সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এই ঘটনা যে কোনও সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানাবে। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের এক সন্তান মার্কিন মুলুকে কোটি টাকার নিশ্চিত চাকরি ছেড়ে দিল, শুধুমাত্র দেশের সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে বলে। শনিবার দেরাদুনে ভারতীয় সেনার মিলিটারি অ্যাকাডেমি থেকে নিজের পুত্র বর্ণনা ইয়াদাগিরিকে সেনার উর্দি পরে প্যারেড শেষ করে, সসম্মানে বেরিয়ে আসতে দেখে তাই চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি দিনমজুর বাবা বর্ণনা গুনায়া।
[ছোট ছেলেও ফৌজে যাবে, বলছেন গর্বিত শহিদের বাবা]
গুনায়া এখন হায়দরাবাদে প্রতিদিন ১০০ টাকার বিনিময়ে শ্রমিকের কাজ করেন। মাত্র ২৪ ঘন্টা আগেও তিনি জানতেন না, যে তাঁর ছেলে দেরাদুনে সেনার অ্যাকাডেমি থেকে বেরিয়ে এসে তাঁকে জড়িয়ে ধরে বলবে, ‘আমার স্বপ্ন সত্যি হয়েছে বাবা’। আর কী বলছেন তাঁর কৃতী সন্তান? বর্ণনা ইয়াদাগিরি বলছেন, ‘আমার বাবা খুবই সাধারণ মানুষ। আমি যখন সেনাবাহিনীতে যোগ দেব বলে তাঁকে জানাই, তীব্র আপত্তি করেন। বলেন, সফটওয়্যারের চাকরি ছেড়ে কেন সেনার চাকরিতে যোগ দিতে যাচ্ছি?’ ইয়াদাগিরি হায়দরাবাদের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি থেকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে বেরিয়েছেন সদ্য। কিন্তু মার্কিন মুলুকে ইউনিয়ন প্যাসিফিক রেল রোডের মোটা টাকার চাকরির হাতছানিতে সাড়া দেননি। ফিরিয়েছেন ক্যাট পরীক্ষায় ৯৩.৪% নম্বর পাওয়ার পরে আইআইএম ইন্দোরের ডাকও। কারণ, তিনি দেশমাতার সেবা করতে চান।
[সাধারণতন্ত্র দিবস সম্পর্কে এই ১০টি তথ্য জানলে আপনিও গর্বিত হবেন]
শনিবার ইয়াদাগিরি দেরাদুন থেকে সেনার ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিটে যোগ দেওয়ার বন্দোবস্ত পাকা করে যখন জলপাই রঙের উর্দি পরে বেরোচ্ছেন, চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি তাঁর বাবা। টেকনিক্যাল গ্র্যাজুয়েশন কোর্সে তাঁর সন্তান প্রথম হয়েছেন। এমন সৌভাগ্য অনেক অভিভাবকেরই হয় না। গর্বের এই দিনে অতীতকে হাঁতড়ে বেড়াচ্ছেন বাপ-ব্যাটা। ভেজা ভেজা চোখে ইয়াদাগিরি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি বাবার কষ্টের দিনগুলিকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। প্রতিদিন ৬০ টাকা করে আয় করতেন বাবা। পয়সার অভাবে মা’কেও কাজ করতে বাধ্য হতে হয়।’ পরিবারে এত অভাব থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র পয়সার পিছনে কখনই ছোটেননি বর্ণনা ইয়াদাগিরি। শুনেছে হৃদয়ের ডাক। ছোট থেকেও স্বপ্ন ছিল দেশের সেনা অফিসার হবেন। আজ সেই স্বপ্ন সত্যি হল। তিনি বলছেন, ‘মায়ের সেবা করার চেয়ে বড় আর কিছুই হতে পারে না। এই দেশের প্রতিরক্ষা ও সেনাবাহিনীর স্বার্থে আমি কাজ করে যাব। দেশকে গর্বিত করে তবেই মরব।’ জাতীয় সঙ্গীত শুনে উঠে দাঁড়াতে যখন দেশের অনেক যুবা আপত্তি জানাচ্ছেন, তখন এরকম একজন ইয়াদাগিরিকে যেন বড়ই দরকার হয়ে পড়ছে এ দেশের।
দেখে নিন দেশমাতার এই মহান সন্তানকে:
[ভারতের সশস্ত্র সেনার জন্য এবার অত্যাধুনিক গাড়ি]
The post বাবার আয় দিনে ৬০ টাকা, কোটি টাকার চাকরি ছেড়ে ছেলের যোগ সেনাবাহিনীতে appeared first on Sangbad Pratidin.