সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মা মারা গিয়েছেন। পরিজনেরা সে খবর দিয়েছেন ছেলেকে। শোনামাত্রই মন কেঁদে উঠেছে। চোখের সামনে ভেসে উঠেছে মায়ের মুখ। আর চোখের কোণ ভিজেছে অজান্তেই। যে মা জন্ম দিয়েছেন, বুকে আগলে রেখে মানুষের মতো মানুষ তৈরি করেছেন তাঁকে শেষবারের মতো দেখার ইচ্ছা হয়নি তা নয়। কিন্তু জন্মদাত্রী মায়ের মৃত্যুকালেই সংকটে দেশমাতা। তাই দায়িত্বে অবিচল পুরকর্মী ছেলে সব কাজ ফেলে রেখে ছুটে যেতে পারেননি মায়ের কাছে। পরিবর্তে নিজের কাজ সামাল দিয়ে সময়মতো বাড়ি ফিরলেন ছেলে।
মধ্যপ্রদেশের ভোপাল পুরসভার কর্মী আসরাফ আলি। কাজ করতে করতে আচমকাই একদিন বেজে উঠল তাঁর ফোন। বাড়ি থেকে আসা ফোনেই তিনি জানতে পারেন দুঃসংবাদ। জানেন চিরদিনের মতো তাঁকে ছেড়ে চলে গিয়েছেন মা। পরিজনেরা জানান, তড়িঘড়ি বাড়ি আসতে হবে তাঁকে। তবে পরিজনদের বোঝান আসরাফ এই মুহূর্তে তাঁর পক্ষে বাড়ি ফেরা কার্যত অসম্ভব। মন কাঁদলেও, দায়িত্বে অবিচল আসরাফ। সহকর্মীদেরও কিছুই জানাননি তিনি। পরিবর্তে নিজের কাজ শেষ করে সময়মতো বাড়ি ফেরেন। যোগ দেন মায়ের শেষকৃত্যে। ব্যক্তিগত বিপদেও ছুটি চাননি আসরাফ। বরং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্ত নিয়মকানুন শেষ করে ফিরে যান নিজের কাজে। চোখের জল মুছে তিনি বলেন, “আমার নিজের মায়ের মৃত্যুর জন্য, দেশমাতার কোনও ক্ষতি হতে দেব না। তাই দায়িত্বের সঙ্গে আপস করিনি।”
[আরও পড়ুন: কেরলে প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু, দেশে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ২০]
ভোপাল পুরসভার ইরফান খান আরেক কর্মীও প্রতিকূলতাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে করোনা যুদ্ধে শামিল। ঘাড়ে চোট, ভেঙে গিয়েছে হাত। তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষকে পরিষেবা দিয়ে চলেছেন এই সরকারি আধিকারিক। ইরফানের দাবি, এখন সকলের জন্য কাজ করার সময়, নিজের জন্য নয়।
মারণ ভাইরাসের আশঙ্কায় গৃহবন্দি অধিকাংশ মানুষ। ঠিক সেই সময় প্রথম সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই করে চলেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। অথচ তাঁদেরও রয়েছে পরিবার। রোগীর ভিড় সামলাতে গিয়ে নাওয়া খাওয়ার সময়ও পাচ্ছেন না তাঁরা। তাই এই সমস্ত করোনা যোদ্ধাদের কথা ভেবে বাড়িতে থাকুন। অযথা আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকুন।
The post মায়ের মৃত্যুতেও দায়িত্বে অটল ছেলে, শেষকৃত্যের পরিবর্তে করোনা যুদ্ধে শামিল পুরকর্মী appeared first on Sangbad Pratidin.
