সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কুকি-মেতেই সংঘর্ষে জ্বলছে মণিপুর (Manipur)। বুধবার রাতেও হিংসার বলি হয়েছেন ২জন। এহেন জটিল পরিস্থিতিকে ঘোরাল করে এবার ময়দানে নেমেছে নাগারাও। জানা গিয়েছে, এবার থেকে নিজেদের গ্রামগুলোতে বিশেষ ‘রক্ষীবাহিনী’ মোতায়েন করেছে তারা।
মণিপুরে নাগা-মেতেই এবং কুকিদের মধ্যে সমীকরণ অত্যন্ত জটিল। অতীতে একাধিকবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সাক্ষী থেকেছে উত্তর-পূর্বের রাজ্যটি। এই প্রেক্ষাপটে, ‘নিরপেক্ষ নাগাদের’ অবস্থান বদল সত্যিই চিন্তার বিষয় বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্রের খবর, রাজধানী ইম্ফলের পূর্বে পাহাড়ি জেলা চান্ডেলের সুগনুতে এবার থেকে নাগাদের নিজস্ব রক্ষীবাহিনী মোতায়েন থাকবে। কারণ গত বুধবার থেকে সুগনুতে শুরু হয়েছে গুলির লড়াই। আহত হয়েছেন এক বিএসএফ জওয়ানও। নাগা সংগঠনের তরফে বলা হয়েছে, সশস্ত্র কুকি বা মেতেইরা যেন গ্রামে ঢুকতে না পারে সেই জন্যই বিশেষ প্রহরার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, কুকি-মেতেই সংঘর্ষের সময়ে নিরপেক্ষে ভূমিকা পালন করেছিল নাগারা। তাদের দাবি, নিজেদের গ্রামগুলোতে অশান্তি এড়াতেই থাকবে বিশেষ বাহিনী।
[আরও পড়ুন: মেলেনি হুইলচেয়ার, বিমানবন্দরেই লুটিয়ে পড়ে মৃত ৮০ বছরের বৃদ্ধ! কাঠগড়ায় এয়ার ইন্ডিয়া]
দিন কয়েক আগেই নাগাদের একাংশের মত ছিল, কুকি-মেতেই সংঘর্ষে আসলে বলি হচ্ছে নিরপেক্ষ নাগারাই। কারণ কুকি ও মেতেই দুপক্ষই তাদের আক্রমণ করছে। তাই দুই জাতির বিরোধিতা করাই উচিত নাগাদের। তার পরেই গ্রামে গ্রামে মোতায়েন হবে বিশেষ রক্ষীবাহিনী। তাই নাগাদের এই পদক্ষেপে সিঁদুরে মেঘ দেখছে বিশ্লেষক মহল।
তাঁদের অনুমান, এই ‘নিরস্ত্র’ রক্ষী বাহিনী মোটেও অস্ত্র ছাড়া মোতায়েন থাকবে না। একাধিক জঙ্গি সংগঠন এই বাহিনীকে অস্ত্র যোগাবে। ফলে কুকি-মেতেই সংঘর্ষে এবার যুক্ত হবে নাগারাও। ত্রিমুখী লড়াইয়ে আরও রক্তাক্ত হতে পারে মণিপুর। উল্লেখ্য, ‘স্বাধীন’ নাগালিমের দাবিতে বহুদিন ধরেই সশস্ত্র লড়াই করছে নাগা জঙ্গি সংগঠনগুলো। মণিপুরের একাংশ সেই নাগালিমেরই অন্তর্ভুক্ত বলে দাবি করে এনএসসিএন (আইএম) ও খাপলাংপন্থী নাগা বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো। কুকি-মেতেইদের অশান্তিতে নিরপেক্ষ থাকলেও এবার তাদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠতে পারে নাগারা, আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। সেটা হলে মণিপুরের গণ্ডি পেরিয়ে অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়বে উত্তর-পূর্বের অন্য রাজ্যগুলোতেও।