ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: স্বাস্থ্যক্ষেত্রে গৈরিকীকরণ অব্যাহত! আচমকাই পালটে গেল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনের (National Medical Commission) প্রতীক। অশোক স্তম্ভকে সরিয়ে সেখানে বসানো হয়েছে ধন্বন্তরীর মূর্তি। এই পদক্ষেপ প্রকাশ্যে আসার পরেই তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়েছে দেশজুড়ে। ইতিমধ্যেই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশনকে চিঠি দিয়ে এই কাজের তীব্র নিন্দা করেছেন তৃণমূলের (TMC) রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেন। তাঁর মতে, নতুন এই লোগো অবিলম্বে পরিবর্তন করতে হবে। দেশের নানা প্রান্তের চিকিৎসক মহলও লোগো বদলের দাবিতে সরব হয়েছে।
বৃহস্পতিবার হঠাৎই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের (NMC) ওয়েবসাইটে নতুন লোগো দেখা যায়। আগে লোগোতে অশোক স্তম্ভের ছবি ছিল। কিন্তু নতুন প্রতীকের মাঝখানে রয়েছে ধন্বন্তরীর মূর্তি। হিন্দু ধর্ম অনুযায়ী, বিষ্ণুর অবতার ধন্বন্তরী দেবতাদের চিকিৎসক। মূর্তিকে ঘিরে রয়েছে তিনটি মানুষ। জাতীয় পতাকার রঙ দেওয়া হয়েছে এই তিনটি মানুষের গায়ে। সঙ্গে লেখা রয়েছে, ‘ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন-ভারত’। উল্লেখ্য, দেশের নাম পালটে ‘ভারত’ করা হবে বলে বেশ কয়েকদিন ধরেই জল্পনা চলছে।
[আরও পড়ুন: খলিস্তানি নেতাকে খুনের পরিকল্পনায় শামিল ভারতীয় কূটনীতিক! মার্কিন অভিযোগে ক্ষুব্ধ দিল্লি]
নতুন লোগো প্রকাশ্যে আসার পরই ক্ষুব্ধ দেশের চিকিৎসক মহল। IMA-র রাজ্য সভাপতি শান্তনু সেন চিঠিতে লেখেন, “আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের পাঠ্যক্রমে যোগা, সূর্যপ্রণাম, চরক শপথ যেদিন যুক্ত হয়েছিল, সেদিনই আমরা বলেছিলাম ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন গৈরিকিকরণের পথে এগোচ্ছে। দেশব্যাপী চিকিৎসকদের প্রবল প্রতিবাদে সেই প্রচেষ্টা একটু থমকে থাকলেও আবার শুরু হয়েছে। চিকিৎসকরা যে শপথ নিয়ে তাঁর পেশায় প্রবেশ করেন সেখানে ধর্ম, জাত, বর্ণ, ধনী, দরিদ্রের কোনো প্রভেদ, বিভেদ নেই। চিকিৎসকের কাছে সবাই রোগী এবং সবার কাছেই একজন চিকিৎসক,একই রকম ভাবে দায়বদ্ধ। দেশের চিকিৎসা ক্ষেত্রের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থার লোগোতে হিন্দু দেবী, দেশের নামের পরিবর্তন, পূর্ণ গৈরিকিকরণের প্রচেষ্টা হল বিজ্ঞান ও মানবতার চূড়ান্ত পরিপন্থী। আমরা আবারও এই প্রচেষ্টার তীব্র প্রতিবাদ করছি। এই লোগো অবিলম্বে পরিবর্তনের দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমরা ধিক্কার জানাচ্ছি কেন্দ্রীয় সরকারের শিক্ষা স্বাস্থ্য সহ সমস্ত ক্ষেত্রের গৈরিকিকরণের এই প্রচেষ্টাকে।”