সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাশিয়া হোক বা ইউক্রেন, ইরান হোক বা ইজরায়েল রক্তস্নাত দুনিয়ায় এই মুহূর্তে সকলের সঙ্গে যদি কেউ আলোচনায় বসতে পারে তা সে 'বিশ্বগুরু' ভারত। সম্প্রতি এক সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে দেশের বিদেশনীতির সাফল্য তুলে ধরলেন এস জয়শংকর। একইসঙ্গে জানালেন, যুদ্ধের জেরে গোটা বিশ্ব যখন ছোট ছোট সমষ্টিতে ভাগ হয়েছে তখনও ভারতের বিদেশনীতি হল 'সবকা সাথ, সবকা বিকাশ'।

একদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও অন্যদিকে ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন যুদ্ধ। এই দুই যুদ্ধকে কেন্দ্র করে দ্বিধা বিভক্ত গোটা বিশ্ব। ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের এই যুদ্ধের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে জড়িয়ে বিশ্বের বেশিরভাগ শক্তিশালী। অন্যান্য দেশগুলিও এই যুদ্ধের ঝড় থেকে নিজেদের বাঁচাতে পারেনি। কঠিন এই পরিস্থিতিতেও ভারতের নীতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। শনিবার সে কথাই তুলে ধরেন জয়শংকর। তিনি বলেন, "বর্তমানে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ দ্বিধাবিভক্ত। তবে এই পরিস্থিতিতেও সেই গুটিকয়েক দেশের মধ্যে একটি দেশ হল ভারত যে রাশিয়া ও ইউক্রেন, ইসরায়েল ও ইরান, কোয়াড এবং ব্রিকস-এর সঙ্গে আলোচনার টেবিলের বসতে পারে। আমাদের সবকা সাথ, সবকা বিকাশ মন্ত্রী বিদেশনীতির জন্যও সমানভাবে প্রযোজ্য।"
ভারতের বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধে ভারত কোনও দেশের পক্ষ নেয়নি। আমাদের দেশ বরাবর শান্তির পক্ষে সওয়াল করেছে। ২০২৩ সালে ইজরায়েলের ও প্যালেস্টাইনের মধ্যে যে যুদ্ধ শুরু হয় তার আঁচ ইরানের উপরও। ইজরায়েল ও ইরান দুই দেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। ইজরায়েল ভারতকে প্রতিরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করে। অন্যদিকে, তেলের জন্য ভারত ইরানের উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। যুদ্ধে মেতে ওঠা দুই দেশের মাঝে নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে বন্ধুত্ব বজায় রাখা কঠিন। তবে সেই কঠিন কাজ শান্তির পথে হেঁটে সহজ করে নিয়েছে ভারত।
বিশ্বজুড়ে চলতে থাকা শুল্কযুদ্ধ নিয়েও শনিবার মুখ খোলেন জয়শংকর। তিনি বলেন, যুদ্ধের মাঝেও আমরা বৃহত্তর পরিবেশকে বস্তুনিষ্ঠভাবে দেখেছি। আজ বিশ্বজুড়ে শুল্কযুদ্ধ চলছে। সকলেই চাইছে রপ্তানি বাড়িয়ে আমদানি কমাতে। এই শুল্কযুদ্ধের জেরে বিশ্ব অর্থনীতির ঝুঁকি কমানোর বিষয়টি বর্তমানে যথেষ্ট ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তবে এর সমাধানও রয়েছে তা হল উৎপাদনে বৈচিত্র আনা। এই পরিস্থিতিতে বিকশিত ভারতের লক্ষ্য নিয়ে আমাদের নীতি 'ভারত প্রথম'। চিন প্রসঙ্গেও এদিন মুখ খোলেন জয়শংকর। পাশ্চাত্য দেশগুলিকে কটাক্ষ করে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী বলেন, ''চিনকে গড়ে তোলা অনেক দিন ধরেই পাশ্চাত্য দেশগুলি কৌশলগত লক্ষ্য ছিল। এবং এই লক্ষ্যেরই একটি অংশ ছিল ভারতের পতন ঘটানো। তবে পরিস্থিতি এখন বদলে গিয়েছে।''