বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, অযোধ্যা: রামমন্দির (Ram Mandir) হয়ে গিয়েছে। রামলালা প্রাণ পেয়েছেন। এবার ধর্মের নামে দাঙ্গা বন্ধ হোক। অযোধ্যার (Ayodhya) সব ধর্মের মানুষের এটাই দাবি। এখানে রামের জন্মস্থান হলেও অযোধ্যায় কোনওদিন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়নি বলে জানালেন ইকবাল আনসারি (Iqbal Ansari)।
রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলায় মুসলিম সম্প্রদায়ের তরফে মূল মামলাকারী ইকবাল। তঁকে রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল রাম জন্মভূমি তীর্থক্ষত্র ট্রাস্ট। আগেই জানিয়েছিলেন, মন্দির উদ্ধোধনে হাজির থাকবেন। সেইমতো প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অযোধ্যায় আসার আগেই মন্দিরপ্রাঙ্গনে প্রবেশ করেন। সকলের বক্তৃতা শোনার পর রামলালার মূর্তি দর্শন করেন। প্রসাদও খান। ট্রাস্টের পক্ষ থেকে অতিথিদের যে উপহার দেওয়া হয় তা বাড়িতে নিয়ে আসেন। তবে ব্যস্ততার জেরে খুলে দেখা হয়নি। অন্যদিকে, মঙ্গলবার থেকে পুণ্যার্থীদের খাবার বিলি করার জন্য নিজের জমি ছেড়ে দেওয়া নুর আলম ভান্ডারা শুরু করলেন। মন্দিরের ভিআইপি গেট সংলগ্ন রাস্তায় দর্শনাথীদের হাতে খাবার তুলে দেন তিনি।
[আরও পড়ুন: ‘ন্যায় যাত্রার কথা জানায়ইনি কংগ্রেস’, ‘একলা চলো’ বার্তা স্পষ্ট করলেন মমতা]
রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানে ইকবাল ছিলেন একমাত্র সংখ্যালঘু অতিথি। স্বভাবতই তাঁর অভিজ্ঞতা জানার কৌতুহল ছিলই। সকাল হতেই ছুটলাম তাঁর বাড়ি। উল্টোদিকে গাড়ির গ্যারাজের সামনে বসেছিলেন। কেমন অভিজ্ঞতা? বললেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায় বেরনোর পর চার বছর কেটে গিয়েছে। এখন আর পিছনে তাকিয়ে লাভ নেই। তাই সকাল সকাল চলে গিয়েছিলাম। সকলে চেনেন না। যাঁরা চেনেন তাঁদের একজন নিয়ে গিয়ে বসালেন। খুব ভাল অনুষ্ঠান।” বক্তৃতা শুনেছেন?
জানান, “প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা খুব মন দিয়ে শুনেছি। একজন প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যেভাবে বলা উচিত, উনি সেভাবেই বলেছেন। মোহন ভাগবত ও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতাও শুনেছি। খুব ভাল লেগেছে। কেউই সাম্প্রদায়িক বক্তৃতা করেননি।” আর ভাল লেগেছে খুব কাছ থেকে সিনেমার নায়ক-নায়িকা ও খেলোয়াড়দের দেখে। রামলালার মূর্ত ভাল লেগেছে ইকবালের। তাই দেশবাসীর কাছে তঁার আবেদন, অযোধ্যাাকে সম্মান জানাতে ও ঐতিহ্য বজায় রাখতে দয়া করে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা করবেন না। আরেক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি নুর আলম আগেই জানিয়েছিলেন, মন্দির উদ্বোধন হয়ে গেলে নিজের জমির কিছুটা ভান্ডারার জন্য ছেড়ে দেবেন। নিজের হাতে পুণ্যার্থীদের খাবার দেবেন। তাই সকাল থেকেই রান্নার তদারকিতে ব্যস্ত ছিলেন কাঠ ব্যবসায়ী নুর আলম।
[আরও পড়ুন: মণিপুরে ৬ সহকর্মীকে গুলি অসম রাইফেলস জওয়ানের! আত্মঘাতী হওয়ারও চেষ্টা]
বেলা বারোটা নাগাদ ভান্ডারা শুরু হয়। পথ চলতি মানুষের হাতে খাওয়ার তুলে দিতে দিতেই জানালেন, “জনসেবাই মানুষের আসল ধর্ম হওয়া উচিত বলে মনে করি। তাই এতবড় সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি। আগামী একমাস এই কাজ করে যাব।” এদিকে, ১০ ফেব্রুয়ারি দলীয় বিধায়কদের নিয়ে অযোধ্যায় আসবেন শুভেন্দু অধিকারী। ওইদিনই অযোধ্যা থেকে কলকাতায় ফিরে যাবেন তঁারা। কারণ, ১১ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বাজেট অধিবেশন চলার কথা।