সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গত মঙ্গলবার থেকেই বন্ধ বিশ্বের ব্যস্ততম জলপথগুলির মধ্যে অন্যতম সুয়েজ খাল (Suez Canal)। পণ্যবাহী জাহাজ আটকে যাওয়ায় রীতিমতো ‘ট্রাফিক জ্যাম’ চলছে জলপথে। ফলে ধাক্কা খেয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। কারণ, বিশ্বের মোট বাণিজ্যের ১২ শতাংশ হয় এই পথেই। এতে বাণিজ্যিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ভারত। এহেন পরিস্থিতির মোকাবিলায় এবার ফোর পয়েন্ট পরিকল্পনা তৈরি করেছে নয়াদিল্লি।
[আরও পড়ুন: ফের ভয়াবহ আকার নিচ্ছে দেশের করোনা পরিস্থিতি, একদিনে আক্রান্ত ৬২ হাজার]
জানা গিয়েছে, সুয়েজ খালের পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার কেন্দ্র সরকারের বাণিজ্য দপ্তর একটি বৈঠক ডাকে। সেখানে পণ্যবাহী জাহাজগুলির জন্য বিকল্প পথ, ভাড়া, বন্দরগুলিকে সতর্কীকরণের বিষয় ও অত্যাবশ্যক সামগ্রী নিয়ে যাওয়া জাহাজগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া নিয়ে একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হয়। ওই বৈঠকে স্থির করা হয় যে ভারতমুখী বেশকিছু পণ্যবাহী জাহাজকে আফ্রিকার উত্তমাশা অন্তরীপ দিয়ে ঘুরিয়ে আসার নির্দেশ দেওয়া হবে। এদিন এক বিবৃতি জারি করে বাণিজ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, সুয়েজ খাল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রবল ধাক্কা খেয়েছে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য। এই পথেই ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশ থেকে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে ভারত। এরমধ্যে রয়েছে অপরিশোধিত জ্বালালি তেল, লোহা, স্টিল, যন্ত্রাংশ, গাড়ি ও বস্ত্র-সহ বেশ কিছু পণ্য।
উল্লেখ্য, কৌশলগত দিক থেকেও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সুয়েজ খাল লোহিত সাগর ও ভূমধ্যসাগরকে সংযুক্ত করে। এটি এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে সংক্ষিপ্ততম জলপথ। ফলে সুয়েজ খাল যথেষ্ট ব্যস্ত পথ। এটি বন্ধ থাকলে যে এশিয়া-ইউরোপের জলপথে পণ্য পরিবহনে বড় প্রভাব পড়বে তা বলাই বাহুল্য। ক্ষতির পরিমাণ যে কতটা তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে পরিসংখ্যানে। খালটিতে জাহাজ চলাচল ব্যহত হওয়ায় প্রতি ঘণ্টায় বিশ্ববাণিজ্যে ৪০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হচ্ছে।
মঙ্গলবার সকালে সুয়েজ খাল দিয়ে উত্তরদিকে ভূমধ্যসাগরের দিকে যাচ্ছিল বিশাল পণ্যবাহী জাহাজটি। এদিকে সুয়েজ খালের কোনও অংশ প্রশস্ত আবার কোনও অংশ সঙ্কীর্ণ হয়ে গিয়েছে। কখনও কখনও তা প্রায় ৬০০ ফুটের কাছাকাছি। সেই পথ দিয়ে জাহাজ এগিয়ে চলা রীতিমতো কঠিন ব্যাপার। পণ্যবাহী জাহাজটি বইতে থাকা তীব্র হাওয়ায় হঠাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘুরে যেতে শুরু করে। শেষপর্যন্ত জাহাজের গতিপথ বিঘ্নিত হয়। আড়াআড়িভাবে সুয়েজ খালে দাঁড়িয়ে পড়ে জাহাজটি। এদিকে ব্যস্ত খাল এভাবে অবরুদ্ধ হওয়ায় জলপথে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। পরপর দাঁড়িয়ে গিয়েছে আরও বহু জাহাজ। ‘এভারগ্রিন’ নামের জাহাজটিকে সরানোর চেষ্টায় নেমেছে মিশরের প্রশাসন।