সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অসমের রাজনীতিতে মহীরূহের পতন। প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান কংগ্রেস (Congress) নেতা তরুণ গগৈ। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর। বেশ কিছুদিন ধরেই করোনা পরবর্তী বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যাচ্ছিল তাঁর শরীরে। বিগত কয়েকদিন গুয়াহাটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে ছিলেন বর্ষীয়ান নেতা। সোমবার বিকেলে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে রাজনৈতিক মহলে।
আদ্যোপান্ত কংগ্রেসি মতাদর্শে বিশ্বাসী তরুণ গগৈ (Tarun Gogoi) পাঁচ দশকেরও বেশি সময় দাপটের সঙ্গে রাজনীতি করেছেন। পাঁচবারের সাংসদ, চারবারের বিধায়ক এবং রেকর্ড ১৫ বছর অসমের মুখ্যমন্ত্রী থাকাটা চাট্টিখানি কথা নয়। ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী থেকে শুরু করে মনমোহন সিং পর্যন্ত, একাধিক কংগ্রেসি প্রধানমন্ত্রীর প্রিয়পাত্র ছিলেন গগৈ।
[আরও পড়ুন: পথের কাঁটা ‘দুর্নীতি’, বিরোধী নেতা হতে পারবেন না তেজস্বী!]
অরাজনৈতিক পরিবার থেকে উঠে আসা গগৈয়ের রাজনীতিতে প্রবেশ ষাটের দশকের শেষের দিকে। ইন্দিরা গান্ধী (Indira Gandhi) তখন জনপ্রিয়তার শীর্ষে। প্রথমবার সাংসদ নির্বাচিত হন ৭১-এ। নিজের শহর জোড়হাট থেকে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন চারবার(১৯৭১-৮৫)। পরবর্তীকালে কোলিয়াবর কেন্দ্র থেকে দু’দফায় সাংসদ হন। অসম প্রদেশ কংগ্রেসের (Congress) সভাপতি হয়েছিলেন দু’বার। জাতীয় স্তরে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। পি ভি নরসিমা রাওয়ের মন্ত্রিসভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও হন।
[আরও পড়ুন: পাক অধিকৃত কাশ্মীর আগে ফিরিয়ে আনুন, অখণ্ড ভারত ইস্যুতে ফড়ণবিসকে কটাক্ষ সঞ্জয় রাউতের]
প্রথমবার অসমের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন ২০০১ সালে। অসম গণ পরিষদের প্রফুল্ল কুমার মোহন্তকে সরিয়ে বসেন মসনদে। তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ২০১৬ সাল পর্যন্ত টানা মুখ্যমন্ত্রী পদে ছিলেন। গগৈয়ের সবচেয়ে বড় সাফল্যই হল, অসমকে রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে মুক্ত করা। তাঁর ১৫ বছরের রাজত্বে অসমে রাজনৈতিক হিংসা অনেকটাই কমেছে। উন্নয়নের কাজও নেহাত কম হয়নি। গগৈয়ের দীর্ঘ রাজনৈতিক কেরিয়ারে খুব বেশি দুর্নীতির অভিযোগও নেই। প্রবীণ এই নেতার মৃত্যুতে অসম তথা গোটা দেশের কংগ্রেসি রাজনীতিতে বড়সড় শূন্যতার সৃষ্টি হল। প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পর আরও এক খাঁটি কংগ্রেসি ভাবধারার নেতাকে হারাল দেশ।