সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: সুরাটের দায়রা আদালতেও স্বস্তি মেলেনি। সাংসদ পদ ফেরত পাওয়া তো দূরের কথা, ‘মোদি’ মন্তব্যের জন্য রাহুল গান্ধীর সামনে এখন জেলযাত্রার ভ্রুকুটি। এই পরিস্থিতিতে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই দিল্লির সরকারি বাংলো খালি করে দিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। বাংলো ছাড়ার পর কংগ্রেস নেতা বলছেন, সত্য বলার জন্য যে কোনও মূল্য দিতে আমি প্রস্তুত। এই বাড়ি আমাকে এই দেশের মানুষ দিয়েছিল। ওরা কেড়ে নিয়েছে। এখন ক’দিন ১০ জনপথে থাকব, তারপর কোনও না কোনও ব্যবস্থা হয়ে যাবে।
২০০৪ থেকে লোকসভার সাংসদ রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi)। সেই সূত্রেই ২০০৫ সাল থেকে ১২ তুঘলক রোডে তাঁর জন্য সরকারি বাংলো বরাদ্দ করা হয়েছিল। তবে মানহানির মামলায় সাজা পেয়ে সাংসদ পদ হারানোয় সেই বাংলো থেকেই বেরিয়ে যেতে হল সোনিয়াপুত্রকে। লোকসভার হাউজিং প্যানেলের তরফে রাহুলকে বাংলো ছাড়া নিয়ে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। যাতে বলা হয়েছিল ২৩ এপ্রিলের মধ্যে তুঘলক রোডের ওই বাংলো তাঁকে ছাড়তে হবে।
[আরও পড়ুন: দলীয় নেতার বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগ! কংগ্রেস থেকে বহিষ্কৃত অভিযোগকারী মহিলা নেত্রীই]
গত ২৩ মার্চ বিতর্কিত মোদি মন্তব্যের জন্য অপরাধ মূলক মানহানি-মামলায় রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করে দু’বছরের কারাদন্ড দেয় সুরাতের আদালত (Surat Court)। যার জেরে সাংসদ পদ যায় কংগ্রেস নেতার। সুরাটের নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে দায়রা আদালতে আবেদন করেছিলেন কংগ্রেস নেতা। কিন্তু তাতেও সুরাহা মেলেনি। শাস্তি কমেনি, সাংসদ পদও ফেরেনি। ফলে রাহুলকে বাংলো খালি করতেই হত। ওয়ানড়ের প্রাক্তন সাংসদ অবশ্য এই পরিস্থিতির জন্য আগে থেকেই প্রস্তুত ছিলেন। তিনি জানতেন সুরাটের দায়রা আদালতে স্বস্তি পেলেও তাঁর সাংসদ পদ এখনই ফেরানো হবে না। সেকারণেই আগেভাগে বাড়ি ফাঁকা করার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর জিনিসপত্রও কয়েক দিন আগেই ট্রাকে করে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যা জিনিসপত্র বাকি ছিল, সেগুলি এদিন বের করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এদিন দুপুরে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও গিয়েছিলেন রাহুলের বাড়িতে।
[আরও পড়ুন: ইফতারের ফল নিয়ে যাওয়ার সময়ই জঙ্গি হামলা সেনার ট্রাকে, ইদ পালন করবে না কাশ্মীরের গ্রাম]
বাংলো ছাড়ার নোটিস পাওয়ার পর থেকে রাহুলকে থাকার প্রস্তাব দিয়েছেন কংগ্রেসের একাধিক নেতা। মল্লিকার্জুন খাড়গেও জানিয়েছিলেন প্রয়োজনে রাহুল গান্ধীর জন্য তিনি বাড়ি খালি করে দেবেন। তবে আপাতত ১০ জনপথে মা সোনিয়া গান্ধীর বাড়িতেই উঠছেন রাহুল। এদিনও দিল্লির কংগ্রেস নেতারা সোশ্যাল মিডিয়ায় রাহুলের সমর্থনে লেখালেখি করে চলেছেন। কংগ্রেস নেতারা বলছেন, ‘ওরা আপনাকে ঘরছাড়া করতে পারে কিন্তু আমাদের হৃদয় এবং বাড়িতে সবসময় আপনার জন্য জায়গা থাকবে।”