সোমনাখ রায়, নয়াদিল্লি: সাধারণতন্ত্র দিবসের প্রাক্কালে ঘোষিত হল পদ্ম সম্মান (Padma Award) প্রাপকদের নামের তালিকা। এ বছর মরণোত্তর পদ্মবিভূষণ সম্মানে সম্মানিত হলেন ওআরএসের জনক দিলীপ মহলানবীশ। পদ্ম পুরস্কার প্রাপকের তালিকায় রয়েছেন বাংলার আরও ৩। তবে এবারও পদ্ম সম্মানের তালিকায় নাম নেই টলিউডের মহাগুরু মিঠুন চক্রবর্তীর। মনে করা হয়েছিল, এবারের পদ্ম সম্মান প্রাপকদের তালিকায় তাঁর নাম থাকবে। কিন্তু এবারও তা হল না।
এবার নিউ জলপাইগুড়ির জেলার মুকুটে জোড়া পালক। কারণ পদ্মশ্রী প্রাপকদের দুজন উত্তরবঙ্গের নিউ জলপাইগুড়ির বাসিন্দা। প্রথমজন হলেন ধনিরাম টোটো। টোটো ভাষার সংরক্ষণ ও অগ্রগতির প্রতি অবদানের জন্য এই সম্মান পেতে চলেছেন তিনি। দ্বিতীয় জন হলেন মঙ্গলাকান্তি রায়। শতায়ু এই পল্লিগীতি শিল্পীকে সম্মান জানাল কেন্দ্র। পদ্ম সম্মানে সম্মানিত হয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রীতিকণা গোস্বামী। সূঁচ-সুতো হাতে জাদু ছড়িয়েছেন এই শিল্পী। সূঁচ-সুতোও যে পায়ের তলার মাটি শক্ত করতে পারে তা প্রমাণ করে দিয়েছেন প্রীতিকণাদেবী। আর তাঁর হার না মানা লড়াইকে স্বীকৃতি দিল কেন্দ্র। এবার পদ্মশ্রী পাচ্ছেন আরও এক বাঙালি- রতনচন্দ্র করও। আন্দামান নিকোবরের জাড়োয়া আদিবাসীদের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন এই বাঙালি চিকিৎসক।
[আরও পড়ুন: সংসদীয় রাজনীতি থেকে অবসর ত্রিপুরার মানিক সরকারের, লড়বেন না বিধানসভা নির্বাচনে]
আটের দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে নয়ের দশকের গোড়া পর্যন্ত বিশ্ব সংস্থার ডায়রিয়া সংক্রান্ত কর্মসূচির মেডিক্যাল অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন দিলীপ মহলানবীশ। সেই সঙ্গে আইসিডিডিআর বাংলাদেশের অধিকর্তাও ছিলেন। ১৯৯৪ সালে রয়্যাল সুইডিশ অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেসের বিদেশি সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন দিলীপ। ২০০২ সালে পান পলিন পুরস্কার। পরে ২০০৬ সালে পান প্রিন্স মাহিডল অ্যাওয়ার্ড। শেষের কয়েক বছর আর রোগী দেখতেন না। ক্রমশ ভাঙছিল শরীর। গত অক্টোবরে চলে গেলেন তিনি। কিন্তু রয়ে গিয়েছে তাঁর আবিষ্কার। সেই কালজয়ী কাজের জন্য এবার পদ্মবিভূষণ সম্মানে সম্মানিত হলেন তিনি।
অবলুপ্তির পথে টোটো ভাষা। ইউনেস্কোর অবলুপ্তপ্রায়ের তালিকায় নাম রয়েছে এর। জনজাতির সেই ভাষাকে সংরক্ষণ করতে ও বর্ণমালা তৈরি করেছেন ধনিরাম টোটো। তাঁর কোনও প্রথাগত প্রশিক্ষণ ছিল না। তারপরেও ৩৭ বর্ণ সম্মিলিত এই বর্ণমালা তৈরি করেছেন তিনি। এমনকী, টোটো ভাষায় লিখে ফেলেছেন গোটা বইও।
[আরও পড়ুন: অর্থনেতিক ও সামাজিক দিক থেকে বিশ্বের প্রথম সারিতে ভারত, মোদির দাবিকে মান্যতা রাষ্ট্রপতির]
জলপাইগুড়ি জেলার আরেক ভূমিপুত্র মঙ্গলাকান্তি রায়কেও পদ্মশ্রী সম্মানে সম্মানিত করেছে কেন্দ্র। বিশেষ বাদ্যযন্ত্র সারিন্ডার মাধ্যমে পাখিদের সুর তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন ১০২ বছর বয়সি পল্লিগীতি শিল্পী। সারিন্দা বাদ্যযন্ত্রকে সংরক্ষণ করতে গত ৮ দশক ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন।