সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভোট গ্রহণের মাত্র ৩ দিন আগে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সির লড়াই থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিলেন বিদ্রোহী শিবসেনার প্রধান তথা মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শিণ্ডে জানিয়ে দিলেন, মুখ্যমন্ত্রী পদের লড়াইয়ে তিনি নেই।
মহারাষ্ট্রে একনাথ শিণ্ডের ভবিষ্যৎ নিয়ে আগেই বার্তা দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রে এনডিএ জোট ক্ষমতায় এলে মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে নাম কাটা পড়তে পারে একনাথ শিণ্ডের। মহারাষ্ট্রে বিজেপির ইস্তেহার প্রকাশ মঞ্চে অমিত শাহ বলেন, “এখন আমাদের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে। তবে ভোটের ফল প্রকাশের পর তিনি যে এই পদে থাকবেন তার কোনও মানে নেই। জোট নেতৃত্ব বসে আলোচনার মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী পদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।” শাহের সেই বার্তার পরই জল্পনা শুরু হয় যদি একনাথ না হন তাহলে কি ফড়ণবিস? একনাথ কি তা মেনে নেবেন? সেই জল্পনার মাঝেই এবার সরে দাঁড়ানোর বার্তা দিলেন বিদ্রোহী শিবসেনার প্রধান।
এদিন সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে স্পষ্টভাবে একনাথ শিণ্ডে বলেন, "আমি মুখ্যমন্ত্রী পদের লড়াইয়ে একেবারেই নেই। তবে লড়াইয়ে আমি না থাকলেও নির্বাচনের পর মহাজুটি থেকেই রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হবেন।" এখন প্রশ্ন হল, এনডিএ ক্ষমতায় এলে কে হবেন মুখ্যমন্ত্রী। শিণ্ডে কুর্সির লড়াই থেকে নাম প্রত্যাহার করলে দ্বিতীয় শরিকের থেকে একমাত্র মুখ অজিত পওয়ার। তবে সাংগঠনিক ভাবে একেবারেই দুর্বল এই দল। মুখ্যমন্ত্রী পদে বসার জন্য ভোটের ফলে যে নম্বর প্রয়োজন তা জোটানোর সম্ভাবনা অজিতের দলের নেই বললেই চলে। বাকি পড়ে বিজেপির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিস। ফলে শেষ পর্যন্ত এই নামেই শিলমোহর পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
কিন্তু যে মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে দুবছর আগে মহারাষ্ট্রে এত লড়াই। উদ্ধবের সঙ্গে বিজেপির স্বার্থের সংঘাত। শেষে শিবসেনা ভেঙে একনাথ শিণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হওয়া। মহারাষ্ট্রে রীতিমতো 'মহাভারত' কাণ্ড চালানোর পর এভাবে এত সহজে কেন জায়গা ছেড়ে দিচ্ছেন শিবসেনা ভাঙার কাণ্ডারি শিণ্ডে। এ প্রসঙ্গে রাজনৈতিক মহলের দাবি, আসলে শিবসেনা ভাঙতে শিণ্ডেকে 'দাবার বোড়ে' হিসেবে ব্যবহার করেছে বিজেপি। শিণ্ডেও ভালোই বোঝেন শিবসেনাতে এই ভাঙন রাজ্যবাসী ভালো ভাবে নেয়নি। লোকসভা নির্বাচনের ফলেই তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ারে বসার গোঁ ধরে বসলে আম ও ছালা দুই যাবে একনাথ শিণ্ডের। এই পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক কেরিয়ার বাঁচানোর সহজ উপায়, বিজেপির কথা মেনে নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সির লড়াই থেকে সরে দাঁড়ানো। তাতে বিজেপি ও শিণ্ডে দুইয়েরই লাভ। মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি গেলেও বিজেপির অনুগ্রহে কেন্দ্রীয় মন্ত্রক জুটে যেতে পারে সহজেই। একেবারে শূন্যে নেমে যাওয়ার চেয়ে শিণ্ডের কাছে এ প্রাপ্তি অনেকখানি।