বিশেষ সংবাদদাতা, নয়াদিল্লি: মুকুল রায়কে (Mukul Roy) নিয়ে তাঁদের কোনও আগ্রহ নেই। দিল্লিতে বসে ফের জানিয়ে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। পাঁচদিন ধরে দিল্লিতে বিজেপির (BJP) কেন্দ্রীয় নেতাদের সাক্ষাৎ পাওয়ার আশায় হত্যে দিয়ে পড়ে আছেন মুকুল। কিন্তু, দোরে দোরে অনুরোধ-উপরোধ জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। কেউই তাঁকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। এরমধ্যেই বাড়িতে তাঁকে পরিবারের লোকজন মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে বলে অভিযোগ তুলেছেন প্রবীণ রাজনীতিবিদ।
এর আগে মুকুল রায় দাবি করেছিলেন তাঁর দিল্লি সফর রাজনৈতিক কারণে। তবে এদিন পারিবারিক অশান্তির জন্য দিল্লি ‘পালিয়ে’ এসেছেন বলে কথা ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, খালি হাতে বাড়ি ফিরে রাজনৈতিক হেনস্তার থেকে বাঁচার পথ খোলা রাখতে চাইছেন মুকুল। অবশ্য, এদিন তিনি পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলার পর তাঁর ছেলে শুভ্রাংশু রায় (Subhrangshu Roy) আর এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
উল্লেখ্য, সোমবার রাতে দিল্লি পৌঁছন মুকুল। রাজধানীতে আসার কারণ হিসাবে তিনি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যের কথাই সে সময় জানিয়েছিলেন। তবে শুক্রবার আগের বক্তব্য থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে বলেছেন, বাড়ির লোক ‘পাগল’ প্রমাণের চেষ্টা করছে। অসুস্থ বলে মানসিক চাপও দেওয়া হচ্ছে। সে কারণেই তিনি বাড়ির কাউকে না জানিয়ে দিল্লিতে চলে এসেছেন।
[আরও পড়ুন: আনন্দসন্ধ্যায় মুখোমুখি বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় ও কুণাল ঘোষ, কথোপকথন নিয়ে জল্পনা]
এদিন, দিল্লির গোপন আস্তানা থেকে একটি বাংলা ওয়েব পোর্টালের সঙ্গে ফোনে সাক্ষাৎকারে তিনি পুরোপুরি সুস্থ রয়েছেন দাবি করে বলেন, “আমার শরীর এখন ঠিক আছে। আমি পূর্ণ সুস্থ, মাঝে শরীর খারাপ হয়েছিল এখন ঠিক আছে। বাড়ির লোক অসুস্থ অসুস্থ করে পাগল প্রমাণের জন্য মনের উপর একটা চাপ সৃষ্টি হচ্ছিল। তাই বাড়ির কাউকে না জানিয়েই দিল্লিতে চলে এসেছি।”
বাড়ির লোকের আচরণ মুকুল যে একেবারেই পছন্দ করছেন না তা স্পষ্ট ভাষাতেই জানিয়ে দিয়েছেন। বলেছেন, “এতে তাদের কী লাভ তা তারাই জানে। কিন্তু এসব করে কোনও লাভ হয় না। উলটে যে লোকটা সুস্থ আছে তার মনের উপর চাপ তৈরি হয়।” বাড়ির লোকেরা তাঁকে পাগল প্রমাণের চেষ্টার পেছনে রাজনৈতিক কোনও চাপ নয় বরং তারা নিজেরাই এই কাজ করছে বলেও দাবি করেছেন মুকুল।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার রাতে মুকুলের দিল্লি আগমনের পর থেকেই শুভ্রাংশু দাবি করে আসছিলেন, তাঁর বাবা শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ। মুকুলের দিল্লি সফরের পিছনে রাজনৈতিক চক্রান্ত রয়েছে এমনটাও অভিযোগ করেছিলেন তিনি। অথচ সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই আবার মুকুল বাড়ির লোকের বিরুদ্ধে তাঁকে পাগল প্রমাণের চেষ্টার অভিযোগ করলেন।
এদিন মুকুলের বক্তব্যর পর শুভ্রাংশু আর এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। এদিকে দিনের পর দিন প্রথমে বিলাসবহুল হোটেল থেকে পরে গোপন আস্তানায় ঘাঁটি গেড়ে থাকলেও মুকুলের কোনও রাজনৈতিক কর্মসূচির খোঁজ মেলেনি। বিজেপির কোনও কেন্দ্রীয় নেতার সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ বা নিদেনপক্ষে দলের সদর দপ্তরেও পা রাখেননি মুকুল। এদিনও দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার স্পষ্টভাবেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, তাঁদের মুকুলকে নিয়ে কোনও আগ্রহ নেই। এই প্রসঙ্গে প্রশ্নের সরাসরি উত্তর এড়িয়ে তিনি বলেন, মুকুল রায় বিজেপির কেন্দ্রীয় পদাধিকারী ছিলেন। তাঁকে নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই ঠিক করবে।