি]
যদিও পরে শাসক শিবিরের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়, অভিযুক্তের সম্মতি ছাড়া তার ব্রেন ম্যাপিং বা নার্কো পরীক্ষা করা হবে না। এছাড়াও যে সব অপরাধী সাত বছরের কম সাজাপ্রাপ্ত, তারা চাইলে চোখের মণি, রেটিনার স্ক্যান বা ডিএনএ নমুনা না-ও দিতে পারেন। যদিও সোমবার বিল নিয়ে আলোচনার সময় ফের আপত্তির প্রসঙ্গ তোলেন কংগ্রেস সাংসদ মণীশ তিওয়ারি (Manish Tewari)। তিনি বলেন, বিলটি ‘নাগরিক স্বাধীনতা বিরোধী’। একই বিষয়ে সরব হন বিএসপি-র দানিশ আলি। তিনি বলেন, ”এই বিল ভারতকে একটি পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারে। রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করা হতে পারে।”
উল্লেখ্য, ব্রিটিশদের তৈরি করা ১০২ বছর আগের যে বিলে সংশোধন আনা হয়েছে, সেখানে অভিযুক্তের ছবি এবং হাত ও পায়ের ছাপ নেওয়ার অধিকার কেবল ছিল সাব-ইন্সেপেক্টর পদমর্যদার পুলিশ আধিকারিকের। মোদি সরকারের নতুন বিলে হেড কনস্টেবল বা জেলের হেড ওয়ার্ডার এই নমুনা সংগ্রহের অধিকার পাচ্ছেন। এই বিষয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “এক জন নন-গেজেটেড অফিসারকে দিয়ে ওই কাজ করানো কতটা যুক্তিযুক্ত?”
[আরও পড়ুন: বিশেষ কিছু রেস্তরাঁকে সুবিধা পাইয়ে দিচ্ছে , তদন্তের মুখে সুইগি এবং জোম্যাটো]
যদিও বিরোধীদের বিল সংশোধনের আশ্বাস দিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তথাপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি দাবি করেছে, বিলটিকে পার্লামেন্টারি স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠানো হোক।