সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা পরবর্তীকালে এটাই তাঁর প্রথম বিদেশ সফর। তাও আবার বন্ধু দেশ বাংলাদেশে। স্বভাবতই খুশি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। তাঁর সেই উচ্ছ্বাসের কথা গোপনও করলেন না প্রধানমন্ত্রী। শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ বাংলাদেশের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন মোদি। তার আগেই তিনি জানিয়ে দিয়েছেন,”আমি অত্যন্ত খুশি যে করোনা পরবর্তীকালে আমার প্রথম বিদেশ সফর সেই প্রতিবেশী দেশে যাঁদের সঙ্গে আমাদের গভীর সাংস্কৃতিক এবং ভাষাগত সম্পর্ক রয়েছে।”
আজ সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ পৌঁছানোর কথা। তাঁকে বরণ করতে প্রস্তুত রাজধানী ঢাকা। বাংলাদেশের রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও কিছু স্থাপনা সেজেছে বর্ণিল সাজে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বসানো হয়েছে তোরণ। সড়কের খুঁটি, ভবন ও দেওয়ালে মোদির ছবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গিয়েছে। সড়কের সৌন্দর্যবর্ধক ভাস্কর্যগুলোতেও ফুলের সঙ্গে শোভা পাচ্ছে মোদির ছবি। বড় বড় করে বিভিন্ন জায়গায় লেখা হয়েছে, ‘স্বাগতম ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি’।
[আরও পড়ুন: X, Y, Z থেকে Z+, কোন স্তরে কেমন নিরাপত্তা পান ভিভিআইপিরা?]
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের (Sheikh Mujibur Rahman) জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে ভারত-সহ বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকার-প্রধানদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ইতিমধ্যে চারটি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানরা বাংলাদেশে সফর করেছেন। করোনার কারণে অনেক দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত না হয়ে পাঠিয়েছেন ভিডিও বার্তা। গত ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ অবধি ১০ দিনের অনুষ্ঠানে এর আগে বিদেশি নেতারা অংশ নিয়েছেন। শেষ দিন অর্থাৎ আজ ২৬ মার্চ অংশ নেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
প্রসংত আজই ভারতের প্রধানমন্ত্রী জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহিদদের শ্রদ্ধা জানাবেন। ধানমন্ডি-৩২-এ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতেও শ্রদ্ধা জানাবেন এবং বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন করবেন। বিকেলে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। ২৭ মার্চ শনিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি ও কাশিয়ানি উপজেলার ওড়াকান্দি মতুয়া সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান শ্রীধাম ওড়াকান্দি ঠাকুরবাড়ি পরিদর্শন করবেন। ইতিমধ্যে সেখানেও তাঁকে স্বাগত জানাতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শ্রীধাম ওড়াকান্দিতে উলু ও শঙ্খধ্বনি দিয়ে এবং ডঙ্কা ও কাঁসর বাজিয়ে মতুয়া ধর্মাবলম্বীরা নরেন্দ্র মোদিকে বরণ করবেন বলে জানা গিয়েছে। সে দিন সাতক্ষীরায় হিন্দু মন্দিরও পরিদর্শন করবেন মোদি। বাংলায় ভোটের আবহে মোদির এই মতুয়া তীর্থস্থানে ভ্রমণ বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।
[আরও পড়ুন: মাস্ক না পরায় একমাসে ২ লক্ষ মানুষের জরিমানা, কড়া নজরদারি কলকাতা মেট্রোতেও]
মোদির এ সফরে বাংলাদেশের সঙ্গে অনেকগুলো চুক্তি সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে বিনিয়োগ, বাণিজ্য এবং পারস্পরিক সহযোগিতা অন্যতম। এছাড়া তিস্তা চুক্তি নিয়ে ভারত দ্রুত একটি সিদ্ধান্তে আসবে বলেও জানা গিয়েছে। এমনটাই আভাস দিয়েছেন ভারতের বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে সফর উপলক্ষে দিল্লিতে সংবাদ সম্মেলনে শ্রিংলা বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এ সফরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সফরে ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং দুই দেশের নাগরিকদের যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।