সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বেছে বেছে ধর্মীয়স্থানগুলিতে আঘাত করে উসকানি দিচ্ছে পাকিস্তান। দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা চলছে। শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই জানালেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরি। পাশাপাশি, সংঘাতের আবহে পাকিস্তান (Pakistan) ক্রমাগত ভুয়ো খবর ছড়াচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
মিসরি বলেন, “ইচ্ছাকৃতভাবে পাকিস্তান ধর্মীয়স্থানগুলিতে আঘাত করছে। দায়স্বীকার করার পরিবর্তে উলটে ভারতের বিরুদ্ধেই আঙুল তুলছে তারা। পাকিস্তান বলছে, ভারত নাকি অমৃতসর-সহ দেশের একাধিক শহরগুলিতে আঘাত করছে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে।” এরপরই মিসরি কড়া ভাষায় বলেন, “এরকম কল্পনাপ্রসূত অভিযোগ একমাত্র পাকিস্তানই করতে পারে। কারণ, তারা বোধহয় নিজেরাই এরকম কাজ করে।”
বুধবার জম্মু ও কাশ্মীরের পুঞ্চে লাগাতার গোলাবর্ষণ করেছে পাক সেনা। ধ্বংস হয়ে গিয়েছে একটি গুরুদ্বার এবং একাধিক শিখ সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের বাড়িঘর। ঘটনায় মোট ১৬ জন ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। আহতের সংখ্যা বহু। বুধবারই মিসরি এই ঘটনার নিন্দা করেছিলেন। শুক্রবারও সাংবাদিক বৈঠকে এই প্রসঙ্গ টেনে মিসরির বক্তব্য, "পাকিস্তান ধর্মীয় বিভেদ তৈরি করে ভারতে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চক্রান্ত করছে।" শুধু তাই নয়, অপারেশন সিঁদুর নিয়ে পাকিস্তান মিথ্যাচার করছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁর সংযোজন, “বুধবার পুঞ্চে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপার থেকে একটি শেল ছোড়ে পাক সেনা। একটি খ্রিস্টান স্কুলের পিছনে বিস্ফোরণ হয়। ঘটনায় ওই স্কুলের দু’জন ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন তাঁদের অভিভাবকরা।”
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে অবস্থিত নানখানা সাহেব গুরুদ্বার ধ্বংস করেছে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র। আপারেশন সিঁদুরের পর এমনটাই অভিযোগ করেছে পাকিস্তান। শুক্রবার সেই অভিযোগও খণ্ডন করেছেন মিসরি। তিনি বলেন, “পাকিস্তানের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে এবং ভিত্তিহীন। সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানোর জন্যই পাকিস্তান এই সব কথা বলছে।”
উল্লেখ্য, এর আগেও পাকিস্তান উসকানিমূলক মন্তব্য করে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। গত ১৬ এপ্রিল পাক সেনা প্রধান আসিম মুনীর বলেন, “কাশ্মীর আমাদের ধমনী এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আমাদের কাশ্মীরি ভাইদের বীরত্বের সংগ্রাম আমরা ভুলব না।” তিনি বলেন, “আমরা মুসলিম। হিন্দুদের থেকে অনেক আলাদা। এটা মনে রাখতে হবে। মুসলিমদের জন্যই পাকিস্তান তৈরি হয়েছে।” আসিমের এই মন্তব্যের ছ’দিন পরই পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার ঘটনাটি ঘটে।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ড্রোন হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। ভারতের পশ্চিমাংশকে টার্গেট করে মিসাইল, ড্রোন ছোঁড়ার অপচেষ্টা চালায় পাক সেনা বাহিনী। ভারত (India) যেখানে বেছে বেছে জঙ্গিঘাঁটিতে আক্রমণ করেছিল, সেখানে নির্লজ্জভাবে সাধারণ নাগরিকদের উপর হামলার চেষ্টা। পাকিস্তানের এই হামলার কড়া জবাব দিয়েছে ভারতও। একদিকে জল,স্থল, আকাশে ভারতের ত্রিমুখী হামলা। অন্যদিকে সেই আক্রমণে তছনছ পাকিস্তানের অন্দরে বিদ্রোহ এখন তুঙ্গে। পাক হামলার পাল্টা ভারতীয় অ্যাকশন বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই ধাপে ধাপে বাড়ছিল। রাত বাড়তেই জল, স্থল ও আকাশপথে একযোগে ভারতীয় সেনার আক্রমণে পাকিস্তানি প্রতিরোধ খান খান হয়ে গিয়েছে বলে খবর।