নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: সোমবার শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়ে সরাসরি ভারতকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ। কিন্তু এখনই এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি নয় নয়াদিল্লি। এমনই খবর মিলেছে বিদেশমন্ত্রকের তরফে। অর্থাৎ হাসিনাকে নিয়ে আপাতত 'ধীরে চলো' নীতিতেই ভরসা রাখছে ভারত। মনে করা হচ্ছে, হিন্দু নির্যাতন, মহম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক সমস্ত দিক খতিয়ে দেখেই তবে এনিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে দিল্লি।
রবিবার, হাসিনাকে দ্রুত গ্রেপ্তারির জন্য বাংলাদেশ পুলিশকে ইন্টারপোলের সাহায্য নিতে নির্দেশ দেয় আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ আদালত। বলা হয়, ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত হাসিনার বিরুদ্ধে রেড কর্নার নোটিস জারি করতে হবে। আর সেই মর্মে ইন্টারপোলকে আবেদন জানাক বাংলাদেশ পুলিশ। সরকারি আইনজীবী জানান, যুদ্ধাপরাধ আদালতের নির্দেশ মেনে ইতিমধ্যে ইন্টারপোলকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
তারপরই আজ সকালে ইউনুস সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী সংবাদমাধ্যমে জানান, “ভারতের সঙ্গে আমাদের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। আগামী দিনে যা হবে এই চুক্তি মেনেই হবে। শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের বিষয়ে বিদেশ মন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠিয়ে দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।” এরপরই দুপুরের দিকে বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন জানিয়ে দেন, বিচারের জন্য শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে দিল্লিকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহলের অপেক্ষা ছিল, ভারত এই চিঠির কী উত্তর দেয়। এদিন সন্ধ্যায় বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছে, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়ে বাংলাদেশ চিঠি দিয়েছে। তবে এনিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য নয়।
এখানেই প্রশ্ন উঠছে, হাসিনাকে নিয়ে ভারতের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে? ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার রোষে পদত্যাগ করে ভারতে চলে আসেন হাসিনা। কিন্তু বিভিন্ন সূত্রের খবর মোতাবেক তিনি কূটনৈতিক পাসপোর্ট নিয়ে আসেননি। ফলে এই মুহূর্তে ভারতে হাসিনার 'স্টেটাস' কী তা নিয়ে যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে। দিল্লি মুজিবকন্যাকে কূটনৈতিক আশ্রয় দিয়েছে কি না তা নিয়ে একাধিকবার সংসদে প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। মনে করা হচ্ছে, বাংলাদেশের এই চিঠির পর হাসিনাকে ব্রিটেন বা কুয়েতের মতো কোনও দেশে পাঠিয়ে দিতে পারে সাউথ ব্লক। সেক্ষেত্রে ঢাকাকে সেই দেশের কাছে আবেদন জানাতে হবে। অন্যদিকে, আবার আড়ালে ইউনুস সরকারের সঙ্গেও আলোচনার পথে হাঁটতে পারে দিল্লি। ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বজায় রেখে হাসিনাকে নিয়ে আগামী দিনে ভারত কী করবে সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।