সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নিয়মের বেড়াজালে কি হারিয়ে যাচ্ছে বাস্তববুদ্ধি? রেশন না পেয়ে অনাহারে এক মহিলার মৃত্যুতে কিন্তু এই প্রশ্নটা উঠেই যাচ্ছে। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের। বরেলিতে এক মহিলা অসুস্থ হওয়ায় স্থানীয় রেশনের দোকানে যেতে পারেননি। তাঁর স্বামী রেশন আনতে যান। কিন্তু রেশন দোকানদার সাফ জানিয়ে দেয়, ওই মহিলার আঙুলের ছাপ ছাড়া মিলবে না রেশন। কারণ, আধার নির্ভর বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে রেশন তুলতে সশরীরে আসতেই হবে তাঁকে। তাঁর স্বামী বারবার আকুতি জানান, যে ওই মহিলা অসুস্থ। খেতে না পেয়ে খুবই দুর্বল হয়ে পড়েছেন।
কিন্তু কে শোনে কার কথা? মোদি সরকারের নয়া নিয়ম অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলতে গিয়েছিলেন ওই দোকানদার। যদিও কেন্দ্র সম্প্রতি আদালতের কাছে ধমক খেয়ে জানিয়েছে, খাদ্যের অভাবে কারও যেন মৃত্যু না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। কিন্তু নির্দেশই সার! বাস্তবে ছবিটা যে ঢের আলাদা, সেটা এদিনের ঘটনাই চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ফের একবার। উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদব এই ঘটনা নিয়ে টুইটারে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘অনাহারে মৃত্যু যে কোনও সভ্য দেশ বা গণতন্ত্রের কাছে লজ্জা। কেউ যদি অসুস্থ হন, রেশনের দোকানে যেতে না পারেন তাহলে তাঁকে মরতে হবে? কোনও বিকল্প ব্যবস্থা থাকবে না? নিয়ম কি মানুষের প্রাণের চেয়েও বেশি দামি?’
স্থানীয় এসডিএম রাম অক্ষয় ঘটনার কথা কার্যত স্বীকার করে জানিয়েছেন, এই ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত হবে। ওই পরিবার যে অত্যন্ত গরিব, সে কথা স্বীকার করে তিনি বলেছেন, ‘আক্রান্তের কাছে অন্ত্যদয়া কার্ড ছিল বলেই জানি।’ এদিনের ঘটনা ফের একবার মনে করিয়ে দিচ্ছে কয়েকদিন আগেই ঝাড়খণ্ডে ১১ বছরের এক কিশোরীর মৃত্যুর কথা। আধার নম্বর না থাকায় তার পরিবার রেশন পায়নি। ‘ভাত’ ‘ভাত’ বলে কাঁদতে কাঁদতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে সন্তোষী, জানান তার মা। যদিও প্রশাসনের যুক্তি, অনাহারে নয়, ম্যালেরিয়াতে মৃত্যু হয়েছে সন্তোষীর।
[আধার নেই তাই মিলল না রেশন, অনাহারে মৃত্যু নাবালিকার]
The post আধারের গেরোয় মিলল না রেশন, অনাহারে মহিলার মৃত্যুতে নিন্দার ঝড় appeared first on Sangbad Pratidin.