সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়। একটি বাড়ি যে আসলে বহু মানুষের সম্মিলিত আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক সেকথাই মনে করালেন বিচারপতি বি আর গাভাই। বুধবার 'বুলডোজার নীতি' নিয়ে হওয়া মামলার শুনানিতে তাঁর মুখে উঠে এল এই প্রসঙ্গ। তিনি শোনালেন খ্যাতিমান হিন্দি কবি প্রদীপের পঙক্তি।
সেই পঙক্তিটি হল- 'আপনা ঘর হো, আপনা আঙ্গন হো/ ইস খাব মে হর কোই জিতা হ্যায়।/ ইনসান কি দিল কি ইয়ে চাহত হ্যায়,/ কি এক ঘর কা সপ্না কভি না ছুটে।' অর্থাৎ নিজের একটা মাথাগোঁজার ঠাঁই সকলেরই স্বপ্ন। মানুষের মনের প্রার্থনা, ঘরের স্বপ্ন কখনও যেন না হারিয়ে যায়। এদিন এই মামলা নিয়ে বক্তব্য রাখার সময় শুরুতেই এই কবিতাটি সকলের কাছে তুলে ধরেন বিচারপতি গাভাই। তিনি জানান, ''মাথার উপরে ছাদের স্বপ্ন প্রতিটি মানুষের, প্রতিটি পরিবারের। একটা বাড়ি আসলে একটি পরিবারের সম্মিলিত আশার প্রতীক। অথবা কোনও ব্যক্তির সুরক্ষা ও স্থায়িত্বেরও। কাজেই এটা গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন যে, কোনও আধিকারিকের কি এমন অধিকার রয়েছে যে তিনি তার জোরে কোনও এক বা একাধিক পরিবারের আশ্রয় কেড়ে নিতে পারেন সাংবিধানিক ধারায় অভিযুক্ত কোনও ব্যক্তিকে শাস্তি দিতে গিয়ে?''
প্রসঙ্গত, ২২ অক্টোবর শুনানিতে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। জানিয়েছিল আদালতের নির্দেশ অমান্য করে বুলডোজার চালালে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর পর বুধবার শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, রাজ্য প্রশাসনের কোনও অধিকার নেই বিচারকের ভূমিকায় বসে অভিযুক্তর বিচার সম্পন্ন হওয়ার আগেই বেসরকারি ও বাণিজ্যিক সম্পত্তিকে গুঁড়িয়ে দেওয়ার। সেই সঙ্গেই বিচারপতি বি আর গাভাই এবং বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ বেআইনি ও দখলীকৃত নির্মাণ ধ্বংসের ক্ষেত্রে গাইডলাইন বেঁধে দিয়েছে। জানিয়ে দিয়েছে, তা করতে হবে ১৫ দিনের নোটিসে। করতে হবে ভিডিও রেকর্ডিংও। এমনই নানা শর্ত চাপানোর আগে এভাবেই স্রেফ অভিযুক্ত হওয়ার কারণে কারও বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার অর্থ সেই বাড়ির সঙ্গে যুক্ত বহু মানুষকে, সেকথা মনে করিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট।