সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঋণের দায়ে জর্জরিত বাংলাদেশ। আদানি গোষ্ঠীর পর এবার বকেয়া ঋণ শোধের জন্য ইউনুস সরকারের উপর চাপ বাড়াল ত্রিপুরাও। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অবিলম্বে তারা যেন ১৩৫ কোটি টাকার বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে। বলার অপেক্ষা রাখে না, বাংলাদেশের ভারত বিরোধী নীতির মাঝেই এবার ঋণ পরিশোধের চাপ ক্রমশ বাড়ছে ইউনুস সরকারের উপর।
ন্যাশনাল থার্মাল পাওয়ার কর্পোরেশনের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্যিক চুক্তি হয়েছিল ত্রিপুরা সরকারের। এই চুক্তির মাধ্যমে ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে পাঠানো হত বিদ্যুৎ। এ প্রসঙ্গে ত্রিপুরার বিদ্যুৎমন্ত্রী রতনলাল নাথ জানান, "এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিল বাবদ বাংলাদেশের কাছ থেকে ১৩৫ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে আমাদের। ধীরে ধীরে সেই টাকা শোধও দিচ্ছে তারা। আমরা ইউনিট পিছু ৬.৬৫ টাকা কমে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিচ্ছি।" ত্রিপুরা স্টেট ইলেকট্রিসিটি কর্পোরেশন লিমিটেড (টিএসইসিএল) বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে বাংলাদেশ পাওয়ার ডেভলপমেন্ট বোর্ডকে (বিপিডিবি)। কিন্তু বকেয়া টাকা ১০০ কোটি ছাড়িয়ে যেতেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করেছিল টিএসইসিএল। চলতি বছরের মে মাসে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে গত এক বছর ধরে সময়মতো টাকা শোধ দেয়নি বাংলাদেশ। ফলে বেড়েছে বকেয়া। এর মাঝে বাংলাদেশে চলতে থাকা ভারতবিরোধী কার্যকলাপ ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ঘটনার জেরে ইউনুস সরকারকে দ্রুত এই বকেয়া পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ত্রিপুরার তরফে।
এদিকে গতকালই ত্রিপুরা লাগোয়া বাংলাদেশ সীমান্তে হামলার মুখে পড়ে কলকাতাগামী একটি বাস। বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ওই বাসে থাকা যাত্রীদের হুমকি দিতে দেখা যায় উত্তেজিত জনতাকে। প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ভারত বিরোধী স্লোগানও তোলা হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনার প্রতিবাদে সোশাল মিডিয়ায় বাংলাদেশের সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন ত্রিপুরার পরিবহণ মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। সেই ঘটনার পর এবার ঋণ শোধের জন্য বাংলাদেশের উপর চাপ বাড়াল ত্রিপুরা।
উল্লেখ্য, শুধু ত্রিপুরা সরকার নয়, বিদ্যুতের বিল বাবদ ভারতের আদানি গোষ্ঠীর কাছে ৮০ কোটি ডলার ঋণ রয়েছে বাংলাদেশের। বছরের পর বছর ধরে সেই টাকা শোধ না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। এই ঘটনায় বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়। যার জেরে চুক্তির হিসেব খতিয়ে দেখতে অনুষ্ঠান কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ হাই কোর্ট। যদিও সেই ঘটনার দায় হাসিনা সরকারের উপর চাপিয়েছে ইউনুস সরকার। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই এবার বাংলাদেশের উপর চাপ বাড়াল ত্রিপুরা।