সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত প্রথম স্করপেন ক্লাস সাবমেরিন আইএনএস কালভরি যাত্রা শুরু করল বৃহস্পতিবার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে আজ আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল সমুদ্রে ঘাতক বলে পরিচিত এই ‘টাইগার শার্ক’-এর। প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত রয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, নৌসেনা প্রধান অ্যাডমিরাল সুনীল লাম্বা ও ভাইস অ্যাডমিরাল গিরিশ লুথরা ও ফ্ল্যাগ অফিসাররা।
[নয়া অ্যান্টি-সাবমেরিন রণতরী ‘আইএনএস কিলতান’ নিয়ে তৈরি নৌসেনা]
এই ডুবোজাহাজ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে স্টেট অফ দ্য আর্ট টেকনোলজি। প্রি-গাইডেড মিসাইল ব্যবহার করে প্রায় নিঃশব্দে শত্রুকে জলের নিচে ছিন্নভিন্ন করে দিতে পারে ‘আইএনএস কালভরি’। প্রায় ৬৭ মিটার লম্বা, ওজনে দেড় হাজার টনেরও বেশি এই ডুবোজাহাজ চওড়ায় প্রায় সাড়ে ছয় মিটার। এটি এমন ভাবে বানানো হচ্ছে যাতে দীর্ঘক্ষণ জলের তলায় ডুবে থাকতে পারে। ‘স্করপেন’ থেকে অনায়াসে যুদ্ধজাহাজ ধ্বংস করার টর্পেডো এবং ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া যাবে।
একা আইএনএস কালভরি নয়, নৌসেনার জন্য এই মুহূর্তে আরও দুটি সাবমেরিন তৈরি হচ্ছে। জলে নামার আগে চূড়ান্ত পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে আরও দুটি স্করপেন ক্লাস সাবমেরিন ‘খান্ডেরি’ ও ‘করঞ্জ’ নিয়ে। চিনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভারতও এখন জলে অপ্রতিরোধ্য হতে ‘পাখির চোখ’ করেছে নৌসেনার সামগ্রিক উন্নয়নকে। তাই আন্তর্জাতিক যে কোনও সাবমেরিনের সঙ্গে পাল্লা দিতে ঢেলে সাজছে ভারতের নৌসেনাও। পাকিস্তান ও চিনের সঙ্গে যখন ভারতের উত্তেজনা তুঙ্গে, সেই সময় নৌসেনা কর্তারা মনে করছেন, তাঁদের হাতে এখন ডুবোজাহাজের যে সম্ভার হয়েছে, তাতে পাকিস্তান-চিনের সঙ্গে এঁটে ওঠা মুশকিল। এই দুই দেশের সঙ্গে পাল্লা দিতেই ছ’টি ফরাসি স্করপেন ডুবোজাহাজের বরাত দিয়েছিল নৌসেনা। যার মধ্যে প্রথমটি এবার হাতে পেল নৌসেনা।
[চিনের সঙ্গে বিরোধ, বিশ্বের সবচেয়ে ঘাতক সাবমেরিন নিয়ে তৈরি ভারত]
देश की रक्षा में समर्पित स्कॉर्पियन श्रेणी की पहली पनडुब्बी #INSKalvari @indiannavy के बेडे में शामिल होने को तैयार
देखें झलक pic.twitter.com/pDgFR3u7d6— Doordarshan News (@DDNewsLive) December 14, 2017
প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলপথে যুদ্ধের ক্ষেত্রে ভারতের এই পদক্ষেপ নজিরবিহীন। স্করপেন ক্লাস অ্যাটাক সাবমেরিন আইএনএস কালভরি ভারতীয় নৌসেনার শক্তি যে কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেবে, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি নৌসেনার দাবি মোতাবেক যে ছ’টি এই জাতীয় ঘাতক সাববেরিন পাওয়ার কথা ছিল, তার মধ্যে এটিই প্রথম। এরকম মোট ১৫টি এই জাতীয় ডুবোজাহাজ পাচ্ছে নৌসেনা। তবে, এখনই চিনের হাত থেকে ভারতের জলসীমা পুরোপুরি নিরাপদ হচ্ছে না। কারণ, চিনের কাছে এই জাতীয় রণতরী রয়েছে অন্তত ৬০টি। তবে দ্রুতই স্করপেন ক্লাস সাবমেরিনের সংখ্যা আরও বাড়াতে চায় ভারত।
ইতিমধ্যেই ভারতীয় নৌসেনার ‘প্রজেক্ট ৭৫’-এর অধীনে ছ’টি স্করপিয়ন ক্লাস সাবমেরিন তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে৷ দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর নয়া উদ্যোগ নিয়েছে নরেন্দ্র মোদির সরকার৷ দেশের জলসীমাকে নিরাপদ রাখতে ৬০ হাজার কোটি টাকার সাবমেরিন প্রোগ্রামকে সবুজ সঙ্কেত দিয়েছে অরুণ জেটলির প্রতিরক্ষা মন্ত্রক৷ দেশের অন্দরেই প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি নির্মাণে এই প্রোগ্রাম বিশেষভাবে সাহায্য করবে বলে আশা বিশেষজ্ঞদের৷ ফ্রান্সের নৌবাহিনী ও প্রতিরক্ষা সংস্থা DCNS-এর কারিগরী সহায়তায় মুম্বইয়ের মাজাগাঁও ডকে সাবমেরিনগুলি তৈরির কাজ পুরোদমে চলছে৷ সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা ভারতের প্রতিরক্ষার জন্য সাবমেরিন ও যুদ্ধবিমান তৈরিতে আগ্রহ দেখিয়েছে৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত শিকে ছিঁড়েছে অল্প কয়েকটি সংস্থার কপালেই৷ প্রতিরক্ষা খাতে ৪৯ শতাংশ এফডিআই বেঁধে দেওয়ায় এখনও সামরিক সরঞ্জাম তৈরিতে দেশীয় সংস্থাগুলিই দাদাগিরি দেখাতে পারছে৷ তবে নয়া প্রকল্পে অত্যাধুনিক সাবমেরিন, ফাইটার জেট তৈরির জন্য দেশীয় সংস্থাগুলি শীর্ষস্থানীয় বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে প্রযুক্তির আমদানি করার ছাড়পত্র পেতে পারে৷
দেখুন ভিডিও:
The post যাত্রা শুরু প্রথম স্করপেন সাবমেরিনের, ভারতের সাফল্যে আতঙ্কিত শত্রুরা appeared first on Sangbad Pratidin.