নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: রেনকোজি মন্দিরে সংরক্ষিত 'দেহাবশেষ' নেতাজিরই (Netaji’s Remains)। মেনে নিলেন নেতাজি পরিবারের সদস্য চন্দ্র বসু। যার অর্থ একসময়ের বিজেপি নেতা মেনে নিলেন যে ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট বিমান দুর্ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছিল নেতাজির। এবার চন্দ্র বসুর দাবি, নেতাজির চিতাভস্ম দেশে ফিরিয়ে দেশনায়ককে যথাযথ সম্মান দেওয়া হোক। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে চিঠি লিখে এ বিষয়ে উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করেছেন নেতাজি পরিবারের সদস্য।
রাষ্ট্রপতিকে লেখা চিঠিতে চন্দ্র বসু বলছেন, 'সদ্যই আমরা আজাদ হিন্দ সরকারের ৮০ বছর পূর্তি উদযাপন করেছি। আমি যতদূর জানি, দিল্লিতে আইএনএর নামে একটি স্মৃতিসৌধও তৈরি হবে। নেতাজির পরিবারের সদস্য হিসাবে আমি মনে করি, নেতাজি এবং আজাদ হিন্দ ফৌজের স্মৃতি সংরক্ষণে আরও গুরুত্ব দেওয়া উচিত যাতে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ওই লড়াই থেকে অনুপ্রেরণা পায়।' চন্দ্র বসু চিঠিতে লিখছেন, 'আপনি জানেন, নেতাজির দেহাবশেষ (Netaji’s Remains) জাপানের রেনকোজি মন্দিরে সংরক্ষিত আছে। এর আগে আইএনএর সদস্যরা, নেতাজির কন্যা অনিতা পাফ এবং আমরা নেতাজি পরিবারের সদস্যরা ওই চিতাভস্ম দেশে ফেরানোর জন্য বহুবার ভারত সরকারের কাছে আবেদন করেছি। দেশনায়কের চিতাভস্ম এবার তাঁর মাতৃভূমিতে ফেরানো হোক। এ বিষয়ে আপনি ইতিবাচক পদক্ষেপ করুন।"
রেনকোজি মন্দিরে যে দেহাবশেষ সংরক্ষিত আছে, সেটা নেতাজির কিনা তা নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট জাপানের তাইহোকু এয়ারবেসে বিমান দুর্ঘটনায় নেতাজির মৃত্যুর তত্ত্ব মানতে নারাজ অনেকেই। নেতাজি পরিবারেরই একটা অংশের দাবি, তাইওয়ান রিপোর্ট সেই ১৯৫৬ সালেই জানিয়ে দেয় তাইহোকুতে ১৯৪৫ সালের ১৮ আগস্ট কোনও বিমান দুর্ঘটনাই হয়নি। নেতাজির মৃত্যুর সাক্ষী হিসাবে সে সময় ভারত সরকার যাদের নাম জানিয়েছিল, তাঁরা নেতাজির মৃত্যু এমনকী, বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে কোনও প্রমাণই শেষ পর্যন্ত দিতে পারেনি।
যদিও নেতাজি কন্যা তথা অর্থনীতিবিদ অনিতা বসু পাফ দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছেন, জাপানের রেনকোজি মন্দিরে রাখা ভস্ম নেতাজিরই। সেটা দেশে ফেরানো হোক। অনিতার দাবি, নেতাজির চিতাভস্ম থেকে ডিএনএ পরীক্ষা করা যেতে পারে। তাতে যাঁরা মনে করেন, জাপানের রেনকোজি মন্দিরে রাখা ভস্ম আসলে নেতাজির নয়, তাদের ভুল ভাঙা যাবে। অনিতার সুরেই এবার সুর মেলালেন চন্দ্র বোস।
