সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক স্নায়ুযুদ্ধ আরও বাড়ল। মঙ্গলবার মুজিবকন্যার পাসপোর্ট বাতিল করেছিল ঢাকা। এর কয়েক ঘণ্টা পর হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়াল নয়াদিল্লি। বার্তা অত্যন্ত স্পষ্ট, কোনও মূল্যেই প্রত্যার্পণ করা হবে না দেশত্যাগী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে।
গত বছরের আগস্টে শেখ হাসিনার সরকারকে হিংসাত্মক আন্দোলনের মাধ্যমে উৎখাতের পর বাংলাদেশের দখল নিয়েছে ইউনিসের উপদেষ্টা সরকার। এর পরই গোটা বাংলাদেশজুড়ে সংখ্যালঘুদের উপর চলতে থাকে ভয়াবহ হিংসা। শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগের নেতাদের ধরে ধরে হত্যা করা হয়। ভারতের আশ্রয় নেওয়া হাসিনাকে ফেরাতেও শুরু হয় উদ্যোগ। দেশে তাঁর বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা দায়েরের পাশাপাশি হাসিনাকে ফেরত চেয়ে নয়াদিল্লিকে কূটনৈতিক বার্তা (নোট ভার্বাল) পাঠায় ঢাকা। তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাসিনা এবং সহঅভিযুক্তদের ট্রাইব্যুনালের সামনে হাজির হতেও বলা হয়। হাসিনাকে প্রত্যার্পণের জন্য ভারতের উপর চাপ বাড়াতে মঙ্গলবার হাসিনার পাসপোর্টও বাতিল করা হয়। তবে বাংলাদেশের এই কূটনৈতিক চালকে কার্যত ফুৎকারে উড়িয়ে দিল নয়াদিল্লি।
দিল্লি সূত্রে জানা যাচ্ছে, শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি ‘কূটনৈতিক’ নয়, ‘আইনি’। কোনও অন্তর্বর্তী সরকার স্থায়ী সরকারের কাছে রাজনৈতিক নেতার প্রত্যার্পণ চাইলে তার আইনি দিক খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। বাংলাদেশ যে কূটনৈতিক বার্তা পাঠিয়েছে ভারত অবশ্যই তার উত্তর দেবে। তবে সেই উত্তর দিতে এত তাড়াহুড়ো ভারত চাইছে না। এই পরিস্থিতিতে হাসিনার ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধিতে এটা স্পষ্ট যে তাঁকে কোনওভাবেই বাংলাদেশে পাঠাবে না মোদি সরকার। তবে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক যে বজায় রাখা হবে সে বার্তাও বারবার দেওয়া হয়েছে ভারতের তরফে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের প্রত্যার্পণ চুক্তি থাকলেও তাতে স্পষ্ট বলা রয়েছে, যাকে প্রত্যার্পণ করা হবে সংশ্লিষ্ট দেশে তাঁর যদি প্রাণসংশয় থাকে সেক্ষেত্রে ভারত অভিযুক্তকে প্রত্যার্পণ নাও করতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে হাসিনার প্রাণহানির আশঙ্কা যথেষ্ট রয়েছে। সরকারের মদতেই তাকে খুন করা হতে পারে বলেও আশঙ্কা। সব মিলিয়ে, হাসিনার ভিসার মেয়াদ বাড়িয়ে ভারত বুঝিয়ে দিল কূটনৈতিক ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার গুরুত্ব ভারতের কাছে অনেক বেশি।