সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাতীয় একতা দিবসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছিলেন, শীঘ্রই এক দেশ, এক নির্বাচনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দিকে এগোচ্ছে দেশ। কিন্তু কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে প্রধানমন্ত্রীর সেই দাবি পত্রপাঠ উড়িয়ে দিলেন। তাঁর সাফ কথা, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার জন্য সেটা সংসদে পাশ করাতে হবে। যা অসম্ভব।
বৃহস্পতিবার জাতীয় একতা দিবসের মঞ্চে মোদি বলেন, “আমরা এখন এক দেশ-এক নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছি। এটা আমাদের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করবে। এর ফলে উন্নত ভারতের স্বপ্ন নতুন করে গতি পাবে।” পালটা খাড়গের বক্তব্য, "প্রধানমন্ত্রী যেটা বলছেন, সেটা তিনি করবেন না। কারণ এটা করতে হলে সংসদে সব দলকে সমর্থন করতে হবে। যেটা অসম্ভব। ফলে এক দেশ-এক নির্বাচন হওয়া অসম্ভব ব্যাপার।"
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পাশ হয়ে গিয়েছে ‘এক দেশ এক নির্বাচন’ প্রস্তাব। সব ঠিক থাকলে সংসদের আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনেই পেশ হবে এক দেশ-এক নির্বাচন বিল। কিন্তু লোকসভায় পেশ হলেও সেটা পাশ হওয়া নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। কারণ কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদির সরকার আর আগের মতো নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়। জোটসঙ্গীদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে। আবার সঙ্গীদের অনেকেই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করতে পারে।
এক দেশ এক নির্বাচন প্রক্রিয়া কার্যকর করার জন্য প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের নেতৃত্বে যে কমিটি গড়েছে মোদি সরকার, সেই কমিটির সুপারিশ বলছে, এক দেশ-এক নির্বাচন কার্যকর করতে হলে বেশ কয়েকটি সংবিধান সংশোধনী আনতে হবে। ৩৬৮(২) ধারা অনুযায়ী সংবিধান সংশোধনীর জন্য সংসদের দুই কক্ষে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রয়োজন হয়। কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন কমিটি মোট ৪৭টি রাজনৈতিক দলের কাছে এক দেশ-এক নির্বাচন সম্পর্কে নিজেদের মতামত দিয়েছে। এর মধ্যে ৩২টি দল এই প্রস্তাবের পক্ষে মত দিয়েছে। আর ১৫টি রাজনৈতিক দল এর বিপক্ষে মত দিয়েছে। যে যে দল এই প্রস্তাবের পক্ষে মত দিয়েছে, তাদের সব ভোট যোগ করলে লোকসভায় সাংসদ সংখ্যা দাঁড়ায় ২৭১। যারা যারা কোনও পক্ষে মত দেয়নি তাঁদের সাংসদসংখ্যাও যদি যোগ করা হয়, তাহলে সংখ্যাটা দাঁড়ায় ২৯৩। লোকসভার সব সাংসদ উপস্থিত থাকলে সংবিধান সংশোধনের জন্য প্রয়জন হয় ৩৬২ জন সাংসদের সমর্থন।