সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লাদাখ নিয়ে উত্তেজনার মাঝেই সম্প্রতি মিসাইল উৎক্ষেপণ করেছিল চিন। ভারতের উদ্দেশেই সেই পেশিশক্তির আস্ফালন ছিল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। শুক্রবার তারই পালটা দিয়ে অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ল ভারতীয় নৌসেনা ও ডিআরডিও।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, এদিন ওড়িশা উপকূলে চাঁদিপুরের কাছে ‘ভার্টিক্যাল লঞ্চ শর্ট রেঞ্জ সার্ফেস টু এয়ার মিসাইলে’র (VL-SRSAM) সফল উৎক্ষেপণ করে নৌসেনা ও প্রতিরক্ষা গবেষণা কেন্দ্র ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO)। নৌসেনার যুদ্ধজাহাজ থেকে মাঝআকাশে নির্ধারিত লক্ষ্যে নিখুঁত ভাবে আঘাত হানে মিসাইলটি। ডিআরডিও সূত্রে খবর, নৌসেনার জাহাজে মোতায়েন এই মিসাইল সিস্টেমটি স্বল্প দূরত্বে যে কোনও যুদ্ধবিমান বা ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করতে সক্ষম। এতে থাকা অত্যাধুনিক সেন্সর এতটাই আধুনিক যে, রাডার তরঙ্গকে ফাঁকি দিয়ে সমুদ্রপৃষ্ট ঘেঁষে আসা মিসাইলও খুঁজে বের করে নষ্ট করতে সক্ষম ভারতের ‘VL-SRSAM’। বিশ্লেষকদের ধারণা, এর ফলে নৌসেনার রণতরীগুলির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও নিশ্ছিদ্র হয়ে উঠবে।
[আরও পড়ুন: ধ্বংসস্তূপে সোনালি আলো, আফগানিস্তানের ভূমিকম্পে পরিবারের সকলকে হারানো শিশুর ছবি ভাইরাল]
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, লাদাখ নিয়ে ভারত ও চিনের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত। দুই দেশের মধ্যে সামরিক স্তরে অন্তত ১২ দফা আলোচনা হলেও সীমান্ত সমস্যার কোনও সমাধান মেলেনি। এহেন পরিস্থিতিতে গত শনিবার ইন্টার কন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে চিন। বিশ্লেষকদের ধারণা, এখন গোটা বিশ্ব রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে ব্যস্ত। ফলে এশিয়া মহাদেশে সেই অর্থে নজর দিচ্ছে না ইউরোপ ও আমেরিকা। এই সুযোগে লাদাখে ফের আগ্রাসী হয়ে উঠতে পারে লালফৌজ। কিন্তু ভারতও যে তৈরি সেই বার্তাই যেন এদিনের মিসাইল উৎক্ষেপণ বহন করছে।
উল্লেখ্য, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে চিনের আগ্রাসী মনোভাবকে টক্কর দিতে ভারত ধীরে ধীরে আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে মহড়া কিংবা যুদ্ধের অস্ত্র কেনাবেচার চুক্তি মতো পদক্ষেপের মাধ্যমে সামরিক যোগসূত্র আরও জোরদার করছে। চিনের লাগাতার চোখরাঙানির জবাব দিতেই গত জানুয়ারি ভারতের সঙ্গে ব্রহ্মস মিসাইল কিনতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে ফিলিপাইন্স। অর্থাৎ সবদিক থেকেই চিনবিরোধী একটা সমঝোতায় যেন আবদ্ধ হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার বাকি দেশগুলি। এই কড়া বার্তা যত বুঝতে পারছে, ততই নিজেদের ‘দাদাগিরি’র চাপটা বুঝতে পারছে চিন।